০১ মে ২০১২, বুধবার, ০২:০১:৫৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


দেশকে ঋতুপর্ণা
বাংলাদেশ তো আমারই দেশ
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৮-২০২৩
বাংলাদেশ তো আমারই দেশ ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত


ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। বাংলাদেশেও তিনি ওপার বাংলার মতই পরিচিত। মান্না, ফেরদৌসসহ একাধিক নায়কের সাথে অভিনয় করেছেন। সম্প্রতি চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ’স্পর্শ’ নামের একটি যৌথ প্রযোজনার ছবিতে। এখানে তার বিপরীতে রয়েছেন বাংলাদেশের নিরব। নতুন ছবি নিয়ে ঢাকায় বসে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সাথে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির। 

প্রশ্ন: সিনেমার কারনেই আপনি বাংলাদেশের পরিচিত। কিন্তু দীর্ঘদিনের একটি গ্যাপ পড়ে গিয়েছিল কারণ কি?

ঋতুপর্ণা: গ্যাপ হওয়ার কারণটা খুব সহজ। যে ধরনের কাজে আমাকে মানাবে সে ধরনের কাজের প্রস্তাব খুব কম আসছিল। আর একটা পরিচিত পাওয়ার পর শিল্পীদের অনেক দায়িত্বশীল আচরণ করতে হয়। এ কারণে অনেক বেছে চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। সে কারণেই আসলে গ্যপটা হয়ে গেছে।

প্রশ্ন: ‘স্পর্শ’ সিনেমার গল্পটা কি আপনার মনের মতো?

ঋতুপর্ণা: সিনেমাটি খুবই ইন্টারেস্টিং সাবজেক্ট নিয়ে তৈরি হচ্ছে। এ ধরনের সিনেমা আমি করতে চাই। বাংলা সিনেমা এখন আগের চেয়ে অনেক পরিণত হয়েছে। অনেক পরিণত সাবজেক্ট আমরা পাচ্ছি। মনে হয়েছিল, সিনেমাটি করতে পারলে আমার খুব ভালো লাগবে। এর আগে কলকাতায় ১২ দিনের শুটিং করেছি। বাংলাদেশ অংশের শুটিংয়ের জন্য অনেক দিন ধরে আমাদের কথাবার্তা চলছিল। অবশেষে আমি আসতে পারলাম। আমার আর নিরবের খুব ইন্টারেস্টিং চরিত্র এ ছবিতে। ডিরেক্টর খুব সুন্দর স্ক্রিপ্ট লিখেছেন আমাদের নিয়ে। নিরব তো হ্যান্ডসাম হিরো। খুব ভালো করেছে সে। আমাদের কেমিস্ট্রিটা দর্শকের ভালো লাগবে। আমি জানি, বাংলাদেশের দর্শক আমাকে খুব ভালোবাসেন। আমার নতুন নতুন কাজ তাঁরা দেখতে চান।

প্রশ্ন: সিনেমার বিষয়বস্তু আসলে কী?

ঋতুপর্ণা:  সেটা তো এখন বলা যাবে না। স্পর্শ আসলে খুব সেনসিটিভ একটা শব্দ। এর অনেক রকম মানে হয়। এ সিনেমায়ও স্পর্শর অনেক রকম মানে আছে, দর্শক সিনেমাটি দেখলে বুঝতে পারবেন। স্পর্শ শুধু একটা কিছুকে এর কেন্দ্র করে নয়; বহু সম্পর্কের ভেতরে স্পর্শ কীভাবে কাজ করে, সেটা নিয়েই কথা।

প্রশ্ন: বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের সিনেমার মধ্যে তুলনা টানতে বললে কোন ইন্ডাস্ট্রিকে এগিয়ে রাখবেন?

