২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৯:৩৩:২৫ অপরাহ্ন


মুক্তিযোদ্ধা দলের অনুষ্ঠানে বক্তারা
আ.লীগ নয় বিএনপিই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-১২-২০২২
আ.লীগ নয় বিএনপিই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি বক্তব্য রাখছেন আলহাজ বাবর উদ্দিন


আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কারণ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি, তারা বিজয়কে হত্যা করেছে, তারা বিজয়কে হাইজ্যাক করেছে। যে দল গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করে তারা কখনো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে পারে না। যারা বহুদলীয় এবং সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছে, তারাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দল কর্তৃক আয়োজিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ বাবর উদ্দিনকে মুক্তিযোদ্ধা দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানানো হয়।

গত ২৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ বাবর উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবয় স্বাধীনতা সুবর্ণ কমিটির আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান জিল্লু। প্রধান বক্তা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এবং স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জসিম ভুইয়া, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সবুজ, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সায়েম, সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর সরোয়ার্দী।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এবং উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাক আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিকদল নেতা আবুল কালাম, কোকো স্মৃতি পরিষদের সভাপতি শাহাদাত হোসেন রাজু, মোহাম্মদ রিপন, তারিকুল দীপু, সোয়েব আহমেদ, আলি মালিক, ফরিদ খন্দকার, বাদল মির্জা, ইমন ভুইয়া, রেজাউর রহমান খোকন, মোহাম্মদ মাসুদ, হাসান মাহমুদ, সুলতান আহমেদ, আজম, মিলন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিল্লুর রহমান জিল্লু আলহাজ বাবর উদ্দিনকে অভিনন্দন জানিয়ে কয়েকজন বক্তার বক্তব্যের জের ধরে বলেন, আমরা কমিটি চাই, শুধু যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি চাই। আমরা পদ পদবি চাই না, ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই।  স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন ঘটাতে চাই। তিনি বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের একটি দেশ এবং পতাকা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, আমরাই যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করি, সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন করেছি। আমরাই ১/১১ এর সময় আন্দোলন করেছি। তখন দেশে এবং প্রবাসে কেউ আন্দোলন করার সাহস পাননি। কিন্তু আজকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ধ্বংসের জন্য ষড়যন্ত্র করছে একটি গোষ্ঠী। আশা করি আমাদের নেতা তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দিয়ে এই ষড়যন্ত্রের জবাব দেবেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন চলতে থাকবে।

প্রধান বক্তা গিয়াস আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। কারণ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি, তারা বিজয়কে হত্যা করেছে, তারা বিজয়কে হাইজ্যাক করেছে। যে দল গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল কায়েম করে তারা কখনো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে পারে না। একদল এক নেতা তো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হতে পারে না। যারা বহুদলীয় এবং সংসদীয় গণতন্ত্র উপহার দিয়েছে তারাই স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। তিনি আরো বলেন, শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন আর শেখ মুজিব আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান চলে গিয়েছিলেন। জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। আর বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সকল স্বৈরাচারকে সমর্থন দিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরশাদকে শেখ হাসিনা সমর্থন দিয়েছেন, ১/১১ এর সরকারকেও সমর্থন দিয়েছেন শেখ হাসিনা। যে কারণেই তারা তাকেই ক্ষমতা দিয়েছে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপিকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে একটি গোষ্ঠী। যাকে খুশি তাকে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক দেয়া হোক তারপরও আমরা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কমিটি দিতে চাই। তিনি বলেন, আমরা এরশাদকে হটিয়েছি, ১/১১-এর সরকারকে হটিয়েছি। এবার শেখ হাসিনাকে হটিয়ে বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবো।

মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল বলেন, বাংলাদেশে এখন নতুন স্টাইল শুরু হয়েছে। বিরোধীদের হয়রানি করার জন্য গায়েবি মামলা দেয়া হচ্ছে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের আত্মীয়স্বজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি সন্দ্বীপ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবো। তাই আমি দেশে যাচ্ছি এবং হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকবো।

জসীম ভূইয়া বলেন, শেখ মজিবুর রহমান যুদ্ধের সময় আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তান চলে গিয়েছিলেন। যে কারণে ৭ মার্চের ভাষণের পর তাকে আর দেখা যায়নি। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আলহাজ বাবার উদ্দিন বলেন, এটা দিবালোকের মতো সত্য শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। যেটা আমরা নিজ কানে শুনেছি। প্রথমে তিনি নিজেকে প্রেসিডেন্ট দাবি করে ঘোষণা দেন। পরবর্তীতে অন্যদের অনুরোধে শেখ মুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন।

আব্দুস সবুর বলেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন আবার ’৭৫ সালে জাতির প্রয়োজনে তিনি আবারো ব্যারাক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। জনতাই তাকে বের করে নিয়ে আসেন।

মোশাররফ হোসেন সবুজ বলেন, আজকে আমরা বিজয় দেখি না, আমরা মা- বোনের কান্না শুনতে পাই। বিএনপির র‌্যালি এবং অনুষ্ঠানগুলোতে এই বিজয়ের মাসেও গুলি করে বিএনপির নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে।

ইঞ্জিনিয়ার সায়েম বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃত্বে আছি এবং থাকবো।

এম এ বাতিন বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশি হামলার নিন্দা জানান, বিএনপির সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করেন।

অনুষ্ঠানে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার আত্মার মাগফিরাত এবং বেগম জিয়া, তারেক রহমান, মুক্তিযুদ্ধ এবং সকল গণতান্ত্রিত আন্দোলনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন শ্রমিকদল নেতা মোস্তাক আহমেদ।

শেয়ার করুন