৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:০৯:৩১ পূর্বাহ্ন


প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ডা. জাফরুল্লাহকে স্মরণ
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সাহসী কণ্ঠস্বর : মান্না
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৪-২০২৪
জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সাহসী কণ্ঠস্বর : মান্না ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী


‘ডা. জাফরুল্লাহ জীবনের শেষদিন পর্যন্ত গণতন্ত্র ভোটাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সম্মুখভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ছিলেন একই সঙ্গে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহসী কণ্ঠস্বর। চিকিৎসক, দানবীর, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সমাজসেবক, রাজনীতিক, স্পষ্টভাষী ও সাহসী সন্তানের মৃত্যুতে জাতি একজন দেশপ্রেমিককে হারিয়েছে। গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণ, সবার জন্য চিকিৎসার অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী জীবনের শেষদিন পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন। তিনি সরকারের জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে সেচ্চার ছিলেন।’- কথাগুলো বলেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। 

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মরণ সভায় নেতারা বক্তব্য রাখেন। সেখানে প্রধান অতিথির ভাষণে মাহমুদুর রহমান মান্না এ কথাগুলো বলেন। 

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সেগুনবাগিচায় শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত স্মরণ সভায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে গণতান্ত্রিক সমাজ নির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক। 

স্বরণ সভায় সাইফুল হক বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনের রয়াল কলেজ ও সার্জনসে এফআরসি ডিগ্রিতে পড়াকালীন চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে দেশে ফিরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। নিজে একজন চিকিৎসক হওয়ায় তিনি সহযোদ্ধাদের সঙ্গে নিয়ে রণাঙ্গনে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, গণবিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, গণস্বাস্থ্য বেসিক কেমিক্যাল লিমিটেডসহ বহু শিল্প প্রতিষ্ঠা করে গণমানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।’ 

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু তার বক্তব্যে বলেন, অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ফারাক্কা বাঁধের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সিলেটে সুনামগঞ্জ দিরাই উপজেলা, মাগুরা, নোয়াখালী কুমিল্লা চাঁদপুর, চট্টগ্রাম আনোয়ারায় যেখানে হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ হয়েছে সেখানে গিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন ও সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন। 

এ সময় সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রশীদ বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আমরণ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। ওষুধ নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কৃতিত্ব ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর। আজকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে ওষুধ রপ্তানি শুরু হয় এই ওষুধ নীতির কারণে। 

উল্লেখ্য, ডা জাফরুল্লাহ চৌধুরী ২০২৩ সনের ১১ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। 

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আর্তমানবতার কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন। গণমানুষের মাঝে এখনো অনেকের চেয়ে তীব্র ও উজ্জ্বলভাবে বেঁচে আছেন তার কাজের মধ্য দিয়ে। আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিতে চাই। 

লেবার পার্টির মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বিশিষ্ট সাংবাদিক নিউনেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক ও গ্রীন ভয়েচ এডিটর মোস্তফা কামাল মজুমদার, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, গণঅধিকারের সদস্য সচিব ফারুক হোসাইন, মানবাধিকার সংরক্ষন সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জোহরা খাতুন জুইঁ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মো. লিটন, লেবার পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান হিন্দুরত্ম রামকৃষ্ণ সাহা, যুগ্ম-মহাসচিব হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, মহিলা সম্পাদিকা নাসিমা নাজনিন সরকার, ছাত্রমিশন কেন্দ্রীয় সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন, মহানগর লেবার পার্টির নেতা কেএম আবু তাহের প্রমুখ।

শেয়ার করুন