এরিক অ্যাডামস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসের বিরুদ্ধে ফেডারেল ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি তাকে ক্ষমা করার বিষয়ে খোলা মন নিয়ে ভাবতে পারেন। ১৬ ডিসেম্বর সোমবার মার-আ-লাগোতে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডামস সম্পর্কে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি তার সাথে বেশ অন্যায়ভাবে আচরণ করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, সব তথ্য জানা না থাকলেও বিষয়টি নিয়ে আরো গভীরভাবে দেখতে হবে এবং তিনি ক্ষমার সম্ভাবনা বিবেচনা করবেন। ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি, এটা খুবই আকর্ষণীয় যে তিনি যখন অভিবাসীদের আগমন বিষয়ে বিরোধিতা করেছিলেন এবং বলেছিলেন যে এটি আর টেকসই নয়, তখনই এসব ঘটনা ঘটতে শুরু করল। তিনি ইঙ্গিত দেন অ্যাডামসের সেই অভিযোগের দিকে, যেখানে মেয়র দাবি করেছিলেন যে, বাইডেন প্রশাসনের অভিবাসন ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করার কারণেই তাকে টার্গেট করা হয়েছে। ট্রাম্প নিজেও বহুবার অভিযোগ করেছেন যে তার বিরুদ্ধে আনা মামলাগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে করা হয়েছে। ‘আমি অবশ্যই এটি বিবেচনা করবো।’
অ্যাডামস পাঁচটি অভিযোগে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে যে তিনি বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে অবৈধ প্রচার তহবিল ও ভ্রমণ সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন এবং তার বিনিময়ে রাজনৈতিক সুবিধা দিয়েছিলেন। গত মঙ্গলবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডামসকে জিজ্ঞাসা করা হয় যে তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে ক্ষমা নিয়ে কোনো আলোচনা করেছেন কিনা। উত্তরে অ্যাডামস বলেন, আমরা শুধু এই শহরকে উন্নত করার বিষয়ে কথা বলি, যে শহর আমি ভালোবাসি, যে শহর তিনি ভালোবাসেন এবং যে শহর নিউইয়র্কবাসী ভালোবাসে।
ট্রাম্পের মন্তব্য যে তিনি অ্যাডামসকে ক্ষমা করার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন, তাতে সমালোচকরা বলছেন যে, অ্যাডামস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিতের প্রতি নমনীয় অবস্থান নিয়েছেন, হয়তো নিজের রক্ষা পাওয়ার আশায় সেটা ক্ষমার মাধ্যমে হোক বা ট্রাম্পের অ্যাপয়েন্টমেন্টের মাধ্যমে দক্ষিণ নিউইয়র্কের ফেডারেল প্রসিকিউটরের দফতরে প্রভাব খাটিয়ে। কেউ কেউ এমনকি ধারণা করছেন যে অ্যাডামস, যিনি একসময় রেজিস্টার্ড রিপাবলিকান ছিলেন, তার ২০২৫ সালের পুনর্নির্বাচনে রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করতে পারেন। যদিও এটি অসম্ভাব্য, তবে তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব। অ্যাডামস গত সপ্তাহে ট্রাম্পের আসন্ন বর্ডার সিজার টম হোমানের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সপ্তাহান্তে এমএসএনবিসির একটি সাক্ষাৎকারে অ্যাডামস অস্বীকার করেন যে তিনি ট্রাম্পের কাছে ক্ষমার আবেদন করছেন। অ্যাডামস বলেন, আমি এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাচ্ছি না, আমি তার সঙ্গে কাজ করতে যাচ্ছি। ‘আমি এমন একটি পথে এগোবো, যাতে এই শহরের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ফিরিয়ে আনা যায়।’
অবশেষে ট্রাম্পের মন্তব্য যে তিনি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামসকে ক্ষমা করার বিষয়ে ভাববেন, সেটি রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও অ্যাডামস নিজেকে অপরাধী না হওয়ার দাবি করেছেন এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ককে শহরের উন্নতির স্বার্থে উল্লেখ করেছেন, তবুও ট্রাম্পের সমর্থন ও ক্ষমার সম্ভাবনা রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। কিছু সমালোচক মনে করছেন, অ্যাডামস হয়তো ট্রাম্পের প্রতি নমনীয় মনোভাব গ্রহণ করেছেন তার নিজের অবস্থান রক্ষার জন্য। যদিও অ্যাডামস তার পরবর্তী নির্বাচনে সম্ভবত দল পরিবর্তন করবেন কিনা, সেটা এখনো অনিশ্চিত, তবে তার প্রতিক্রিয়া ও আচরণ রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করবে।