২৫ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৫:০৯:৫৬ অপরাহ্ন


নিউইয়র্কে স্থায়ী শহিদ মিনারের স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০২-২০২৩
নিউইয়র্কে স্থায়ী শহিদ মিনারের স্বপ্ন আজও পূরণ হয়নি শহিদ মিনার


আমেরিকায় যতগুলো স্টেট রয়েছে তার মধ্যে নিউইয়র্ক অন্যতম। এই নিউইয়র্কই এখন বিশ্বের ব্যায়বহুল শহর। এই নিউইয়র্কে বিশ্বের প্রায় সব দেশের নাগরিকের বসবাস। এখানে প্রায় ১৯০ ভাষার মানুষ বসবাস করেন। যার মধ্যে বাংলাদেশিরাও রয়েছেন। এই নিউইয়র্কে অন্যান্য কমিউনিটির চেয়ে বাংলাদেশিদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। নিউইয়র্কের বিভিন্ন বরোতে বাংলাদেশি জনপদ গড়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, আমেরিকায় বাংলাদেশিদের বসবাস সবচেয়ে বেশি নিউইয়র্কে। এই নিউইয়র্ক বাংলাদেশিদের নিরাপদ জনপদে পরিণত হয়েছে। নিউইয়র্কের এমন কোনো বরো নেই, যেখানে বাংলাদেশি নেই। বেশিসংখ্যক বাংলাদেশি থাকার কারণে নিউইয়র্কে রয়েছে বাংলাদেশিদের প্রায় তিন শতাধিক সংগঠন রয়েছে। মূলত নেতৃত্বের কোন্দলের কারণেই এত সংগঠন। আবার বাংলাদেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের শাখা এবং প্রশাখা রয়েছে।

অপ্রিয় হলেও সত্যি যে, আমেরিকার অন্যান্য স্টেটে স্থায়ী শহিদ মিনার থাকলেও নিউইয়র্কে কোনো স্থায়ী শহিদ মিনার নেই। নিউইয়র্কের পার্শ্ববর্তী স্টেট নিউজার্সিতেও স্থায়ী শহিদ মিনার রয়েছে। কিন্তু নানাবিধ জটিলতা এবং গ্রুপিংয়ের কারণে নিউইয়র্কে স্থায়ী শহিদ মিনার হয়নি। এ জন্য বাংলাদেশ সোসাইটি স্থায়ী শহিদ মিনারের জন্য চেষ্টা করেছিল। সেই সময় সিটিতে নকশাও দাখিল করা হয়েছিল কিন্তু বাঙালিদের মধ্যে বিভেদের কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি। এই শহিদ মিনার এলেমহাস্ট হাসপাতালের সামনের পার্কে নির্মাণের কথা ছিল। পরবর্তী সময়ে জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন উদ্যোগ নিয়েছিল জ্যাকসন হাইটসে শহিদ মিনার প্রতিষ্ঠার কিন্তু তা ভেস্তে যায়।

সবচেয়ে সহজ সুযোগ ছিল জ্যামাইকার ক্যাপ্টেন টিলি পার্কে শহিদ মিনার করার। বর্তমানে কুইন্স ডিস্ট্রক্ট অ্যাটর্নি মিলিন্ডা ক্যাটস ২০১৪ সালে যখন কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তখন শহিদ মিনার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। নির্বাচনের পূর্বে মিলিন্ডা ক্যাটস গিয়েছিলেন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির কর্মকর্তাদের কাছে। জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান সভাপতি, মূলধারার রাজনীতিবিদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার জানান, বর্তমান পরিস্থিতি খুবই জটিল। তিনি বলেন, মিলিন্ডা ক্যাটস আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি জ্যামাইকার ক্যাপ্টেন টিলি পার্কে শহিদ মিনার না হলেও একটি মনুমেন্ট তৈরি করে দেবেন। তিনি তার প্রতিশ্রুতিও রেখেছিলেন। ২০১৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করার পর তিনি ফান্ডও অনুমোদন করেছিলেন। কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভক্তির কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারপরেও আমরা প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে পার্কে এটা করা যাবে না। এটা করতে হবে প্রাইভেট সম্পত্তিতে। আমরা এখন চেষ্টা করছি কুইন্স কলেজ বা ইয়র্ক কলেজে করা যায় কি না। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আশা করছি আমরা এবার সফল হবো।

বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া এবং সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী বলেন, স্থায়ী মিনার আমরাও চাই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমাদের মধ্যে অনৈক্য। জেবিবিএ’র দাবি এক রকম, জ্যামাইকাবাসীর দাবি আরেক রকম। এবার একুশে ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠান শেষে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা সবার সঙ্গে মতবিনিময় করবো। মতবিনিময় করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা এগিয়ে যাবো। তিনি বলেন, নিউইয়র্কেই সবচেয়ে বেশি বাঙালির বসবাস কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে অনৈক্যের কারণে আমরা স্থায়ী শহিদ মিনার করতে পারছি না।

শেয়ার করুন