১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০৩:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন


ছাত্রছাত্রীদের ওপর গুলি ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় লাগাতার বিক্ষোভ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৭-২০২৪
ছাত্রছাত্রীদের ওপর গুলি ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় লাগাতার বিক্ষোভ টাইমস স্কয়ারে প্রতিবাদ


বাংলাদেশে কোটা সংস্কার বিরোধী চলমান সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ এবং অহিংস আন্দোলনে ছাত্রলীগ, পুলিশ, বিজিবি এবং সেনা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি, হামলা, মামলা এবং গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে নিউইয়র্কসহ-সারা উত্তর আমেরিকায় প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার, জাতিসংঘের সমানে, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের সামনে, ওয়াশিংটন, জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রুকলিন, ব্রঙ্কসসহ আমেরিকার বিভিন্ন স্টেটে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। এই বিক্ষোভ সমাবেশে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন বাহিনীর গুলি করে হত্যা, আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা, পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদ জানানো হয়। এসব বিক্ষোভ সমাবেশের অধিকাংশই ছিল নতুন প্রজন্মের আয়োজনে। তারা তাদের সহপাঠীদের হত্যা, হামলা এবং মামলার প্রতিবাদ জানায়। তাদের চোখে মুখে ছিল ঘৃণার বহিঃপ্রকাশ। ছিল নির্বিচারে গুলি করে হত্যায় ক্ষোভ। যে ক্ষোভ শেষ পর্যন্ত সরকার পতন আন্দোলনে রূপ নেয়। তাদের এখন দাবি হত্যাকারীদের শাস্তি, দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর পদত্যাগ। সেই সঙ্গে সরকার প্রধানেরও পদত্যাগ। তাদের সুস্পষ্ট দাবি যতদিন সরকার পদত্যাগ না করবে প্রবাসীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবেন। ইতিমধ্যেই তারা বৈধপথে রেমিট্যান্স না পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের সোজাসাপটা উত্তর আমাদের অর্থে আমাদের স্বজনদের আর হত্যা করার সুযোগ দেওয়া হবে না।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি আন্দোলনকারীদের পক্ষে এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ সংহিসতা বন্ধে বিক্ষোভ সমাবেশ করে যাচ্ছে। এসব সমাবেশে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার সিটি প্লাজায় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, টাইমস স্কয়ারের সময় টিভির সাংবাদিকের ওপর হামলা হয়েছে, ব্রঙ্কসে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার ফরাসত আলীর ওপর হামলা হয়েছে। তবে পুলিশি তৎপরতার কারণে বড় ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।

টাইমস স্কয়ারে ব্যাপক ছাত্র বিক্ষোভ

বাংলাদেশে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে নিউইয়র্ক সিটির টাইমস স্কয়ারে গত ২১ জুলাই সন্ধ্যায় আমেরিকান বাংলাদেশি এমপাওয়ারমেন্ট ইনিশিয়েটিভ আয়োজিত একটি বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবেশে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত হয় এবং সরকারের কঠোর সমালোচনা করেছিল। সেই সঙ্গে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম ছিল তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার। সন্ধ্যায় সাতটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই বিক্ষোভ সমাবেশ চলে।

বিক্ষোভকারীরা বড় বড় প্ল্যাকার্ড বহন করে এবং সেসব প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল বাংলাদেশে গণহত্যা চলছে, শেখ হাসিনার পদত্যাগ চাই, ছাত্রছাত্রী হত্যা বন্ধ করুন, করতে হবে। আমার ভাই মরলো কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই, আমার বোন মরলো কেন শেখ হাসিনা জবাব চাই।

সাউথ এশিয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভের পরিচালক ইমরান আনসারী একটি আবেগঘন বক্তৃতা দিয়ে জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। ‘প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমরা আজ এখানে এসেছি বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে। হাসিনা শাসনামলে ৩০০ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক ক্ষতির প্রতিক্রিয়ায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আরো হাজার হাজার নিখোঁজ এবং অনেকে গুরুতর আহত হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ, র‌্যাব এবং বিজিবি কর্তৃক পরিচালিত পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং গণহত্যার সুস্পষ্ট কর্মকাণ্ড। শেখ হাসিনা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন।

