২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৮:০২:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


পুলিশি হামলা করে গণদাবীর আন্দোলন দমানো যাবে না
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৩-২০২২
পুলিশি হামলা করে গণদাবীর  আন্দোলন দমানো যাবে না হরতাল কর্মসুচীতে সাইফুল হক


হরতাল শেষে দেশ’কে সাইফুল হক


বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক, বাম জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেছেন, এ হরতাল ছিল গণদাবি। এ হরতাল মানুষের মন জয় করেছে। এ কর্মসূচিকে তারা ইতিবাচকভাবে নিয়েছে, এর পাশাপাশি তারা স্বত:র্স্ফুতভাবে অংশ নিয়েছে। তাই দমনপীড়ন ও পুলিশী হামলা করে এ আন্দোলনকে দমানো যাবে না। 

দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি ও আওয়ামী দুঃশাসনের প্রতিবাদে রাজধানীসহ ২৮ মার্চ হরতাল কর্মসূচি পালন করে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এতে বাম জোটের ডাকা দেশব্যাপী এ হরতালে রাজধানীসহ দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে পুলিশী বেড়ধরক লাঠিপেটা করেছে। এর পাশাপাশি তারা বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। তবে বাম জোটের ডাকা হরতালে কোন উসকানি ছাড়া পুলিশী হামলা আক্রমণ করেছ বলে নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার ২৮ মার্চ এ হরতাল পালন কর্মসূচি নিয়ে কথা বলেন বাম জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হকের সাথে সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার এ প্রতিনিধির সাথে। । এতে তিনি আরো বলেন, এই হরতাল বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি ব্যর্থতার বিরুদ্ধে, মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে, বাজার নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে। এ হরতালে সরকারের দমন করে শাসনের বিরুদ্ধে দেশের মানুষ জেগে উঠছে। জোটের ডাকে সারা দেশে অর্ধদিবস হরতাল চলাকালীন সময়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পুলিশি হামলা আক্রমণ, লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে বাম জোটের নেতাকর্মীদের আহত করার ঘটনায় ঘটেছে। এছাড়া সরকারি দলের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের পাশাপাশি আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনী হামলা করেছে। এসব বাঁধা হামলা করে সরকার হয়ত সাময়িকভাবে লাভবান হবে। কিন্তু ভবিষ্যতে জনগণ এসব প্রতিরোধ করবে। তবে এ কর্মসূচিতে জনগণ সাময়িকভাবে একটু কষ্ট হলেও তারা মনের দিক থেকে হরতালকে মনে প্রাণে নিয়েছে। 

সাইফুল হক অভিযোগ করে বলেন, নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শেষে জোটের সমন্বয়ক যখন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন ঠিক সেই মুহূর্তে বিনা উস্কানিতে অতর্কিত হামলা চালিয়ে নেতাকর্মীদের  আহত করে। জলকামান এবং টিয়ার গ্যাস, নিক্ষেপ করে অন্ততপক্ষে ৫০ জন নেতাকর্মীদের আহত করে। ঢাকার বাইরেও প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মীদের আহত করে এবং অসংখ্য নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। আহত নেতাকর্মীদের ঢাকা মেডিকেল কলজ হাসপাতাল ও অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করি জনগণের এধরনের আন্দোলনের পরে সরকারের টনক নড়বে। তা না হলে জনগণকে সাথে নিয়ে আরো কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।  

তিনি বলেন, গণসংগ্রামের ধারায় এই সরকারকে বিদায় দেয়া ছাড়া দেশ ও দেশের জনগণকে রক্ষা করা যাবে না। এর পাশাপাশি তিনি জনগণের ন্যায্য দাবির হরতালে যে সকল পুলিশ এই হামলা ও আক্রমণ করেছে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের কাছে আহবান জানান। 

উল্লেখ্য, ২৮ মার্চের এ হরতালে নৈতিক সমার্থন দিয়েছিল বিএনপি। এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায় বিএনপি যেহেতু জনগণের কথা বলে। তাই জনগণের দাবির প্রতি যে আন্দোলন সেটাতে সমর্থন করে। 

উল্লেখ্য, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা আধাবেলা হরতালের একেবারে শেষভাগে এসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হয়েছে বাম জোটের নেতাকর্মীরা। 

এর আগে সতাল থেকেই পল্টন-জিরো পয়েন্ট ঘিরে রাখে বাম জোটের নেতাকর্মীরা। খন্ড খন্ড মিছিল, শ্লোগান নিয়ে তারা পুরো এলাকায় হরতাল পালন করে। এছাড়া শাহবাগ মোড়ে রাস্তা আটকে হরতালের সমর্থনে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো সমাবেশ করে। টায়ার জ্বালিয়ে ও রাস্তার পাশের ব্যানার-পোস্টারে অগ্নিসংযোগ করে ব্যারিকেড তৈরির মাধ্যমে এদিন সকাল থেকেই অবস্থান করেন ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। এসময় কয়েক দফা আইন শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা তাদরেকে শাহবাগ চত্বর থেকে সরে যেতে বলে। রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় শাহবাগ এলাকায় তৈরি হওয়া যানজটের কারণে পুরো এলাকায় সমস্যার কথা বলায় পরে সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় ছেড়ে দেয় বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো। এর পর তারা শাহবাগ থেকে মিছিল নিয়ে কাঁটাবন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা হয়ে পল্টনে যায়। 

এদিকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমাবেশ চলছিল। জোটের সমন্বয়কও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক যখন কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাবেন, ঠিক তখন পুলিশের সঙ্গে বাকবিন্ডায় জড়ায় বাম জোটের নেতাকর্মীরা। এসময় বাম জোটের নেতাকর্মীদের অবস্থানে পল্টন মোড়ে যানজট লেগে যায়। তখন পুলিশ সদস্যদের সাথে নেতাকর্মীদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে বাম জোট নেতাকর্মীরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। পুলিশ তাদের প্রতিহত করতে লাঠিচার্জ করে এবং জলকামান নিয়ে গরম পানি নিক্ষেপ করে। এতে বেশকজন নেতাকর্মী আহত হন। এতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের নেতা আব্দুল করিম, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক শাওন বিশ্বাস, কোষাধ্যক্ষ রাকিব হাসান সুজন, ঢাকা মহানগর সংসদের সভাপতি শাহরিয়ার ইব্রাহীম মিমো, সহ-সভাপতি সালমান রাহাত, মহিউদ্দিন রুমি, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিজম ফকির, সদস্য আজিজুল হক আরমান, রাইসা আমিন স্নেহা, রাজবাড়ি জেলার সভাপতি কাওসার আহমেদ রিপন, ফরিদপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক শিতাংশু ভৌমিক অঙ্কুর আহত হন। অন্যদিকে সিপিবির হযরত আলী, মিয়া মো জুয়েল, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির শহীদুল আলম নান্নু, সাইফুল ইসলাম, রাশিদা বেগম, জোনায়েত হোসেন। গণসংহতি আন্দোলনের বাচ্চু ভূঁইয়া, নিজামুদ্দিন।


শেয়ার করুন