৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৫৭:২৬ অপরাহ্ন


ভারতের লাগাতার ষড়যন্ত্র : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির বাংলাদেশ
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১২-২০২৪
ভারতের লাগাতার ষড়যন্ত্র : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির বাংলাদেশ বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা


যেভাবেই দেশ-বিদেশের কিছু মহল প্রচার করুক, যত প্ররোচনা করা হোক বাংলাদেশের মানুষ প্রকৃতিগতভাবেই অসাম্প্রদায়িক। বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সম্প্রদায় সম্পূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করে। যার নজির প্রতিবেশী ভারত বা পাকিস্তানে অনুপস্থিত। বিভিন্ন সময়ে কিছু অতি উৎসাহী মানুষ রাজনৈতিক কারণে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটালেও বৃহত্তর সচেতন গোষ্ঠী কখনো সেগুলো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় পরিণত হতে দেয়নি। পাহাড়ে এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অনেক সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান হচ্ছে। পাহাড়ি সম্প্রদায় দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের বিশেষ অংশ এখন। দেশের অগ্রগতিতে ওরাও ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর কথিত নির্যাতন নিয়ে কিছু আন্তর্জাতিক মিডিয়ার খবর সঠিক তথ্যভিত্তিক নয়।

সম্প্রতি ইসকনের বহিষ্কৃত নেতার গ্রেফতার-পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হত্যাকা- ছিল নিতান্তই অনভিপ্রেত। অসৎ উদ্দেশ্যে সংঘটিত এই হত্যাকাণ্ড সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণে এড়ানো যেত কি না, সেই বিতর্কে যাবো না। কিন্তু ঘটনার পরে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সচেতন মহলের সক্রিয়তার কারণে কোনো ধরনের দাঙ্গা হয়নি এটি বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক অবস্থান প্রমাণ করে। বাংলাদেশে যেভাবে নিরাপদে অমুসলিম সম্প্রদায়কে তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করতে দেখেছি, তার ছিটাফোঁটাও পার্শ্ববর্তী ভারতের সংখ্যালগুরা করতে পারে না।

তাই বলে বাংলাদেশিদের হাত গুটিয়ে রাখলে চলবে না। দেশের বর্তমান কঠিন সময়ে নানাভাবে প্রতিক্রিয়াশীল চক্র শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করার অপপ্রয়াস চালাবে। ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থ বিসর্জন নিয়ে সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, মিডিয়াগুলোকে দেশের বৃহৎ স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সরকারকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে শক্তিশালী করে বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। পূর্ববর্তী সময়ে অসৎ দুর্নীতিবাজ, শীর্ষস্থানীয় লুটেরা মানুষদের আইনের আওতায় আনলে কালোটাকার প্রভাব কমবে। সমাজে কমবেশি সবাই জানে কারা কীভাবে জনগণের সম্পদ লুটপাট করে দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সঠিক তদন্ত করে অন্তত তাদের মুখোশ খুলে দিলে জনগণ তাদের ঘৃণা করবে, সামাজিকভাবে বয়কট করবে। এদের পক্ষে অর্থ বিলিয়ে ক্রমাগত সংকট সৃষ্টি সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশের ঘটনা নিয়ে ভারতের মিডিয়া এবং কিছু রাজনৈতিক দলের মিথ্যা প্রচারের নিন্দাযোগ্য। যেভাবে ডাহা মিথ্যা তারা প্রচার করছে, এতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে ভারতীয় মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্রমশ হ্রাস পেয়েই চলেছে। ভারতীয়দের বাজে প্রচারণার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে দেশের কতিপয় হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরাও মাঠে নেমেছে। প্রতিনিয়ত বলে চলছেন তারা যে এসব অপপ্রচারের বিরুদ্ধে। 

তবে শুধু যে ভারতীয় মিডিয়াই যে এসব অপপ্রচার করছে তা নয়, সেই সঙ্গে কিছু বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের অযাচিত ভারত বিদ্বেষী মনোভাব পরিহারকরণ প্রয়োজন।

কারণ বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে এবং বাংলাদেশও দেশ হিসেবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উদাহরণ স্বরূপ এক আদর্শ দেশ।

শেয়ার করুন