০৬ মে ২০১২, সোমবার, ০১:১৩:১৪ পূর্বাহ্ন


এনওয়াইপিডি’র গোয়েন্দা বিভাগে বাংলাদেশী অফিসারদের সংখ্যা বাড়ছে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০৪-২০২২
এনওয়াইপিডি’র গোয়েন্দা বিভাগে বাংলাদেশী অফিসারদের সংখ্যা বাড়ছে পুলিশ কমিশনারের সাথে পরিবারসহ পুলিশ অফিসার মাসুদুর রহমান


 বিশ্বের বাণিজ্যিক রাজধানী এবং আকর্ষণীয় সিটি হিসাবে পরিচিত হচ্ছে নিউইয়র্ক সিটি। এই নিউইয়র্ক সিটিতেই বিশ্বের প্রায় ১৯৩ দেশের মানুষের বাস। শতাধিক ভাষাভাষির এই সিটিতে বাংলাদেশীদের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ বিভাগেও বাংলাদেশী আমেরিকানদের সংখ্যা বাড়ছে। সর্বশেষ গত ১ এপ্রিল ১ শুক্রবার তিনজন বাংলাদেশী-আমেরিকান এনওয়াইপিডি’র গোয়েন্দাকে তৃতীয় গ্রেড থেকে সম্মানজনক দ্বিতীয় গ্রেড পদে পদোন্নতি পেয়েছেন এবং একজন পুলিশ অফিসার থেকে গোয়েন্দা বিভাগে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি পেয়েছেন। এছাড়াও ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট লেভেল ২ থেকে অ্যাসোসিয়েট ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট লেভেল ১-এ উন্নীত হয়েছেন। এরা হলেন-  মোহাম্মদ আর ইসলাম, সুলতানা জাহান, কার্তিক মল্লিক, এমডি আর ইসলাম, ফারজানা মোতাইদ, আবরুর আর খান। ওয়ান পুলিশ প্লাজায় এ পদোন্নতি অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। কমিশনার কিচ্যান্ট সেওয়েল, চীফ অফ ডিপার্টমেন্ট কেনেথ কোরি এবং পুলিশ কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পদোন্নতিপ্রাপ্ত গোয়েন্দা মাসুদ রহমান ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশের নোয়াখালী থেকে পরিবারের  সাথে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। তার পিতার নাম (মৃত) নুরুল ইসলাম। তিনি বিএমসিসি থেকে ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি ২০০২ সালে একজন পুলিশ অফিসারের পদে এনওয়াইপিডি-তে যোগ দেন। তিনি পুলিশ বিভাগে কাজের পাশাপাশি, বিভিন্ন সুযোগে বাংলাদেশী কমিউনিটির সেবা করে চলছেন। অপরাধ তদন্ত কাজের পাশাপাশি, ডিটেক্টিভ মাসুদ  রহমান একজন বিশিষ্ট সুরা কর্মকর্তা হিসেবেও কাজ করেছেন। তিনি তার কর্মের জন্য নিউইয়র্ক সিটির অন্যান্য কমিউনিটি বিশেষ করে বাংলাদেশী কমিউনিটির মধ্যে সুপরিচিত এবং সম্মানিত।

ডিটেক্টিভ মোহম্মদ হোসেন ১৯৯০ সালে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন। তার পিতার নাম আব্দুল খালিক। তারা সিলেটের বিয়ানীবাজারের আরিজখাটিলা গ্রামের অধিবাসী। তিনি হাই স্কুল ফর হেলথ প্রফেশনস অ্যান্ড হিউম্যান সার্ভিসেস থেকে স্নাতক হন। তিনি নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটির লেম্যান কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ২০০৬ সালে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন। ডিটেকক্টিভ হোসেন সম্পর্কে তার সাবেক সুপারভাইজার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার শামসুল হক বলেন, ‘ডিটেক্টিভ হোসেন একজন স্মার্ট, বিশদ-ভিত্তিক, প্রতিভাবান এবং অস্বাভাবিকভাবে তার কাজের প্রতি নিবেদিত। আমি তার সাফল্য কামনা করছি এবং আমি আনন্দিত তার এই পদোন্নতিতে।


নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগে বাংলাদেশী পুলিশ কর্মকর্তারা

অপর ডিটেকক্টিভ মোহাম্মদ আলী ১৯৯৭ সালে ডাইভারসিটি ভিসা জয় করে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। তার পিতা মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন মজুমদার, ঢাকা শিা বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত উপসচিব। ডিটেকক্টিভ আলী যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হওয়ার আগে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে স্নাতক হন। ম্যানহাটন কমিউনিটি কলেজ থেকে অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি শেষ করার পর, তিনি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং গণিতে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন নিউইয়র্কের সিটি ইউনিভার্সিটি ব্রুকলিন কলেজে। তিনি ২০০৬ সালে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগে যোগ দেন এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোতে একটি বিশেষ ইউনিটে নিয়োগ পান। তিনি ২০০৮ সালে গোয়েন্দা বিভাগের তৃতীয় গ্রেড পদে উন্নীত হন। দিলরুবা জাহান-আলী দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে।

গোয়েন্দা আসহাফিক চৌধুরীর জন্ম এবং বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রে। তার বাবার নাম সেলিম চৌধুরী এবং মায়ের নাম শাহনাজ চৌধুরী। তার বাবা-মা ফেনী জেলার বাসিন্দা। তিনি বেঞ্জামিন কার্ডোজো হাই স্কুল থেকে স্নাতক হন এবং সিটি কলেজে প্রাক-আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। তিনি ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ বিভাগে যোগ দেন। ২০১৯ সালে তিনি তখন পেট্রোল বরো কুইন্স নর্থ অ্যান্টি-ক্রাইম টিমে কাজ যোগদান করেন এর পরে তাকে কুইন্সের জ্যামাইকার ১০৩তম ডিটেকটিভ স্কোয়াডে পুলিশ অফিসার হিসাবে কাজ করেন এবং সম্প্রতি গোয়েন্দা পদে পদোন্নতি পান।

এদিকে বাংলাদেশী আমেরিকান পুলিশ এসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন করম চৌধুরী এক বিবৃতিতে পদোন্নতিপ্রাপ্তদের অভিনন্দিন জানিয়ে বলেন, একজন ডিটেকটিভ দ্বিতীয় গ্রেড পাওয়া কঠিন। বাংলাদেশী-আমেরিকান যারা গোয়েন্দা বিভাগে পদোন্নতি পেয়েছেন তাদের কাজ অনুকরণীয় এবং তারা আমাদের গর্ব, কমিউনিটির গর্ব।  এছাড়া  বাপার প থেকে  ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদুর সিদ্দিক , জেনারেল সেক্রেটারিলিফটেনান্ট প্রিন্স আলম পদোন্নতি প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান। 

এনওয়াইপিডি এখন বাংলাদেশী-আমেরিকানদের কাছে আকর্ষণীয় পেশায় পরিণত হয়েছে। নিউইয়র্ক পুলিশে বাংলাদেশিদের জয়জয়কার উল্লেখ করে বাপা’র মিডিয়া লিয়াজোঁ ডিটেকটিভ জামিল সারোয়ার জনি জানান,  বর্তমানে আনুমানিক ১৪৫০ জন বাংলাদেশী এনওয়াইপিডির বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালন করছেন।  যাদের মধ্যে ৪ জন ক্যাপ্টেন, ১ জন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার, ৯ জন লেফটেন্যান্ট, কয়েক ডজন সার্জেন্ট ডিটেক্টিভ এবং পুলিশ অফিসারসহ ৪৫০ জন ইউনিফর্ম অফিসার রয়েছেন। এছাড়াও এনওয়াইপিডিতে প্রায় ১,১০০ সিভিলিয়ান লোক নিযুক্ত রয়েছেন তারা স্কুল সেফটি এজেন্ট, ট্রাফিক এজেন্ট, স্কুল ক্রসসিং গার্ড হিসাবে কর্মরত এবং সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।

শেয়ার করুন