বাড়তি গ্রাহকের কারণে নিউইয়র্কে দেখা দিয়েছে ফোন নম্বরের সংকট। আর এই সংকট মোকাবিলায় টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ আরো একটি নতুন এলাকা কোড চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই কোড নম্বরটি হচ্ছে ৪৬৫। উল্লেখ্য, এর আগে নিউইয়র্কে চালু থাকা অন্য কোড নম্বরগুলো যেমন-৭১৮, ২১২, ৩৪৭, ৯১৭, ৯২৯ ও ৬৪৬ আগের মতোই চালু থাকবে। এ নতুন কোড নম্বরটি শুধু নতুন ফোন নম্বরের জন্য বরাদ্দ করা হবে। তবে বিদ্যমান ফোন নম্বরগুলোতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
স্টেট পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান রবি এম ক্রিশ্চিয়ান বলেন, নিউইয়র্ক সিটির মেট্রো অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কার্যকলাপের ফলে টেলিফোন নম্বরের চাহিদা বেড়েছে। নতুন এলাকা কোড এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ টেলিযোগাযোগ চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে। তিনি বলেন, নতুন এলাকা কোড ব্রঙ্কস, ব্রুকলিন, কুইন্স, স্টেটেন আইল্যান্ড এবং ম্যানহাটনের মার্বেল হিল পাড়াকে কভার করবে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বর্তমান ১০ অঙ্কের ফোন নম্বরগুলো ব্যবহারকারীরা আগের মতোই ব্যবহার করতে পারবেন। নতুন কোড কার্যকর হওয়ার পর থেকে নতুনভাবে নিবন্ধিত ফোন নম্বরগুলোতে এটি প্রয়োগ করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন এলাকা কোড চালুর ফলে টেলিযোগাযোগ খাতে নম্বর ঘাটতি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এটি স্থানীয় ব্যবসা ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। টেলিযোগাযোগ কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে জানিয়ে বলেন, নতুন কোড চালুর প্রক্রিয়ায় ব্যবহারকারীদের কোনো ভোগান্তি হবে না। প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও দিকনির্দেশনা সময় মতো জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ৪০ বছর আগে নিউইয়র্ক সিটির পাঁচ বরোতে দুটি এরিয়া কোড (৭১৮ ও ২১২) ছিল। পরে এর সঙ্গে যোগ হয় আরো দুটি এরিয়া কোড (৯১৭ ও ৬৪৬)। এরপর যোগ হয় ৩৪৭ ও ৯২৯। এরই ধারাবাহিকতায় এবার চালু হলো ৪৬৫ এরিয়া কোডটি।
লাইফ ইজ ওয়ান্ডারফুল
জীবন মানে কি শুধুই কষ্টের দিনলিপি!
দুঃখ বেদনা আর যন্ত্রণায় ভরা?
না, মোটেও তা নয়!
জীবন অনেক অনেক সুন্দর।
অন্তত আমি তাই ভাবি।
জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর জন্য যা যা দরকার তা করতে হবে। তাহলেই জীবন সৌন্দর্যময় হয়ে উঠবে। একটা গাছ পরিচর্যা করলে যেমন সজীব-সতেজ হয়ে ওঠে, তেমনিই মানুষের জীবন। একে যত্ন নিন, পরিচর্যা করুন। তাহলেই জীবন সুন্দর হয়ে উঠবে।
অতিরিক্ত চাপ নিয়ে জীবনকে কঠিন করে তোলার কোনো মানে নেই। সহজ-সরল পথে হাঁটুন।
সহজ ভাবনা ভাবুন, প্রাণ খুলে হাসুন।
নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে হবে।
পরিচর্যা করতে হবে, সময়ের মূল্য দিতে হবে।
আপনি যদি ইতিবাচক ভাবনা ভাবেন, তাহলে দেখবেন মনের জোর অনেক বেড়ে যাবে।
নেতিবাচক ভাবনায় মনের জোর কমে যায়।
মানসিক জোর কমে গেলে দুশ্চিন্তা মাথায় ভর করে।
দুশ্চিন্তা, হতাশা একধরনের ব্যাধি এবং তা সংক্রামক।
একজন থেকে আরেকজনে ছড়িয়ে পড়ে।
জীবন থেকে হতাশা ঝেড়ে ফেলে দিন।
কেন বিষণ্নতায় ভুগবেন? কেন হতাশা সব সময় আপনাকে ঘিরে থাকবে? প্রেমিকা বা স্ত্রী চলে গিয়েছে? চাকরি নেই? কলিগদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না? তো কি হয়েছে? জীবন কি কারো জন্য থেমে থাকে? একটা দুয়ার বন্ধ হলে হাজারটা দুয়ার খুলে যায়। প্রতিষ্ঠা পাননি বলে মনে করছেন, কিন্তু প্রতিষ্ঠা পাওয়াটা কি? শুধুই কি অর্থবিত্ত-কীর্তি-যশখ্যাতি?