আনসারী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেন এবং জোর দিয়ে বলেন যে তিনি ক্ষমতায় থাকার তার নৈতিক এবং আইনি বৈধতা হারিয়েছেন। তিনি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য এবং জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ ও বিজিবিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বায়ক জানান। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির আলোকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এসব মিশন থেকে নিষিদ্ধ করার আহ্বায়কও জানান তিনি।

বিক্ষোভে অন্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন আবদুল্লাহ তামজিদ, রাসেল উদ্দিন, নুর রামিন, হোসেন শুভ, যারা আয়োজক কমিটির পক্ষে বক্তব্য রাখেন।

তারা বলেন, স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভয়াবহ। গত চার দিনে ১৭৪ জন নিহত হয়েছে, হাজার হাজার গুরুতর আহত হয়েছে এবং কারফিউ জারি করা হয়েছে। উপরন্তু এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে কোনো ইন্টারনেট সংযোগ নেই, যা যোগাযোগ বন্ধ এবং নাগরিকদের দুর্দশাকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

টাইমস স্কয়ারের বিক্ষোভ ছিল বাংলাদেশের ছাত্র ও জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থনের একটি শক্তিশালী প্রদর্শনী, যা চলমান সংকট ও মানবাধিকার লঙ্ঘন মোকাবিলায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বায়ক জানিয়েছিল।

বাংলাদেশি প্রবাসী নাগরিক সমাজ ইউএসএ

গত ২৫ জুলাই বাংলাদেশি প্রবাসী নাগরিক সমাজ ইউএসএর পক্ষ থেকে জাতিসংঙ্গের সামনে বাংলাদেশের নারকীয় গণহত্যার প্রতিবাদে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহিম হাওলাদার। এ সভায় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম-আহ্বায়ক নুর আমিন এবং উল্লিখিত সংগঠনের সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন শিফন।

এই প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা করেন প্রতিবাদ সভার সংগঠক আলী ইমাম শিকদার, মঈন উদ্দিন নাসের, মিয়া আলীম, নাজমুল আলম পাটোয়ারি, মোস্তফা করিম ফরিদ, জনাব নূর আমীন, মোহাম্মদ আলী, আমিন মেহেদী বাবু, ইফতেখার জামান রতন, জামাল উদ্দিন, নজরুল ইসলামসহ প্রমুখ্য নেতৃবৃন্দ।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্র চলছে ব্যাপক গণহত্যা। বাংলাদেশে স্বজনদের কান্নায় দেশের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। তারা বর্তমান এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি করেন। একজন বক্তা বলেন, গত ২৪ জুলাই বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের কোনো একটি বাসার ছাদে একটি মাসুম ছেলেকে পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে। বক্তারা বলেন, ঢাকার বাড্ডায় একজন মহিলা এই জুলুম, নিপীড়ন, অত্যাচার ও গণহত্যার বিরুদ্ধে পুলিশের সঙ্গে প্রতিবাদ করলে পুলিশ তার মেয়ে এবং মেয়ের জামাইকে নিয়ে যায়। তাদের কোনো সংবাদ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় হেলিকপ্টার থেকে সংগ্রামী ছাত্রছাত্রীদের মিছিলের ওপর গুলি করে নির্বিচারে নিরস্ত্র ছাত্রছাত্রীদের হত্যা করে শত শত লাশ হেলিকপ্টারে করে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা এখনো পর্যন্ত জানা যায়নি। তারা আরো বলেন, ঢাকার হাতিরঝিলে প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের লাশ পাওয়া গেছে। বক্তারা জাতিসংঘকে লক্ষ্য করে বলেন, আপনাদের দায়িত্ব হলো পৃথিবীর দেশে দেশে সত্যিকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু আমরা দেখলাম, আপনাদেও লোগো সম্পৃক্ত গাড়ি এবং হেলিকপ্টার ব্যবহার করে বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন এবং মর্মাহত। আমরা এ ঘটনার পরিপূর্ণ তদন্ত এবং বিচারের দাবি জানাচ্ছি। তারা আরো বলেন, এ হত্যাকাণ্ড সুপরিকল্পিত। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে পার্শ্ববতী রাষ্ট্র ভারত জড়িত। বক্তারা এ গণহত্যায় জড়িত প্রধানমন্ত্রী, ডিবির হারুন এবং পুলিশের বিপ্লব সরকারসহ সব জড়িতের বিচার দাবি করেন।

