২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ৬:১৪:৪৫ পূর্বাহ্ন


বিজয়ের অনুষ্ঠানে ড. আবু জাফর মাহমুদ
৫২ বছরে জনগণের সব ভোগান্তির অবসান হওয়া দরকার
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২৩
৫২ বছরে জনগণের সব ভোগান্তির অবসান হওয়া দরকার বিজয়ের অনুষ্ঠানে ড. আবু জাফর মাহমুদের সাথে নতুন প্রজন্ম


বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাউন্টেন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার, গ্লোবাল পিস অ্যামবাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ মহান বিজয়ের মাসে স্বাধীন বাংলাদেশের নিরাপত্তা ও অর্থ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কৃষ্টি সংস্কৃতি, যোগাযোগ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যবস্থার দিকে মনোযোগ দেয়ার জন্য সকল রাজনৈতিক ধারণার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা বাংলাদেশ পেয়েছি। যা কিছু পাইনি, তার জন্যও দায়িত্ব আমাদের। বুঝে না নেয়ার জন্য যে ব্যর্থতা তার জন্য হাহাকার করে কোনো লাভ নেই। সেই নিরিখে আমাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে। এর জন্য প্রথমেই পৃথিবীর শক্তিমান সব রাষ্ট্রশক্তি, সেই শক্তিগুলোর সঙ্গে লড়াইয়ে যাবো কি যাবো না, তা বিবেচনা করার সামর্থ থাকতে হবে। বাংলাদেশ সেই বিতর্কে যাবে, যে বিতর্কে আমরা লাভবান হব। এটিই নেতৃত্ব। তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধার কোনো অবসর নেই। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের মনোযোগী হতে হবে। কারো প্রতি দয়া দেখানো কারো প্রতি আপস করার কোনো সুযোগ নেই।

স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ ২৪ ডিসেম্বর রোববার ১৪৭-১৪ হিলসাইড, জ্যামাইকায় বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ার কার্যালয়ের কাচারিঘর-এ জয় বাংলাদেশ টেলিভিশন স্টুডিওতে সবুজ সভা’ আয়োজিত বিজয় দিবস উদযাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন। সবুজ সভা উদ্যোক্তা আদিত্য শাহীন ও লাইলা খালেদার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে এজরা জ্যাক প্রিকে সেন্টারের ডুয়েল ল্যাংগুয়েজ বিভাগের শিশু-শিক্ষার্থী ও তাদের বাবা মায়েরা অংশ নেন। অনুষ্ঠানে ড. রুমা চৌধুরীর নেতৃত্বে রবীন্দ্র একাডেমি অফ ইউএসএ’র শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন।

স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ শিশুদের নিয়ে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপনের ওই আয়োজন প্রসঙ্গে বলেন, দেশপ্রেমের সঙ্গে পরিবারিক মূল্যবোধ মিলিয়ে ফেলার এ এক নজির। এখানে অনেক বড় অবদান মায়েদের। তিনি বলেন, পারিবারিক ভালোবাসা ও মূল্যবোধের চিন্তা থেকেই সতের বছর আগে আমি এই নিউইয়র্কে হোম কেয়ার চালু করেছি।

আবু জাফর মাহমুদ বলেন, যত বাংলাদেশি, প্রত্যেকের মনের মধ্যে আনন্দ আছে, বেদানাও আছে। বাঙালি আমাদের সীমান্তের ওপারেও আছে। এপারেও আছে। আমরাও বাঙালি। বাংলাদেশ আমরা যুদ্ধ করে অর্জন করেছি। বাংলাদেশ যখন আমরা সৃষ্টি করেছি এই সৃষ্টিটা ভারত পাকিস্তানের মতো আপস আলোচনায় ব্রিটিশদের কাছ থেকে পাওয়া কোনো ভিক্ষা নয়। এটি আমাদের অর্জন। জীবন বাজি রেখে। সারা পৃথিবীর অন্যতম সেরা দুর্ধর্ষ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আমরা অর্জন করেছি বাংলাদেশ।

রাষ্ট্র স্বাধীন হওয়ার পর আমরা যোদ্ধারা রাষ্ট্র শাসন করিনি। রাষ্ট্র শাসনের দায়িত্ব হলো রাজনীতিবিদদের। এই রাজনীতিবিদদের মধ্যে আমাদের সর্বোচ্চ সম্মানীত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তিনি যখন পাকিস্তানী কারাগার থেকে বাংলাদেশে এলেন তার কাছে দায়িত্ব বুঝে দেয়া হলো রাষ্ট্র গঠনের। তখন থেকে তিনি যতদিন জীবিত ছিলেন কিছু ভালো করেছেন, কিছু অভিজ্ঞতার প্রশ্নে তিনি শূন্য ছিলেন। যেমন রাষ্ট্র পরিচালনার অভিজ্ঞতা তার ছিল না। তার সঙ্গে যারা ছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, কাপ্টেন মনসুর আলী, কামরুজ্জামান ও সৈয়দ নজরুল ইসলাম। তারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান, আমাদের বড় ভাই। জাতির মুরব্বি। কিন্তু তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তারা নিবেদিত প্রাণ সংগঠক। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ১৯৭২ থেকে এ পর্যন্ত জনগণের যত ভোগান্তি আছে, সেগুলোর পুনমূল্যায়ন হওয়া দরকার।

অনুষ্ঠানে ছিল শিশু চিত্রাঙ্কনের আয়োজন। প্রিকে শ্রেণীর শিশুরা মহান বিজয় দিবসের ছবি আঁকে। তারা একযোগে প্রধান অতিথির হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেয়। প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জাফর মাহমুদ উপস্থিত সব শিশুর হাতে জাতীয় পকাতা ও জাতীয় পতাকা খচিত ব্যাচ তুলে দেন।

শেয়ার করুন