বেঁচে থাকা, সুস্থ থাকাটা কি একধরনের প্রতিষ্ঠা নয়?
আপনি যে অবস্থানে আছেন, সেখানে থেকেই কিন্তু জীবনটাকে উপভোগ করা যায়। যায় না? প্রেম ভেঙে গেলে নতুন করে প্রেম করা যায়। চাকরি গেলে নতুন করে চাকরিও পাওয়া যায়।
তো?
জীবনটাকে উপভোগ করুন। যেখানে আছেন, যে অবস্থানে আছেন, সেখান থেকেই জীবনটাকে উপভোগ করতে শুরু করুন।
নিজকে ভালোবাসুন।
কারণ জীবন বড় সুন্দর।
লাইফ ইজ ওয়ান্ডারফুল!
গাওয়া হাউজে এক বিকেল
রোববারের বিকালটা কাটলো নিউজার্সির একটি কফি হাউসে। নাম-গাওয়া হাউস। আরবিতে গাওয়া অর্থ কফি। শুধু কফি খাওয়া নয়, কাজটা ছিল আরো বড়। ছুটির দিলে ফ্যামিলিকে সময় দেওয়া।
আপনাদের মনে আছে?
গেল বছর আমি ব্রুকলিনের একটি ইয়েমেনি কফি হাউস ‘গাওয়া হাউসের’ গল্প শুনিয়েছিলাম? এটি ছিল একটি ইয়েমেনি প্রিমিয়াম অর্গানিক কফি হাউস। ওয়ার্ল্ড ফাইনেস্ট ইয়েমেনি কফির জন্য বিখ্যাত। কফি বিনগুলো সরাসরি আসে ইয়েমেনে তাদের নিজস্ব ফ্যামিলি ফার্ম থেকে।
আজ কফি খেতে গিয়েছিলাম নিউজার্সিতে তাদের অন্য একটি শাখায়। আহা! তাজা বিন থেকে তৈরি কফির কি মন মাতানো সুঘ্রাণ! মন প্রাণ জুড়িয়ে যায়! বিশ্বাস না হয় কফিপ্রেমীরা সময় সুযোগ পেলে একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। গাওয়া হাউসের যে কোনো শাখায় নানা গ্রেডের কফি খেয়ে আপনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারবেন। এখানে পাবেন জুবানি-লাইট রোস্ট কফি যার সঙ্গে থাকে কার্ডাম, আদা এবং চিনামন।
আদেনি চা-ইয়েমেনি ব্ল্যাক টি, ইয়েমেনি ল্যাটি, আইস ল্যাটি, সাবাইয়া-ইয়েমেনি ফেভারেট পেস্ট্রি, খালাত আলনাহ-ইয়েমেনি ডেজার্ট ইত্যাদি।
শুধু প্রোডাক্টই কাস্টমার আকর্ষণ করে না। কাস্টমারকে কীভাবে কাছে টানতে হয়, তা ভালোভাবেই বোধহয় জানেন প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহিম আল হাসবানি। চায়ের জন্য একধরনের কাপ, কফির জন্য অন্যরকম। আর ল্যাটি পরিবেশন হবে ভিন্নরকম কাপে।
মানুষ তো বৈচিত্র্যতাই খোঁজে। একটু বৈচিত্র্যতা যদি পান, তাহলে আপনি কেন যাবেন না! যেমন আমি ব্রঙ্কস থেকে প্রায়ই ছুটে যাই এখানে-ওখানে নতুন নতুন বৈচিত্র্যময় খাবারের সন্ধানে। গাওয়া হাউস প্রতিটি শাখায় চমৎকার ওয়াল ডেকোরেশনে সেই আদিকাল থেকে বিশ্বে ইয়েমেনি চায়ের রফতানি রুট দেখানো হয়েছে। ছবিতে তুলে ধরা হয়েছে ইব্রাহিম আল হাসবানিদের পারিবারিক কফি বাগান। যেখান থেকে সরাসরি বস্তাবন্দি হয়ে কফি বিনগুলো আসে নিজেদের দোকানে।
