২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০২:৪৬:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রম স্থগিতাদেশকে স্বাগত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১২-০৭-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রম স্থগিতাদেশকে স্বাগত


যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যক্রমকে স্থগিত ঘোষণাকে এবং এই সংগঠনের সভাপতি পরিচয়দানকারী রাব্বি আলমের বহিষ্কারকে স্বাগত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড. নুরন্নবী এবং সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার রানা হাসান মামুদ। তার এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. আ স ম আরেফিক সিদ্দিকীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ২০২০-এর ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ থেকে গঠিত ‘যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ শাখা’ নামের সংগঠনটির সব কার্যক্রম স্থগিত এবং এই সংগঠনের সভাপতি হিসেবে পরিচয়দানকারী জনৈক রাব্বি আলমের বহিষ্কার আদেশ দিয়ে যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি গত ৬ জুলাই ২০২৩ এ প্রকাশ করেছেন তাকে আমরা স্বাগত জানাই। বঙ্গবন্ধু  কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গড়া যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে জন্মলগ্ন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ স্বাধীন সত্তা হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ কোনো সংগঠনের শাখা নয়। বঙ্গবন্ধু পরিষদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ শুরু থেকেই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নে গড়া বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করা এবং নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের গৌরবগাথা তুলে ধরার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। ভবিষ্যতের দিনগুলোতেও বঙ্গবন্ধু  কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত বাংলাদেশের যে অগ্রযাত্রা তাকে সমুজ্জ্বল করার প্রচেষ্টায় আমরা যৌথভাবে কাজ করবো সেই আশা করছি। 

তারা বলেন, প্রয়াত ড. এস এ মালেকের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সঙ্গে আমরা যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সব সদস্য যেভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেছি, আপনার নেতৃত্বে সেই সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় হবে সেই আশা করছি। 

যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস 

বঙ্গবন্ধু  কন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮৯ এর মে মাসে নিউইয়র্কে নিজ হাতে ড. এনায়েত রহিম এবং ড. নুরুন নবীকে যৌথ আহ্বায়ক করে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ গঠন করেন। সেই থেকে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ স্বাধীনভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের আইনগত দিক বিবেচনা করে শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদকে কোনো সংগঠনের সহযোগী অথবা কোনো কেন্দ্রীয় সগঠনের অধীনস্ত রাখা হয়নি। ১৯৯৬ সালে ড. নুরুন নবীকে সভাপতি করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। গত সাতাশ বছরে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ নিয়মিত সম্মেলন করে আসছে এবং ২০২২ এর  ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সম্মেলনে ড. নুরুন নবীকে সভাপতি এবং ইঞ্জিনিয়ার রানা হাসান মাহমুদকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি কার্যক্রম শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের অধীনে দশটি রাজ্য শাখা সাফল্যের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। 

এ যাবৎ বঙ্গবন্ধু পরিষদ দুটি ‘বঙ্গবন্ধু  সম্মেলন’, এগারোটি ‘বঙ্গবন্ধু  স্মারক বক্তৃতা’, বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা শিল্পীদের সমন্বয়ে ‘ফিরে এসো বঙ্গবন্ধু  ’ সংগীত ভিডিওচিত্র এবং ৭১ জন বিশিষ্টজনের লেখা সংবলিত ‘বঙ্গবন্ধু  থেকে বিশ্ববন্ধু ’ বই প্রকাশ করেছে। এছাড়া বঙ্গবন্ধু পরিষদের ক্যালিফোর্নিয়া শাখা বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় এ ‘বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমান রিসার্চ অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তন করেছে। একই সংগঠন লস অ্যাঞ্জেলেস ইউনিফাইড স্কুল ডিস্ট্রিক্টে (৬ লাখ ৫০ হাজার শিক্ষার্থী) ২১ ফেব্রুয়ারিকে ক্যালেন্ডার ডে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। 

