২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৬:৫৪:২৯ পূর্বাহ্ন


প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৯-২০২২
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত


প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের ৭৭তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক আসছে। নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগতম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জেএফকে এয়ারপোর্টে স্বাগত জানাবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগসহ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তব্য রাখবেন আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর এবং সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখবেন আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর। প্রধানমন্ত্রী যখন জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আসেন, তখন তিনি জাতিসংঘের কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ব্যানারে তিনি নাগরিক সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করেন। মহামারী করোনার কারণে তিনি গত বছর থেকে নাগরিক সংবর্ধনায়ও উপস্থিত হচ্ছেন না। তিনি ভার্চুয়ালি ভাষণ দিয়েছেন। এবারো প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল ভাষণ দেবেন। বাস্তবতা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যতোবারই আসেন সাধারণ প্রবাসীদের সাথে তার কোনো কর্মসূচি থাকে না। যে কারণে প্রধানমন্ত্রী সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশিদের মনের কথা বা দাবির কথা জানতে পারেন না। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে মতবিনিময়ের সুযোগও কেউ করে দেন না। সবসময়ই প্রধানমন্ত্রীকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের থেকে দূরে রাখা হয়। সংবর্ধনা সভায় আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, কর্মী এবং সমর্থকরা উপস্থিত থাকেন। সেখানে সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশিদের যাওয়ারও কোনো সুযোগ থাকে না, বক্তব্য তো দূরের কথা।
প্রতি সরকারই সবসময় প্রবাসী বাংলাদেশিদের কথা বলেন। তাদের সুযোগ- সুবিধার কথা বলেন। তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহŸান জানান। করোনার সময় যখন বাংলাদেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে তখনো প্রবাসী বাংলাদেশিরা এগিয়ে এসেছিলেন। তাদের পাঠানো অর্থের ওপরই বাংলাদেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে। অথচ সব সরকারের আমলেই প্রবাসী বাংলাদেশিরা নানাভাবে নিগৃহীত। এয়ারপোর্ট থেকে তাদের হয়রানি শুরু হয়। যতোদিন বাংলাদেশে থাকেন, ততোদিন পর্যন্ত তাদের হয়রানি চলতে থাকে। সবচেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সম্পত্তি দখল, বাড়ি দখল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল। তারা যেহেতু বাংলাদেশে থাকেন না, সেহেতু তাদের সম্পত্তি দখল করে নেয়া হয়। এই নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা করেও কোনো লাভ হয় না। উল্টো প্রাণভয়ে পালিয়ে আসতে হয় তাদের। এই রকম বহু উদাহরণ রয়েছে এই কমিউনিটিতে। বিনিয়োগ করতে গেলেও একই অবস্থা। তাদের ফাইল আটকা পড়ে থাকে। চাঁদাবাজদের কারণে কোনো কিছুই করা সম্ভব হয় না। বেশ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে গিয়েছিলেন, শেষ পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরে এসেছেন। এর মধ্যে কেউ কেউ অর্থ দিয়েও তার প্রজেক্ট পাস করাতে পারেননি। বাংলাদেশের প্রতি ক্ষেত্র যেন সিন্ডেকেটের হাতে বন্দি। এই সিন্ডিকেট যদি না চায়, তাহলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষে কিছুই করা সম্ভব হয়। তবে পার্থক্যও রয়েছে। কোনো কোনো দলীয় প্রবাসী সফল হয়েছেন। কারণ তারা ক্ষমতার পাশাপাশি রয়েছেন। যদিও তাদেরকেও মাশুল দিতে হয়েছে। কোনো কোনো প্রবাসীর পুরো প্রজেক্ট অর্থ এবং ক্ষমতার কারণে ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছেন। এখন তারা প্রবাসেই রয়েছেন। প্রবাসী মন্ত্রণালয় রয়েছে তাও সিন্ডিকেটের ইশারায় চলে। প্রশ্ন হলো, তাহলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কোথাও যাবেন। কোথাও বিনিয়োগ করবেন? জীবনের শেষ সময়টুকু বাংলাদেশে থাকার চিন্তা করলেও তা আর সম্ভব হয়ে ওঠে না। নিষ্ঠুরতা হচ্ছে যাদের জন্য সারাজীবন প্রবাসে থেকেছেন, কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করেছেন, যে দেশের উন্নয়নে অর্থ দিয়েছেন, সেই দেশেই তার লাশ নেয়ার ব্যবস্থা থাকে না।
আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বাংলাদেশ বিমানের। তাদের সেই স্বপ্নটিও পূরণ হচ্ছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বেশ কয়েকবার বলেছিলেন নিউইয়র্ক-ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে বিমান পুনরায় চালু করবেন। বেশ কয়েকবার আপনার বেশ কয়েকজন মন্ত্রীও এসেছিলেন। তারা আমেরিকার সিভিল অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে কথা বলেছেন, প্রবাসীদের আশ্বাস এবং আশ্বস্ত করেছিলেন নিউইয়র্ক রুটে বাংলাদেশ বিমান চালু হবে। কিন্তু তাদের সেই প্রত্যাশা আজ পর্যন্ত পূরণ হয়নি। জেএফকে এয়ারপোর্টে তারা বাংলাদেশের পতাকা দেখলে খুশি হতেন, বাংলাদেশ বিমানে নিজ থেকে যেতে পারলে গর্ববোধ করতেন। সেই গর্ব করার সুযোগটিও নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি প্রবাসীবান্ধব সরকার। আপনিই পারেন এই রুটে বিমান পুনরায় চালু করতে। আশা করি, বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালু এবং প্রবাসীদের অন্যান্য দাবি-দাওয়ার প্রতি আপনি আলাদা গুরুত্ব দেবেন। আরো ভালো হতো যদি আপনার নেতৃত্বে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একটি ওয়ানস্টপ প্রকল্প চালু করা যায়। আশা করি ভেবে দেখবেন।
4

শেয়ার করুন