যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস (ইউএসসিআইএস) কর্মীদের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর কার্যক্রমে সহায়তা করার জন্য ৬০ দিনের স্বেচ্ছাসেবী কাজের আহ্বান জানানো হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার ও নির্বাসন কার্যক্রমে গতি আনতে পারে। অভ্যন্তরীণ নির্দেশনা অনুযায়ী, ৬০ দিনের কাজের সময়সীমা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হলেও, এটি বাড়ানো যেতে পারে। কার্যক্রমটি ১০ মার্চ থেকে শুরু হবে এবং এটি বিভিন্ন রাজ্যে পরিচালিত হবে। ইউএসসিআইএসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান কিকা স্কট কর্মীদের কাছে এই অনুরোধ পাঠিয়েছেন, যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, নেতৃত্বকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে এবং স্বেচ্ছাসেবকদের অনুমোদন দিতে হবে, যদি না তাদের অনুপস্থিতি মিশন বাস্তবায়নে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ইউএসসিআইএস সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের আইনি অভিবাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করে এবং নাগরিকত্ব, গ্রিনকার্ড, কর্ম অনুমতি ও আশ্রয় আবেদন পর্যালোচনা করে। অন্যদিকে আইসিই অভ্যন্তরীণ অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত, গ্রেফতার, আটক ও নির্বাসন করে। নোটিশে স্পষ্টভাবে বলা হয়নি, ইউএসসিআইএস স্বেচ্ছাসেবীরা কীভাবে আইসিই কার্যক্রমে সহায়তা করবেন। তবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা আটকদের প্রসেসিং, কেস ম্যানেজমেন্ট, রেকর্ড যাচাই এবং ডাটা এন্ট্রির মতো কাজে সহায়তা করতে পারেন।
বর্তমানে আইসিই-এর বন্দিশালা ও কাউন্টি জেলগুলো ধারণক্ষমতার ১২০ শতাংশ অতিক্রম করেছে। আইসিইর ৩৮ হাজার ৫০০ জন ধারণক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে ৪৬ হাজার অভিবাসী আটক রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ইউএসসিআইএস কর্মীদের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুক্ত করা প্রশাসনের একটি কৌশল, যা ট্রাম্পের ব্যাপক অভিবাসন নীতি বাস্তবায়নে আরো গতি আনতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন এরই মধ্যে ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিইএ), এফবিআই, স্টেট ডিপার্টমেন্টসহ বিভিন্ন সংস্থাকে অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে ক্ষমতাপ্রাপ্ত করেছে। এমনকি গুয়ানতানামো বে-এর মতো সামরিক স্থাপনায় অভিবাসন আটক কেন্দ্র স্থাপনের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।
অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ আইনি অভিবাসন প্রক্রিয়া ব্যাহত করতে পারে। ইউএসসিআইএস কর্মীদের আইসিই কার্যক্রমে স্থানান্তর করলে নাগরিকত্ব, গ্রিনকার্ড ও আশ্রয় আবেদনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলোর প্রক্রিয়া ধীরগতিতে পড়তে পারে। এ সিদ্ধান্ত অভিবাসীদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন্ন করতে পারে। আইনি অভিবাসনের প্রক্রিয়া ধীর হলে, অনেক আশ্রয়প্রার্থী ও আবেদনকারী অনিশ্চয়তায় ভুগতে পারেন। এই নীতিগত পরিবর্তন এবং প্রশাসনের অভিবাসন কড়াকড়ি ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থা কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এখনই স্পষ্ট, ট্রাম্প প্রশাসন অভ্যন্তরীণ অভিবাসন আইন বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ শক্তি ও সম্পদ বিনিয়োগ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।