২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৯:২৫:৫১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


বাংলাদেশ -ভারত যৌথ উন্নয়ন সম্ভাবনা
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৯-২০২২
বাংলাদেশ -ভারত যৌথ উন্নয়ন সম্ভাবনা


পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে চলছে জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকট, ডলার সংকট, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্বাদীর মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি সম্ভাবনা। রাজনৈতিক অঙ্গনেও বাড়ছে উত্তেজনা। এমনি সময়ে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংক্ষিপ্ত সফরে এখন ভারতে। দুই বন্ধুসুলভ প্রতিবেশী দেশের মাঝে দীর্ঘদিন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অমীমাংসিত হয়ে আছে। সীমান্ত সুরক্ষা, যৌথ স্ট্রেস বিরোধী তৎপরতা, অভিন্ন নদীর পানি বন্টন, বাংলাদেশের রেলখাতের সার্বিক মান  উন্নয়ন, জ্বালানি সংকট নিরসনে দুই দেশের সম্ভাব্য সহযোগিতা , ভারত থেকে জ্বালানি ক্রয় নানা বিষয়ে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনা হবার কথা।  ৮-৯ সমঝোতা সড়ক সাক্ষর হওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে।

ভারত বাংলাদেশকে প্রায় তিন দিকে ঘিরে রেখেছে। অভিন্ন নদী  গুলো অধিকাংশ হিমালয় পর্বত শৃঙ্গে উৎপত্তি হয়ে বাংলাদেশ সমতল ভূমিকে বিধৌত করে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে মিলেছে। আন্তর্জাতিক বিধি মেনে ভাটির দেশ বাংলাদেশের পানির অধিকার রক্ষা করা হয়নি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। উজানে পানি ব্যবহার হচ্ছে নিয়ম নীতি না মেনেই। গঙ্গার পানি বন্টন নিয়ে যায় একটি চুক্তি আছে অন্যান্য যদি বিশেষত তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি ঝুলে আছে পশ্চিম বঙ্গের মমতা ব্যানার্জির একগুঁয়েমীতে।  প্রভাবশালী প্রতিবেশীর একতরফা নীতির কারণে নদীমাতৃক বাংলাদেশের বিশাল অংশে মেরুকরণের নিদর্শন সুস্পষ্ট। শুস্ক মৌসুমে পানি থাকে না আর বর্ষায় প্লাবিত হয় বাংলাদেশ। যৌথ নদী  কমিশন নামে আছে কাজকর্ম নিতান্তই সীমিত। এবারের শীর্ষ বৈঠক থেকে যদি সমূহের জন্য বন্টন নিয়ে কি অর্জন হয়? কুশিয়ারার পানি ন্যায্য বন্টন হোক সেটিও প্রত্যাশায়।

বাংলাদেস ভারত ছিটমহল বিনিময় বর্তমান সরকারের বড় অর্জন। সীমান্ত হাট বাজারের সংখ্যা আরো বাড়ানো হলে ভালো হয়। একই সঙ্গে সীমান্তে হত্যা শুন্য হওয়া প্রয়োজন। দাগি আসামি আর ড্রাগ চোরাচালানকারীদের বিষয়ে উভয় দেশের সীমান্ত রক্ষীদের আপোষহীন থাকা জরুরি।

দুই দেশের রেল যোগাযোগ পথ একে একে উন্মুক্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে দুই দেশের রেল সেবা একই পর্যায়ে উন্নীত করার বিষয়ে ভারতকে আরো উদার হতে হবে। বাংলাদেশের  ভেতর দিয়ে ভারত ট্রানজিট সুবিধা পেলেও নেপাল ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যে একই ধরণের সুবিধা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। শুনেছি, ভারতের ইঙ্গিতেই  বাংলাদেশের কয়লা উত্তোলন এবং গভীর সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান বাধা গ্রস্ত। ভারতের কিন্তু জ্বালানি রপ্তানি করার সামর্থ নেই। নিজেই বিভিন্ন দেশ থেকে জ্বালানি আমদানি করে।  ইদানিং রাশিয়া থেকে সুলভ মূল্যে বিপুল পরিমান জ্বালানি আমদানি করেছে ভারত। বাংলাদেশে এখন জ্বালানি সংকট।  ভারত এখন বাংলাদেশে জ্বালানি আমদানির ট্রানজিট হতে চায়। কেন স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি করতে পারবে না? 

দু’দেশের বিপুল বাণিজ্য ঘাটতি নিরসনে ভারতকে অবশ্যই আরো উদার হতে হবে।  

যাই হোক সবাই জানে ভারতের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সমর্থন ছাড়া বাংলাদেশে কোনো সরকার ক্ষমতায় স্থায়ী হবে না। তবুও সবাই চায় বাংলাদেশ সার্বভৌম অস্তিত্ব বজায় রাখুক। উন্মুখ হয়ে থাকলাম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফর থেকে অর্জন দেখার। 


শেয়ার করুন