২০২০এর ফেব্রুয়ারিতে হঠাৎ করেই মিশিগানের জাতীয় পার্টির প্রধান জনৈক রাব্বি আলমকে বাংলাদেশ থেকে ‘যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ শাখার’ প্রধান হিসেবে নিযুক্তকরা হয়। এই সময় ১৯৮৯-তে প্রতিষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার জন্য বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে সামাজিকভাবে আওয়ামী লীগের সম্মান ক্ষুণ্ণকারী কিছু ব্যাক্তি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পদে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নিয়োগ প্রাপ্তির পরেই এই ব্যক্তি এবং তার সংগঠনের সদস্যগণ বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী এবং একুশে পদক প্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন নবীকে অকথ্য ভাষায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আক্রমণ করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের পক্ষ থেকে ড. নুরুন নবীর নির্দেশে প্রতিআক্রমণ থেকে বিরত থাকা হয়। এই ব্যক্তির ফেসবুকে দেখা যায় যে সে জননেত্রী শেখ হাসিনা, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অনেকবার অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছে। ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে কটাক্ষ করে চরম অবমাননাকর মন্তব্য করেছে এই ব্যক্তি। এসব মন্তব্য ড. এস এ মালেকের গোচরে আসার পরে এবং সংগঠনের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পাল্টাপাল্টি কমিটি গঠন করায়, এই কমিটিকে ড. এস এ মালেক ২৫ মে ২০২১-এ স্থগিত ঘোষণা করে। 

গত তিন দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ দলমত নির্বিশেষে যুক্তরাষ্ট্রে সমগ্র প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে এর কার্যক্রম এবং সদস্যদের বঙ্গবন্ধু র আদর্শের প্রতি অনুরাগ এবং দেশপ্রেমের জন্য বিশেষ সম্মানের স্থান অধিকার করে আছে।  সম্প্রতি রাব্বি আলম নামে এই ব্যাক্তি বঙ্গবন্ধু পরিষদ এবং বঙ্গবন্ধু  কমিশনের নাম দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন, সেক্রেটারি অব স্টেট ব্লিঙ্কেন এবং ছয়জন কংগ্রেসম্যানদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বলে দাবি করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি জামাত চক্র দ্বারা এই খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ব্যাপক অপপ্রচার চলছে। এছাড়া এধরনের মামলা আমাদের বাংলাদেশের সরকারের উসকানিতে হয়েছে বলেও প্রচার করা হচ্ছে। আমরা প্রবাসীরা যখন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক মহলে যোগাযোগ রক্ষা করে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক উন্নয়নের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি তখন রাব্বি আলমের এই ধরনের উদ্ভট কার্যকলাপ দেশ, সরকার এবং দলের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, দুঃখজনকভাবে বাংলাদেশ থেকে গঠিত রাব্বি আলমের নেতৃত্বে সংগঠনটি বঙ্গবন্ধু  এবং বাংলাদেশ বিরোধী কার্যকলাপের জন্য সমাজে বিভেদ সৃষ্টি করছে, বঙ্গবন্ধু র আদর্শ ও অবদানকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মর্যাদার সঙ্গে প্রতিষ্ঠার যে প্রচেষ্টা তাকেও হেয় করছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাব্বি আলমকে বহিষ্কার এবং তার নেতৃত্বে গড়া তথাকথিত ‘যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ শাখার’ সব কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু পরিষদ ৬ জুলাই, ২০২৩-এ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ ড. নুরুন নবী এবং প্রকৌশলী রানা হাসান মাহমুদের নেতৃত্বে ছয়জন কংগ্রেসম্যানদের দেওয়া ভুল তথ্যে ভরা যে চিঠি তারা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে দিয়েছেন, তার জবাব দিয়েছে সঠিক তথ্য দিয়ে। 

এছাড়াও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যে অপপ্রচার বাংলাদেশ বিরোধী একটি মহল যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারক মহলে ছড়াচ্ছে, তার  বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে এবং বিএনপি জামাত আমলের দুঃশাসন ও নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ইতিহাস তুলে ধরে একটি চিঠি প্রেসিডেন্ট বাইডেন, সেক্রেটারি অব স্টেট ব্লিঙ্কেন ও আন্ডার সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লুকে পাঠানো হয়েছে। ১৯৮৯ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার হাতে গড়া যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদ বাংলাদেশের সপক্ষে সব কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে।

শেয়ার করুন