বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া তার বিদায়ী ভাষণে দেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে প্রতিষ্ঠত হতে যাওয়া ‘বিপজ্জনক’ ধনিকতন্ত্রের (অলিগার্সি) বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
একক মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে ওভাল অফিস থেকে প্রদত্ত এক ভাষণে তিনি একটি অতি-ধনী ‘প্রযুক্তি শিল্প কমপ্লেক্স’ সম্পর্কে সতর্ক করে বলেন, এটি আমেরিকান জনগণের ওপর অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতা অর্জন করতে পারে। খবর এএফপি’র।
৮২ বছর বয়সী এই ডেমোক্র্যাট বলেন, ‘আজ, আমেরিকায় অতিরিক্ত সম্পদ, ক্ষমতা এবং প্রভাবের একটি ধনিকতন্ত্র আকার নিচ্ছে যা আক্ষরিক অর্থে আমাদের সমগ্র গণতন্ত্র, আমাদের মৌলিক অধিকার এবং স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’
বাইডেন তার বক্তৃতার শুরুতে তার চার বছরের ক্ষমতার উত্তরাধিকারের কথা তুলে ধরে বলেন, ’আমরা সবাই মিলে যা করেছি, তার সুফল ভোগ করতে সময় লাগবে। কিন্তু আমেরিকানদের জন্য বীজ রোপণ করা হয়েছে এবং সেগুলো বড় হবে এবং দশকের পর দশক ধরে বিকশিত হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি হতে যাওয়া আসন্ন বিপদের ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়ে তিনি স্পষ্টভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি এলন মাস্ক এবং অন্যান্য প্রযুক্তি টাইকুনদের সাথে বিলিয়নেয়ার ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
বাইডেন সতর্ক করেন যে, ‘স্বল্পসংখ্যক অতি-ধনী লোকের হাতে ক্ষমতার বিপজ্জনক কেন্দ্রীকরণ’ হচ্ছে, যদি তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণ না করা হয় তবে বিপজ্জনক পরিণতি বরণ করতে হবে।
মার্কিনদের মধ্যে ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও সতর্ক করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে বলেও জানিয়ে তিনি বলেন, মুক্ত সংবাদমাধ্যম ভেঙে পড়ছে, সম্পাদকরা অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়া তথ্য যাচাই করা ছেড়ে দিচ্ছে, ক্ষমতা এবং লাভের জন্য মিথ্যা বলায় সত্যকে চাপা দেওয়া হচ্ছে।
অতীতে সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্স সম্পর্কে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট ডয়াইট আইজেনহাওয়ারের হুঁশিয়ারির কথা স্মরণ করে বাইডেন যোগ করেন, আমি সমানভাবে প্রযুক্তি-শিল্প কমপ্লেক্সের সম্ভাব্য উত্থান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন, যেটা আমাদের দেশের জন্য প্রকৃত হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বাইডেন বলেন, মার্কিনরা ভুল তথ্য ও অপতথ্যের নিচে চাপা পড়েছে। এতে ক্ষমতার অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি হবে।
এখন বাইডেন এমন একজনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন, যাকে তিনি দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।