২০ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৪:২১:০৪ পূর্বাহ্ন


টেক্সাস স্টেট পার্লামেন্টে অভিনব বিল
স্থানীয় বাসিন্দারা অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০৩-২০২৩
স্থানীয় বাসিন্দারা অবৈধ অভিবাসী ঠেকাতে গ্রেফতারের ক্ষমতা পাবে


মেক্সিকো সীমান্ত অতিক্রম করে বেআইনিভাবে টেক্সাসে অভিভাসীদের আগমন ঠেকাতে টেক্সাস স্টেট পার্লামেন্টে ১০ মার্চ একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে সীমান্ত অতিক্রমকারিদের ধরপাকড়ের জন্য। এই বিলে বলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা পাবেন ধরপাকড়ের ক্ষমতা।

আমেরিকার সীমান্ত সুরক্ষায় প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে সীমাহীন উদাসীনতার অভিযোগ করে আসছেন রিপাবলিকানরা। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী টেক্সাস, অ্যারিজোনাসহ রিপাবলিকান অধ্যুষিত বেশ কটি স্টেটে গত দেড় বছরে লাখ লাখ অভিভাসী ঢুকে পড়েছে বেআইনিভাবে। এত মানুষের ভার সইতে না পেরে এসব স্টেট প্রশাসন ঐসব বিদেশিদের বাসে উঠিয়ে নিউইয়র্ক, শিকাগো, বস্টন, ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠাচ্ছেন। অর্থাৎ ডেমোক্রেট অধ্যুষিত সিটি ও স্টেটসমূহে চাপ প্রয়োগের লক্ষ্যে এমন কৌশল অবলম্বন করা হয়। সেই সঙ্গে টেক্সাস স্টেট হাউজে (হাউজ বিল ২০) উত্থাপন করেছেন রিপাবলিকানরা। টেক্সাস স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ ম্যাট শেফার উত্থাপিত বিলটি পাশ হলে ‘টেক্সাস বর্ডার প্রটেকশন ইউনিট’ গঠিত হবে এলাকার সিটিজেনদের সমন্বয়ে-যারা  অবৈধ অভিবাসীদেরকে গ্রেফতার, আটক করতে পারবে। তবে এমন কোন আচরণ করা যাবে না যাতে গ্রেফতারকালে কোন অবৈধ অভিবাসীর প্রাণহানী ঘটে। এই বিধির মাধ্যমে টেক্সাস স্টেট গর্ভুরকে বিশেষ ক্ষমতা দেয়া হবে সীমান্ত সুরক্ষায় কঠোর পন্থা অবলম্বনের এবং এলাকাবাসীর সমন্বয়ে গঠিত ইউনিটের প্রতিটি সদস্যকে সম্মানী ভাতা প্রদানের। 

এদিকে সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী গত বুধবার ৮ মার্চ টেক্সাস স্টেটের এল পাসোতে অবস্থিত ‘রায়ো গ্রান্দে’ নদীর তীর দিয়ে কাটাকারের বেড়া দিয়েছে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা। মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়া স্টেটের সিওদাদ জুয়ারেজ এলাকার সঙ্গেই এই নদী অবস্থিত হওয়ায় প্রতিদিনই হাজার হাজার বিদেশি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাঁতরে যুক্তরাষ্ট্র সীমানায় এসেই রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। গত দুই দশকে এই নদী পাড়ি দেয়ার সময় স্রোতে ভেসে গেছে কয়েকশত বিদেশি। তবুও বেআইনিভাবে প্রবেশের প্রবণতা কমেনি বলে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন। 

এই বিল আইনে পরিণত হলে ঐ ইউনিটের চিফ, ডেপুটি চিফ, সহকারী চিফ থাকবেন সিটিজেনদের মধ্য থেকেই। আর দেখামাত্র গ্রেফতার অভিযান শুরুর আগে ইউনিটের সব সদস্যকে স্বল্প সময়ের একটি প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং স্টেট গভর্নর কর্তৃক গ্রেফতারের ক্ষমতা প্রদান করা হবে। একইধরনের আরেকটি বিল (হাউজ বিল ৭) শুক্রবারই উত্থাপন করেছেন স্টেট রিপ্রেজেনটেটিভ রায়ান গুইলেন। এটি পাশ হলে গঠিত হবে ‘বর্ডার সেফটি ওভারসাইট কমিটি।’ এদের দায়িত্ব হবে ‘বর্ডার প্রটেকশন ইউনিট’র তদারকি করা। অর্থাৎ রিপাবলিকানরা সীমান্ত সুরক্ষা নিয়ে কোনো ফাঁকফোকর রাখতে চাচ্ছেন না।

সীমান্তকে সত্যিকার অর্থে নিরাপদ করার অর্থ হবে সামনের নির্বাচনে বাইডেনের ভোট ব্যাংকে ধস নামা। এটাই প্রধান লক্ষ্য রিপাবলিকানদের। এই বিল দুটির কঠোর সমালোচনা করে টেক্সাস ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান গিলবার্তো হিনোজোসা বলেন, স্টেট পুলিশের দায়িত্বটি সাধারণ নাগরিকের হাতে অর্পণের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা বুমেরাং হতে বাধ্য। অভিবাসীদের গড়া এই আমেরিকার মৌলিক নীতি ও মূল্যবোধের পরিপন্থী আচরণে লিপ্ত হচ্ছেন রিপাবলিকানরা। নাগরিকের মৌলিক অধিকারকে বিপন্ন করে তোলা হচ্ছে-যা কারো জন্যেই শুভ কিছু বয়ে আনবে না। এ ধরনের স্বৈরাচারী আচরণে গোটা সমাজে ভীতির সঞ্চার হবে। কারণ, স্থানীয় অধিবাসীরা গ্রেফতার ও আটকের ক্ষমতা পেলে যাকে খুশি তাকে হয়রানি, নাজেহাল, হেনস্থা করতে পারবে। অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত হবার আগেই একজন অসহায় মানুষকে বিব্রতকর এবং অসহনীয় পরিস্থিতির ভিকটিম হতে হবে।

টেক্সাস সিভিল রাইটস প্রজেক্ট’র প্রেসিডেন্ট রচেলা গারজা রিপাবলিকান শেফারের বিলের নিন্দা ও সমালোচনা করে বলেন, ফেডারেল আইনকে লংঘনের মত বিলই শুধু নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানকেও চ্যালেঞ্জ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন