জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে যার উপস্থিতি এখন এক অনবদ্য চিহ্ন। একে একে তার অভিনীত ১০৯টি নাটক ইউটিউবে কোটি ভিউয়ের মাইলফলক ছুঁয়েছে। তবে তার জন্য এই সাফল্য শুধু সংখ্যার খেলাই নয়, বরং দর্শকদের ভালোবাসা ও প্রশংসা-যেটা তাকে আরও বেশি অনুপ্রাণিত করে। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে হিমি তার সাফল্যের পেছনের গল্প, কাজের ক্ষেত্রে বাছাইয়ের নীতি, ঈদ নাটক নিয়ে ভক্তদের সাড়া এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির
প্রশ্ন: বর্তমানে আপনাকে প্রায় সব উৎসবেই নাটকে দেখা যায়, দর্শকেরও ভালো সাড়া মেলে। জনপ্রিয়তা নিয়ে কী ভাবেন?
হিমি: সত্যি বলতে কী, এত দ্রুত এই জায়গায় পৌঁছাবো ভাবিনি। দর্শকের ভালোবাসায়ই এখানে আসা। নাটকে কাজ করি ভালো লাগা থেকে, আর যখন দেখি দর্শক সেটা পছন্দ করছেন-তখন নিজের প্রতি আরও দায়িত্ব বেড়ে যায়। এটা খুবই আনন্দের।
প্রশ্ন: এত ব্যস্ততার মাঝেও আপনি প্রতিটি কাজেই আলাদা করে নজর কাড়েন। কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কীভাবে সিদ্ধান্ত নেন?
হিমি: আমি সবসময় গল্পটা আগে দেখি। এখন ধারাবাহিক নাটকে কাজ করছি না, কারণ খণ্ড নাটকে গল্পের বৈচিত্র্য বেশি পাই। প্রতিটি চরিত্রে নতুন কিছু করতে চাই। চিত্রনাট্য ভালো না লাগলে সরাসরি জানিয়ে দিই। আলাপ-আলোচনার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিই। আমি কখনোই মনে করি না বেশি কাজ করতে হবে। যেটা ভালো লাগে, সেটাতেই কাজ করি।
প্রশ্ন: আপনার ১০৯টি নাটক কোটি ভিউ ছুঁয়েছে। এই সাফল্যকে আপনি কীভাবে দেখেন?
হিমি: আমি কখনোই ভিউয়ের পরিসংখ্যান গোনার অভ্যাস তৈরি করি না। তবে দর্শক যখন আমাকে জানায় যে আমার নাটক কোটি ভিউ পেয়েছে, তখন সত্যিই আনন্দিত হই। কিন্তু আমার কাছে সাফল্য শুধুমাত্র ভিউয়ের সংখ্যা নয়, বরং দর্শকদের ভালোবাসা। আমি বলব, ‘ভিউয়ের পরিসংখ্যানে নয়, ভালোবাসায় এগিয়ে যাচ্ছি’। দর্শকের ভালোবাসা এবং সহকর্মীদের প্রশংসায় এগিয়ে চলেছি, এবং এই ভালোবাসাই আমাকে আরও ভালো কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে।
প্রশ্ন: রোজার ঈদে আপনার অনেক নাটক প্রচার হয়েছে। দর্শক কোন নাটকগুলো বেশি পছন্দ করেছেন?
হিমি: ‘একান্নবর্তী’ নাটকটি দর্শক খুব পছন্দ করেছেন। এ ছাড়া ‘নীল রঙের সাইকেল’ নাটকটিরও সাড়া পেয়েছি। এই দুটি নাটকই গতানুগতিকতার বাইরে ছিল। ভালো গল্প, সিনিয়র শিল্পীদের অভিনয়-সব মিলিয়ে দর্শক প্রশংসা করেছেন। এমন কাজ করতে আমারও ভালো লাগে।
প্রশ্ন: আসন্ন কোরবানির ঈদের প্রস্তুতি কেমন চলছে?
হিমি: দুই ঈদের মাঝে সময় খুব কম, তাই কাজ আগেভাগেই শুরু করতে হয়। এরই মধ্যে কয়েকটি নাটকের শুটিং শেষ করেছি। আগের ঈদের জন্য করা কিছু নাটক এবার প্রচার হবে। দর্শককে নতুন কিছু দেওয়ার চেষ্টা সবসময় থাকে।
প্রশ্ন: উপস্থাপনায় আপনাকে এক সময় দেখা গেলেও এখন আর দেখা যায় না। কারণ কী?
হিমি: উপস্থাপনাও করি, তবে এখন অভিনয়েই বেশি মনোযোগ। দুটো একসঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। উপস্থাপনায় স্বাচ্ছন্দ্য থাকলেও অভিনয় আমাকে বেশি আনন্দ দেয়। তবে নতুন কিছু হলে উপস্থাপনাতেও ফিরতে পারি।
প্রশ্ন: অভিনয়শিল্পী সংঘের নতুন কমিটির কাছে আপনার প্রত্যাশা কী?
হিমি: আমাদের মতো শিল্পীদের জন্য এই সংগঠন। অনেক দূর এগিয়েছে, এখন আরও শক্তভাবে পাশে দাঁড়ানো দরকার। নতুন কমিটির কাছেও সেই প্রত্যাশা-যাতে শিল্পীদের সমস্যায় তারা আরও বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
প্রশ্ন: সম্প্রতি গানেও আপনার অংশগ্রহণ দেখা গেছে। নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
হিমি: গানের প্রতি ভালোবাসা আছে। ‘ইত্যাদি’ ও ‘পরান পাখি’ নাটকের জন্য দুটি মৌলিক গান করেছিলাম। কিন্তু অভিনয়ই আমার আসল ভালোবাসা। তবে ভালো গানের প্রস্তাব এলে নিশ্চয়ই করব।