ছাত্র হত্যার দায়ে সরকারের পদত্যাগ করতে হবে : শহীদ উদ্দিন মাহমুদ 

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, ছাত্র হত্যার দায় সরকারের পদত্যাগ ত্যাগ করতে হবে। শান্তিপূর্ণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমন করার জন্য পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, ছাত্র আন্দোলনের তীর্থভূমিতে প্রতিদিন ছাত্র হত্যা করায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন আজ জাতীয় রাজনীতির প্রধান এজেন্ডায় পরিণত হয়ে পড়েছে। শক্তি প্রয়োগ এবং ছাত্র হত্যা করে জাগরণকে স্তব্ধ করা যাবে না। বিরাজমান বৈরী পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সরকারের পদত্যাগের কোনো বিকল্প নেই।

ছাত্র জাগরণে আন্দোলনে যারা শহীদ হচ্ছেন তাদের জাতীয় বীর ঘোষণা করে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম এবং বৈষম্যহীন জাতি বিনির্মাণের কারিগরদের ‘রাজাকার’ আখ্যা দেওয়া বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং প্রকাশ্যে জাতির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করতে হবে। তিনি নিরস্ত্র ছাত্রদের হত্যার দায় নির্ধারণে জাতিসংঘের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থসমূহের প্রতিনিধি সমন্বয়ে ‘তদন্ত কমিটি’ গঠন করার দাবি জানান।

গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জেএসডি আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।

জ্যাকসন হাইটসে ডাইভারসিটি প্লাজায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেএসডির আহ্বায়ক মোহাম্মদ এনামুল হায়দার।

যুগ্ম-আহ্বায়ক সামছুদ্দিন আহমেদ শামীমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সারোয়ার হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক এমএ মালেক, যুক্তরাষ্ট্র জেএসডির যুগ্ম-আহ্বায়ক এম জাকির হোসেন স্বপন, তছলিম উদ্দিন খান, মোহাম্মদ রফিকুল উল্লাহ, সদস্য গাজী আজম বাদল, মোহাম্মদ বাহার, ফরিদ উদ্দিন রতন, সামওয়ান বিন রব (রাব্বুল) প্রমুখ।

বাংলাদেশি-আমেরিকান সিটিজেন মুভমেন্ট ফোরাম

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ এবং ন্যায়বিচারের দাবিতে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশি-আমেরিকান সিটিজেন মুভমেন্ট ফোরাম নিউইয়র্ক। গত ২২ জুলাই সোমবার অনুষ্ঠিত সমাবেশ শেষে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

সমাবেশে আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের রূহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সমাবেশ থেকে বাংলাদেশ সরকারের ফ্যাসিবাদী নীতির তীব্র সমালোচনা করে সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

আহবাব চৌধুরী খোকনের সভাপতিত্বে এবং আনোয়ার জাহিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন গোলাম ফারুক শাহিন, ওলিউল্লাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, আমিনুল ইসলাম স্বপন, সাইদুর রহমান সাঈদ, মোহাম্মদ বদিউল আলম, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান হোসাইন, মো. শাহীন চৌধুরী, আলোমগীর হোসেন মৃধা, জাফর তালুকদার, মো. লিয়াকত আলী, জাহাঙ্গীর এম আলম, বাচ্চু মিয়া, আব্দুর রহিম, এ আর মাহবুব, সোয়েব আহমেদ, দিলরুবা আক্তার মায়া, মোমতাজ উদ্দিন, আক্তার হোসেন নান্নু, আরিফুর রহমান কাইজার, বেগ হোসাইন ইসলাম মিঠু, জিল্লুর রহমান খান, তপদী রায় বরুণ, আ. আহাদ হেলাল, শেখ মো. ইসাহক আলী, রুবেল হোসেন, মুরাদ হোসেন, মঈনুল হোসেন, আ. মালেক রুকন, রুহুল আমিন নাসির, নাসির উদ্দিন, রেজবুল ক্রিম, জামাল হোসেন, হাজি সাব্বির রহমান, আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, দেওয়ান কাউসার, হুমায়ুন কবির, এম এ কাইয়ুম, তাজুল ইসলাম (চেয়ারম্যান), বীর মুক্তিযোদ্ধা অহেদ আলী মন্ডল, মুক্তাদির হোসেন, আশরাফ হোসেন, এম এ কালাম, রাহিমুল ইসলাম প্রিন্স, বাইতুল্লাহ শাহীন প্রমুখ। এ কর্মসূচিতে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন।

