২৯ মার্চ ২০১২, শুক্রবার, ০২:০৩:৪১ অপরাহ্ন


নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মানুষের ‘কষ্ট আরো বাড়াবে’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৬-২০২৩
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট মানুষের ‘কষ্ট আরো বাড়াবে’


নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের ‘কষ্ট আরো বাড়াবে’ বলে দাবি করেছে বিএনপি। বাজেট নিয়ে তাতক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন,  ‘‘ এই বাজেট হচ্ছে প্যাট্রন ক্লাইন্ট রিলেশনশীপ অর্থাত পৃষ্ঠপোষকতার অর্থনীতি, রেনসিংকি অর্থাত ভাড়া দিতে হবে, চাঁদা দিতে হবে, কমিশন দিতে হবেৃ এর মাধ্যমে অর্থনীতি চলতে হবে। অ্যাসট্রাকটিভ ইন্সটিটিউশন মানে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাটের জন্য সংগঠিতভাবে তৈরি করে দিয়েছে, এরাও লুটপাটের অংশীদার হয়ে গেছে। এর ফলে বাংলাদেশের জনগনের কষ্ট বাড়ছে, এই বাজেটে আরো বাড়বে।”

 

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন, যা ‘জনবান্ধব ও উন্নয়নমুখী’ বলে অভিহিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

 

বাজেটের ঋণ নির্ভরতা প্রসঙ্গ টেনে আমির খসরু বলেন, ‘‘ঋণ তারা(সরকার) দেশের থেকে, দেশের বাইরে থেকে নিচ্ছে। এই ৭ বছরে ৫২% বাইরে বেেেড়্ছ। আপনি যদি ঋণ চিত্র দেখেন আজকেৃ তারা দেশের ভেতরে ব্যাংকগুলো থেকে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে, দেশের বাইরে থেকে যে ঋণ নিচ্ছে এই ঋণের দায় তো আগামী প্রজন্মকে দিতে হবে। শুধু যে মানুষ এই মুহুর্তে যে কষ্টে আছে তা তো না। তারা ঋণের মাধ্যমে যে লুটপাটের অর্থনীতি সৃষ্টি করেছে, ঋণের মাধ্যমে এই লুটপাটের অর্থনীতির ভিকটিম বাংলাদেশের মানুষ। যে বৈদেশিক ঋণ যেটা ৮/১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ছিলো সেটা আজকে এক লক্ষ কোটি টাকায় চলে গেছে।”

 

প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য কিনা প্রশ্ন করা হলে সাবেক বানিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘‘ এই বাজেট সরকার দিচ্ছে নাম আইএমএফ দিচ্ছে সেটাও তো দেখার বিষয়। আইএমএফ যে গাইড লাইনগুলো দিচ্ছে তারা তো সুনিশ্চিতভাবে বলেছে, কি কি করতে হবে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি কি কারণে আজকে নিম্ন পর্যায় এসে নেমেছে। এসব কারেক্ট করার জন্য আইএমএফের যে শর্ত, এই শর্ত মেনে চলছে মূলত. আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী তাদেরকে বাজেট দিতে হবে। আবার তার বাইরে যদি তারা অব্যাহতভাবে লুটপাটের অর্থনীতি, পৃষ্ঠপোষকতার জগতের অর্থনীতি যদি চলতে থাকে সেটা অন্যকথা। তারা(সরকার) তো বিপদে আছে আইএমএফের শর্ত না মানলে এদিতে বাজেট সাপোর্ট থাকে না, আইএমএফের শর্ত মানলে তাদের লুটপাটের পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি বাধাগ্রস্থ হয়। এই অবস্থায় সরকার অর্থনীতিকে যে জায়গায় নিয়ে গেছে সেখান থেকে বের হতে হলে এটার রাজনীতি সমাধান হতে হবে এবং রাজনৈতিক সমাধান হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদ একটি সরকার যারা জনগনের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে ও জবাবদিহি থাকবে।”

 

সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মতো জনগুরুত্বপূর্ণ খাতে প্রস্তাবিত বরাদ্দ যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন সাবেক বানিজ্য মন্ত্রী আমির খসরু।

 

তিনি বলেন, ‘‘ বাজেট কি? বাজেট হচ্ছে জনগনের চিন্তার প্রতিফলন, বাজেট কি? বাজেট হচ্ছে রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন। আজকে যেখানে অবৈধ দখলদার সরকার বসে আছে তাদের তো রাজনীতির চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না, তাদের নিজেদের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে, তাদের তো সাধারণ মানুষের চিন্তার প্রতিফলন ঘটবে না।”

 

আমির খসরু বলেন, ‘‘ বাজেট তো বড় বড় অংক দিচ্ছে আর বাংলাদেশের মানুষকে বড় বড় অবকাঠামোর কথা বলছে। বড় বড় অবকাঠামো মধ্যে বড় বড় চুরি, বড় বড় ডাকাতি ছাড়া কিছু দেখছি না, বড় বড় অবকাঠামোর মধ্যে বড় বড় অংকের টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। সেজন্য তো দেশে ডলার সংকট দেখা দিয়েছে, সেজন্য আজকে ব্যাংকে টাকা নেই, সেজন্য তো বাংলাদেশের পূঁজিবাজারের বেহাল অবস্থা। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতিতে গত ৩০ বছরে যে স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছিলাম সেটা এই সরকার ধবংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়েছে। একটা দলীয় চিন্তার ভিত্তিতে পৃষ্ঠপোষকতার লুটপাটের অর্থনীতির মডেল তৈরি করে এটা করা হয়েছে।”

 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ আপনি বাজেটের আকারের কথা বলছেন। তারা ঋণ নিচ্ছে। এই ঋণ নিয়ে তারা ঘি খাচ্ছে। আপনি ঋণ নিয়ে যদি ঘি খানৃ এই ঋণ তো আপনি পরিশোধ করতে পারবেন না। এই ঘিয়ের টাকা দেশের জনগনকে পরিশোধ করতে হবে।”

 

এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথ তুলে ধরে আমির খসরু বলেন, ‘‘ জনগনের সরকার ছাড়া আর কোনো পথ নেই।”

 


শেয়ার করুন