১২ এপ্রিল ২০১২, বুধবার, ০৬:১০:৫১ অপরাহ্ন


মানবিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৫-২০২৩
মানবিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি


 বৈশ্বিক মানবিক সংকট মোকাবিলা ব্যবস্থার ওপর প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে অভিযোগ করা হয়েছে যে, বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার পুরো ব্যবস্থাপনাতেই কিছু দুর্বলতা প্রকট। এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী সংঘাত, বিপর্যয় এবং স্থানচ্যুতি বেড়েছে, মহামারি দ্বারা ক্ষয়ক্ষতিও বেড়েছে। অন্যদিকে বিশ্বে মানবিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।   

গত ২০ মে শনিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে এতথ্য তুলে ধরা হয়। এতে বক্তারা বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিপরীতে পাওয়া অপর্যাপ্ত অর্থ সহায়তায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আর এজন্য ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের বিপরীতে অপ্রতুল সহায়তায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তারা মানবিক সহায়তার স্থানীয়করণের সুপারিশ করা হয়। 

স্টেট অব দ্য হিউম্যানিটারিয়ান সিস্টেম রিপোর্ট ২০২২: 

বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট শীর্ষক এই সেমিনারটি আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন এবং সহযোগিতায় ছিল লন্ডনভিত্তিক সংস্থা  এএনএলএপি। এটি সঞ্চালনা করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের রেজাউল করিম চৌধুরী এবং এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনভিত্তিক সংগঠন এএনএলএপির প্রতিনিধি জেনিফার ডোহার্টি। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারমোহাম্মদ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস, ব্রিটিশ হাই কমিশনের কাউন্সিলর সাইমন লিভার এবং আইওএম বাংলাদেশে ডিপুটি চিফ অব মিশন নুসরাত গাজ্জালি। অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ বক্তা হিসেবে আলোচনা করেন ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টও অ্যাডভোকেসি ফর সোশ্যাল চেঞ্জ কেএএম মোরশেদ, দুর্যোগ বিশেষজ্ঞ গওহর নঈম ওয়ারা, টিয়ারফান্ডের আঞ্চলিক পরিচালক সঞ্জীব বানজা, স্টার্ট ফান্ড বাংলাদেশের সাজিদ রহমান এবং এ আইডিএম-ইন্ডিয়ার মিহির ভাট। এতে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক এনজিও এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তৃতা রাখেন। 

জেনিফার ডোহার্টি বলেন, বিশ্বব্যাপী সংঘাত, বিপর্যয় এবং স্থানচ্যুতি বেড়েছে, মহামারি দ্বারা ক্ষয়ক্ষতিও বেড়েছে। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি ২০২১ সালে দ্বিগুণ হয়ে ৮৯ দশমিক ৩ মিলিয়ন হয়েছে, ১৬১ মিলিয়ন মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মুখোমুখি। ২০২১ সালে মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫৫ মিলিয়ন ডলার এবং ২০২৩ সালে তা ৩৩৯ মিলিয়নে চলে যেতে পারে। ২০২১ সালে যে অর্থ সহায়তা পাওয়া যায়, তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। অন্যদিকে মানবিক কর্মীদের ওপর আক্রমণ ৬৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মানবিক সহায়তার পুরো ব্যবস্থাপনাতেই কিছু দুর্বলতা প্রকট।   

মো. মিজানুর রহমান (ডিজি-ডিডিএম) ঘূর্ণিঝড়-সম্পর্কিত মৃত্যুরসংখ্যায় উল্লেখযোগ্য হ্রাসের বিষয়টি তুলে ধরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি ভূমিকম্প ও ভূমিধস মোকাবিলায় সক্ষমতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।মোহাম্মদ মিজানুর রহমান (আরআরআরসি) রোহিঙ্গা এবং  স্থানীয় জনগোষ্ঠীর  সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব তুলে ধরেন। গোয়েন লুইস রোহিঙ্গা কর্মসূচিতে সীমিত অর্থায়নের প্রভাব মোকাবিলায় কম খরচে যথাসম্ভব উত্তম সেবা প্রদানের ওপর জোর দেন। সাইমন লিভার সঠিক সময়ে সঠিক মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানো নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেন। নুসরাত গাজ্জালী কার্যকর মানবিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সুসমন্বয়ের কথা বলেন। সঞ্জীব ভাঞ্জা বিভিন্ন সেক্টরের সমন্বয়ের প্রয়োজনকে অর্থ সহায়তার কার্যকারিতা নিশ্চিত করার অন্যতম উপায় হিসেবে অভিহিত করেন। কে এ এম মোর্শেদ মানবিক কর্মসূচি প্রণয়নে বিশ্বকব্যাপ্যী স্বীকৃত সূচক প্রণয়নের কথা বলেন। 

অন্যদের মধ্যে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন এফএওর রাফায়েল স্টার্লিং, এনআরসির ওয়েন্ডি ম্যাকক্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটিৎ শাবিরা নূপুর, এমএপি বাংলাদেশ-বরিশালের শুভঙ্কর চক্রবর্তী, রংপুর প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশনের আকবর হোসেন, এনজিও প্ল্যাটফর্মের আহসান উদ্দিন, জিবিএসএসের মাসুদা ফারুক জিবিএসএস থেকে, হেল্প-কক্সবাজারের আবুল কাশেম এবং পালস বাংলাদেশের মো. সাইফুল ইসলাম কলিম।


শেয়ার করুন