সমাবেশ থেকে বক্তারা বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। তারা কোটা প্রথার তীব্র সমালোচনা করে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ এবং ন্যায় বিচারের দাবি জানান। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।

পরে গোলাম ফারুক শাহিনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি-আমেরিকান সিটিজেন মুভমেন্ট ফোরাম নিউইয়র্ক, ইউএসএর পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।

সেফ দ্য বাংলাদেশি স্টুডেন্ট শীর্ষক প্রতিবাদ সভা

জলি আহমেদ : কোটা সংস্কারের দাবির আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ উওপ্ত পরিস্থিতিতে নিজের পরিবার তথা স্টুডেন্ট ও তরুণ সমাজ নিয়ে চিন্তিত। যারা তাদের দাবি আদায়ে রাজপথে নেমে এসেছে। গত ২০ জুলাই নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় সেফ দ্য বাংলাদেশি স্টুডেন্ট শীর্ষক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেন নিউইয়র্কের সংগঠন ‘বাংলাদেশ অ্যাসেম্বলি অব ইউএসএ’।

এই প্রতিবাদ সভা ও র‍্যালিতে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. শামীম হাসান, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসলাম (কলিম), সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন সরকার, মহিলা সম্পাদক জাকিয়া সোলাইমান, দফতর সম্পাদক আতিকুল ইসলাম রফিক, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, মিয়া ফয়েজ আহমেদ (জুয়েল), যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক।

এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব জ্যামাইকা ফ্রেন্ড সোসাইটির সভাপতি ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, ইমদাদুল হক, জাহিদুর রহমান, বেলায়েত হোসেন, শফিকুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, ফারুক হোসেন পাটোয়ারী, মামুন সরকার, আল আমিন, জিসান, নূরুল ইসলাম, গোলাম দস্তগীর, ফখরুল ইসলাম মনজু প্রমুখ।

প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব ও উপস্থাপনা করেন সাজেদুল ইসলাম (সজল)। সংঘঠনের সভাপতি মো. শামীম হাসান সবার স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। শামীম হাসান বলেন, কোটা সংষ্কারের দাবিতে সারা দেশে কারফিউ জারি করা হয়, কোটা সংস্কার ইস্যুতে চলমান আন্দোলনে দেশজুড়ে সহিংসতার পর সারাদেশে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নির্বিচারে নীরিহ ছাত্রদের ওপর অত্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা।

সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইসলাম (কলিম) বলেন, দেশে মানুষের কিছু বলার বা করার স্বাধীনতা নেই, সে সরকারের পতন নিশ্চিত। আমরা প্রবাসীরা নিজের রক্ত পানি করা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অথনীতির চাকা সচল রাখি, শুধু প্রিয়জনের মুখে হাসি ফোটাতে। সেই প্রিয়জনের জীবন অনিরাপদ থাকলে আমরাও অস্থির, চিন্তিত থাকি।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা তুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

বিএসএ-ইউএসসির বিক্ষোভ

আহমেদ সাকলায়েন, সাউথ ক্যারোলিনা : প্রবাসের বিভিন্ন স্থানের মতো ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনার বাংলাদেশি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনও বাংলাদেশে ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারী ছাত্রদের ও সাধারণ মানুষের ওপর সরকার তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর জুলুম-নির্যাতন ও গণহত্যার প্রতিবাদে গত১৮ জুলাই বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে ছাত্ররা ছাড়াও কমিউনিটির আরো অনেকে হাতে আন্দোলনের পক্ষে লেখা নানা রকম স্লোগান সংবলিত পোস্টার নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন