০৬ মে ২০১২, সোমবার, ১০:১৭:৪০ পূর্বাহ্ন


একাংশের বিরোধিতা
যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের শূন্যপদ পূরণ : অশান্তির আগুন বাড়ছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৪-২০২৪
যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের শূন্যপদ পূরণ : অশান্তির আগুন বাড়ছে


কে শুনে কার কথা। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিভক্তি নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বিভক্তির আগুনে জ্বলছে। কেউ যেন কারো কথা শুনছে না। একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ। আরেক অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নিজাম চৌধুরীসহ অনেকে। মূলত এই বিভক্তিকে কেন্দ্র করেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করতে পারছেন না। দুই অংশই তাদের মতো করে সভা-সমাবেশ এবং কার্যকরি কমিটির সভা করে যাচ্ছেন। তাও পাল্টাপাল্টি একই সপ্তাহে। ওই সভায় এক অংশ আরেক অংশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করছেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের গঠনতন্ত্র লংঘনের অভিযোগ তুলছেন।

কার্যকরি কমিটির একাংশের সভায় অভিযোগ করা হয় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের শূন্যপদ পূরণ করার কোনো এখতিয়ার নেই। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ড. সিদ্দিকুর রহমানকে অডিয়েন্সে বসিয়ে অন্যের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী সংবর্ধনা সভা করেছেন সেদিনই তার পদ থাকে না, কমিটি থাকে না। তারপরেও তিনি গায়ের জোরে অনুষ্ঠান করে যাচ্ছেন। এই বিতর্কের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান শূন্যপদ পূরণ করছেন। তার সঙ্গে যারা রয়েছেন তাদের পদোন্নতি দিচ্ছেন, আবার অন্য গ্রুপের দু-একজনকেও নিয়োগ দিচ্ছেন। বিরোধীদের নিয়োগ দিচ্ছেন তাদের মধ্যে ফাটল ধরানোর জন্য। জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটিতে প্রথমে পদের সংখ্যা ছিল ৭৬টি। ওই কমিটি নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে নর্থ আমেরিকা আওয়ামী লীগ নামে আরেকটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর এবং আব্দুর রহিম বাদশা। অদ্ভুত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাধ্যমে এক ধরনের সমঝোতা হয় এবং ৭৬ সদস্য কমিটিতে আরো ১০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

ড. সিদ্দিকুর রহমান ও আব্দুল সামাদ আজাদের নেতৃত্বাধীন কমিটির কার্যকরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ১৪ এপ্রিল। সেই সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় শূন্যপদ পূরণ করার। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রায় ১৫-১৬টি শূন্যপদ পূরণ করেছেন। যদিও এ ব্যাপারে ড. সিদ্দিকুর রহমান কিছু বলতে রাজি হয়নি। কিন্তু যাদের চিঠি দিয়েছেন তাদের অনেকেই তা সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিয়ে দিয়েছেন। একটি সূত্রে জানা গেছে, যাদের শূন্যপদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারা হলেন-যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসানকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলীকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে, জনসংযোগ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কয়েসকে সহ-সভাপতি করা হয়েছে। প্রচার সম্পাদক হাজী এনামকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাহিদ হাসানকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি দরুদ মিয়া রুনেলকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক নূরুণ আমিন বাবুকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নাফিজুর রহমান তুরানকে প্রবাসী কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সদস্য মোহামিদ কে প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা খান শওকতকে উপপ্রচার সম্পাদক করা হয়েছে। সদস্য সৈয়দ কামরুল ইসলাম হিরাকে অর্থ সম্পাদক করা হয়েছে। সদস্য করা হয়েছে সিরাজুল ইসলাম ভুইয়া, হুমায়ুন কবীর, ফাওহমি ও জনিকে।

আরো জানা গেছে, কেউ যদি কার্যকরি কমিটির তিনটি সভা অনুপস্থিত থাকে। তাকে বাদ দিয়ে সেই পদে নতুন লোক নিয়োগ করা হবে। অন্য একটি সূত্র যায়, এই সব নিয়োগ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি আরো বাড়িয়ে দেবে।

শেয়ার করুন