৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৩৪:২৩ পূর্বাহ্ন


ড. ইউনূস পাঁচ বছর থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৪-২০২৫
ড. ইউনূস পাঁচ বছর থাকবেন কীভাবে, প্রশ্ন মান্নার মাহমুদুর রহমান মান্না (ফাইল ছবি)


দেশের অনেকেই মনে করেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তত পাঁচ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকা ভীষণ প্রয়োজন। তার যে যোগ্যতা, বিশ্বব্যাপী তার যে গ্রহণযোগ্যতা সেটা দিয়ে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারবে। ইতিমধ্যে তার কিছু নমুনাও তিনি দেখিয়ে ফেলেছেন। বিশেষ করে চীন সফর ও ব্যাংকক সফরে। এছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিবকে দেশে নিয়ে আসাসহ রোহিঙ্গা ইস্যু। ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলা। ইলন মাস্কের স্টারলিংক সংযোগ নিয়ে আসা ইত্যাদি। এছাড়াও দেশের দ্রব্যমূল্য ও পাচার হওয়া অর্থ ফেরানো থেকে বেশ কিছু কাজও তিনি করে যাচ্ছেন। এতে করে ইউনূসকে বড্ড প্রয়োজন এমনটা চিন্তা করে সম্প্রতি বিভিন্নজন বক্তব্য দিয়েছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই। 

এমনকি এমন ইস্যুতে নির্বাচনের দাবিতে থাকা বিএনপিকেও অনেকেই কটূক্তি করতেও ছাড়ছেন না। 

এমন এক প্রেক্ষাপটে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘ড. ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকবেন কীভাবে? উনি ক্ষমতায় এলেন কীভাবে? উপদেষ্টাদের কেউ কেউ বলার চেষ্টা করেন এটাও একটা নির্বাচন। একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে উনি ক্ষমতায় এসেছেন।’

সম্প্রতি রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ভাসানী অনুসারী পরিষদ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এসব প্রশ্ন তোলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মান্না। তিনি বলেন, ‘আমি প্রশ্ন করছি, ড. ইউনূস নিজে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে চান? উনি কি বলেছেন? গতকালও ঐকমত্য কমিশনকে ডেকে বললেন, যত তাড়াতাড়ি পারো সংস্কার করে ফেলো, আমি জুনের মধ্যে নির্বাচন করে ফেলতে চাই।’

এই বিশেষ পরিস্থিতি কত দিন স্থায়ী হবে, সেই প্রশ্ন তুলে মান্না বলেছেন, ‘আইয়ুব খানও একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদও একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন। এক-এগারোর যারা কুশীলব, তারাও বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতি থাকেনি।’

এ প্রসঙ্গে মান্না আরো বলেন, ‘আজকে যে পরিস্থিতিকে বিশেষ মনে হচ্ছে তিন মাস পরে যখন সেই পরিস্থিতি বদলে যাবে, তখন বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল প্রাইজ বিজয়ী যদি সারা দেশের মানুষের কাছে সমালোচিত হন, সেটা কি দেশের জন্য কল্যাণকর হবে?’

তিন দিন আগে টেলিভিশনে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকারের কথা উল্লেখ করে মান্না বলেন, ‘উনি সেখানে বললেন, আমি এই কাজের যোগ্য নই। এটা আমার কাজ নয়। আমার যে কাজ আমি সেই জায়গায় ফিরে যেতে চাই। আমি জানি না, কারা এই বিশদ লেখালেখি করছেন, কারা এত বেশি করে কথা বলছেন, মানুষের কানে দেওয়ার চেষ্টা করছেন যে, ভোটের দরকার নেই, ড. ইউনূসকে আরো পাঁচ বছর চাই। তারা কি একবারও ভেবে দেখেছেন এ রকম জনপ্রিয় নেতাদের অপ্রিয় হয়ে যেতে এক বছর সময় লাগেনি।’

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, ‘যদি তাকে ক্ষমতায় রাখতে চান তাহলে বলেন তিনি একটা দল করুক। ভোট করুক। অত জনপ্রিয় থাকলে সবাই মিলে ভোট দেন। আবার পাঁচ বছরের জন্য উনি ক্ষমতায় আসুক। আর যদি উনি ভোট না করেন, তাহলে সবাই মিলে তাকে বলেন যত তাড়াতাড়ি পারেন ভালো একটা ভোট দেন, দিয়ে আপনি সম্মানের সঙ্গেই চলে যান।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। এতে আরো বক্তব্য দেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণফ্রন্টের সমন্বয়ক টিপু বিশ্বাস, বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ভাসানী অনুসারী পরিষদের নাম পরিবর্তন করে ভাসানী জনশক্তি পার্টি রাখা হয়। এর চেয়ারম্যান হয়েছেন শেখ রফিকুল ইসলাম আর মহাসচিব হয়েছেন আবু ইউসুফ সেলিম।

শেয়ার করুন