১৮ এপ্রিল ২০১২, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪২:১৬ অপরাহ্ন


শাহানা হানিফ বললেন
ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশী এবং মুসলিম প্রতিনিধি আমি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-০৪-২০২২
ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশী এবং মুসলিম প্রতিনিধি আমি বক্তব্য রাখছেন শাহানা হানিফ


“আমি অনেক খুশি। সবাইকে দেখে অনেক ভালো লাগছে। আজকের আয়োজন আপনাদের জন্য। আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা পরিশ্রমের কারণে আজ আমি এতোদূর এগিয়ে আসছি। নিউ ইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশী এবং মুসলিম নারী প্রতিনিধি আমি। এ সফলতার কারণ আমাদের সুন্দর প্রগতিশীল কমিউনিটি।” শাহানা হানিফ তার বক্তব্য শুরু করলেন এভাবেই। বাংলায়। এদেশে জন্ম, ব্রুকলিনে। বেড়েও উঠেছেন এখানে। সময়ের ব্যবধানে ব্রুকলিনের ডিস্ট্রিক্ট থার্টি নাইন থেকে তিনি সিটি কাউন্সিলে নির্বাচিত প্রতিনিধি। আইনপ্রণেতা, কাউন্সিল মেম্বার। গত নভেম্বরের সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে তিনি ইতিহাস গড়েছেন- ভোটের হারে এবং বাংলাদেশী মুসলিম নারী হিসেবে। ২৩ এপ্রিল শনিবার ব্রুকলিনের কেনসিংটনে শাহানা হানিফের সেই বিজয়ের উদযাপন হলো তার অভিষেকের মধ্য দিয়ে। 

বিকেল চারটা থেকে শুরু এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন রাজনীতির আলোচিত ব্যক্তিত্ব, সিনেটে মেজরিটি লিডার চাক শুমার। শাহানাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা ব্র্যাড লেন্ডারও ছিলেন অনুষ্ঠানে। তাও আবার অনুষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে। ডিস্ট্রিক্ট থার্টি নাইনে সফলভাবে কাউন্সিল মেম্বারের দায়িত্ব পালন করে ব্র্যাড গত নভম্বরে নির্বাচিত হন সিটি কম্পট্রলার পদে। অনুষ্ঠানে এসেছিলেন নিউ ইয়র্ক সিটির পাবলিক এডভোকেট জুমানে উইলিয়ামস। ছিলেন কয়েকজন কাউন্সিল মেম্বার জুলি মেনিন, মার্সিডিজ নারসিসি, লিংকন রেসলার, সেলভিনা ব্রুকস পাওয়ারস, গেইল ব্রিউয়ার, ক্রিস্টাল হাডসন, এরিক বোচার, চি ওসে।

খুব পরিকল্পিত এ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ব্র্যাড লেন্ডার ও চাক শুমার বক্তব্য রাখেন। এছাড়া কয়েকটি সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা বক্তব্য দেন। শাহানা হানিফের বাবা মোহাম্মদ হানিফ, মা রেহানা হানিফ, দুই বোন সাবিয়া হানিফ কুমকুম এবং সাজিয়া হানিফও বক্তব্য রাখেন এ অনুষ্ঠানে।

শাহানা তার দুই ভাষার বক্তব্যে সবার প্রতি নিজের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি আগামী দিনে এলাকায় জনগণের জন্য কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি জানান, যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি তার রাজনৈতিক অগ্রগতি সাধন করেন, সে প্রতিশ্রুতিকে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি।

কেনসিংটনসহ কয়েকটি প্রতিবেশ নিয়ে ডিস্ট্রিক্ট থার্টি নাইন গঠিত হলেও শাহানা হানিফ তার অভিষেক অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নেন কেনসিংটনের পাবলিক স্কুল টু থার্টিকে। এ এলাকায় জন্ম শাহানার। এবং এই এলাকায় বাংলাদেশী অভিবাসীদের সংখ্যা বেশি। কিন্তু, সেই হিসেবে শাহানার অভিষেক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি ছিলো হাতে গোণা। আর, তাদের মধ্য থেকে কেউই এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পাননি। বাংলাদেশীদের যে কোন অনুষ্ঠানে যেখানে বক্তব্য দেয়ার জন্য রীতিমতো লাইন পড়ে যায়, সেখানে এই অভিষেকে কাউকে বক্তব্য দিতে সুযোগ না দেয়ার বিষয়টি বেশ আলোচনায়। অবশ্য, অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া নিউ ইয়র্ক সিটির অনেক জনপ্রতিনিধিকেও মঞ্চ ডাকা হয়নি। কথা বলতে সুযোগ দেয়া হয়নি। এ তালিকায় আছেন পাবলিক এডভোকেট জুমানে উইলিয়ামসের মতো বাঘা নেতাও।

শাহানার অভিষেক আয়োজন নজর কেড়েছে সবার। বিশেষ করে মঞ্চ পরিকল্পনা। গাঁদা ফুলে সাজানো হয়েছে মঞ্চ। বিশাল মঞ্চে তিনটি চেয়ারের একটিতে ছিলেন শাহানা হানিফ। বাকি দুটি চেয়ারের একটি প্রায় সময় খালি থেকেছে।

শেয়ার করুন