গাওয়া হাউসের স্বত্বাধিকারী ইব্রাহিম আল হাসবানি জন্মেছেন ইয়েমেনের রাজধানী সানায়। বড় হয়েছেন শহরের বাইরে তাদের নিজস্ব কফি ফার্মে।
সানা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হাসবানি চাকুরি করেছেন ইয়েমেনি বিমান সংস্থায়। চাকুরি করেছেন এনার্জি ড্রিংকস কোম্পানিতে। সবশেষ রাজধানী সানায় কফি হাউসের ব্যবসা শুরু করেন। চালু করেন দুটো রেস্টুরেন্ট। ব্যবসায়ে যখন রমরমা কখন ২০১১ সালে শুরু হয় আরব বসন্ত যা তাদের পারিবারিক জীবনকে তছনছ করে দেয়। বাসায় বোমা পড়ে এক ভাই কোমায় চলে যায়। এক ভাই অন্ধ হয়ে যান।
ইব্রাহিম নতুন জীবনের সন্ধানে ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়ে চলে আসেন প্রথমে নিউইয়র্ক। পরে চলে যান মিশিগানের ডিয়ারবর্নে। সেখানে ২০১৩ সালে চালু করেন প্রথম গাওয়া হাউস। আরবিতে গাওয়া অর্থ কফি। তাদের নিজস্ব ফার্মের কফি বিন দিয়ে কফি তৈরি হয়। ইব্রাহিম নিজের হাতে কফি বানিয়ে গ্রাহকদের সামনে পরিবেশন করেন। ডিয়ারবর্নের মেয়রসহ মূলধারার অনেকেই তার কফি শপের নিয়মিত ক্রেতা। সিনেটর বার্নি সেন্ডার্স এদিকে গেলে ইব্রাহিমের দোকানে ঢুঁ মারেন এককাপ কফি দিয়ে গলা ভেজাতে। বার্নি সেন্ডার্সের সঙ্গে ইব্রাহিমের ছবি দেওয়ালে ঝুলে।
গাওয়া হাউসের দ্বিতীয় শাখা ব্রুকলিন। নিউজার্সিতে তাদের তৃতীয় শাখা। শিকাগো এবং ম্যানহাটানে আরো শাখা খোলার প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। ক্রেতায় গম গম করছে কফি হাউস। মানুষ দাঁড়িয়ে আছে কখন কোন টেবিল খালি হবে আশায়। বস্তা থেকে বিন আনা হচ্ছে গ্রাহকের সামনে। সেই বিন গুঁড়ো করে তাদের সামনে তৈরি হচ্ছে ফ্রেশ কফি। আর এই কফি খেতে কার না ভালো লাগে বলুন?
যাবেন ওখানে?
তাহলে ঠিকানাটা জেনে নিন।
ব্রুকলিন শাখা
গাওয়া হাউস
১৬২ বেডফোর্ড অ্যাভিনিউ, ব্রুকলিন
নিউইয়র্ক-১১২১১
ফোন: ৩৪৭ ৭৯৯ ১৭৭৬
নিউজার্সি শাখা
৪৪১ ক্রুক অ্যাভিনিউ, ক্লিফটন
নিউজার্সি-০৭০১১
ফোন:৭৩২ ৭১৪ ৪০৩৮
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