ঋতুপর্ণা: দুটো জায়গার দুটো ধারা। এভাবে তুলনা করা যায় না। দুই জায়গাতেই খুব ইন্টারেস্টিং কাজ হচ্ছে। কনটেন্ট এখন একটা অন্য জায়গায় চলে গেছে। এখন ওটিটি যেভাবে এসেছে, সেখানে আমরা নতুন কনটেন্ট পাচ্ছি, নতুন শিল্পী ও নির্মাতারা কাজ করছে। পুরোনো অনেক শিল্পী ফিরে আসছেন। এখন আমার মনে হয়, কনটেন্ট ইজ দ্য কিং। কনটেন্ট যত ভালো তৈরি হবে, শিল্পীরাও নিজেদের নতুনভাবে এক্সপ্রেস করতে পারবেন।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের অনেক অভিনেতার সঙ্গে আপনি কাজ করেছেন। তাঁদের মধ্যে কারা আপনার বেশি প্রিয়?

ঋতুপর্ণা: আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারা সবাই আমার খুব ফেবারিট। এত ভালো সম্পর্ক আমার সবার সঙ্গে! ফেরদৌস আমার খুব ভালো বন্ধু। তার সঙ্গে অনেক বছরের সম্পর্ক, ফ্যামিলির মতো আমাদের রিলেশনশিপ। মান্না ভাইয়ের কথা বলব। তাঁর সঙ্গে প্রচুর কাজ করেছি। মান্না ভাইকে খুব মিস করি। অদ্ভুত তাঁর স্টারডম ছিল। এখনো তাঁর স্ত্রী শেলি আপার সঙ্গে আমার গভীর যোগাযোগ। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি, তাদের সঙ্গে একটা সম্পর্ক আমার রয়েই যায়। আমিন খানের সঙ্গে অভিনয় করেছি, রিসেন্টলি আরিফিন শুভর সঙ্গে কাজ হয়েছে। ফলে সবার সঙ্গেই আমার সুসম্পর্ক। আমি যাঁকে খুব সম্মান করি এবং ভালোবাসি, তিনি হচ্ছেন আলমগীর ভাই। তাঁর সঙ্গেও অনেক কাজ করেছি। তাঁর পরিচালনায় কাজ করেছি। এখন নিরবের সঙ্গে করছি। আমি মনে করি, অভিনয়শিল্পীরা তাদের বৈচিত্র্যের মধ্যে বেঁচে থাকে। আমি ওই ভার্সেটাইল জায়গাটার মধ্যে বেঁচে থাকতে চাই।

প্রশ্ন: ৫২ বছর বয়সেও আপনি ফিটনেস ধরে রেখেছেন

ঋতুপর্ণা: (রেগে গিয়ে) এটা বলার কি খুব দরকার? নায়িকাদের এ প্রশ্ন কখনো করতে নেই। আর ওই বয়সটা এখনো হয়নি আমার, যেটা আপনি বলছেন।

প্রশ্ন:  আপনার কাঁধে ব্যান্ডেজ দেখতে পাচ্ছি। আঘাত পেয়েছেন?

ঋতুপর্ণা: পরশু দিন সেটে একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। আমি একটা নতুন ছবির শুটিং করছি। ‘দাবাড়ু’ নাম। একটা শট ছিল- আমি রান্না করছি, কড়াইয়ের মধ্যে একটা বল এসে পড়বে এবং সেটা উল্টে যাবে। উল্টে না গিয়ে গরম পানি ছিটকে এমন ছ্যাঁকা লেগেছে যে একটু ক্ষত হয়ে গেছে। কিন্তু শুটিং শিডিউল আবার মিস করা যাবে না। ব্যথা নিয়েই কাজ করব; কারণ, আমি মনে করি, দিস ইজ মাই কমিটমেন্ট।

প্রশ্ন:  সম্প্রতি বাংলাদেশের কোনো সিনেমা দেখা হয়েছে?

ঋতুপর্ণা: বেশ কিছু ছবি রিলিজ হয়েছে। ‘সুড়ঙ্গ’ নিয়ে খুব আলাপ হচ্ছে। তার আগে ‘হাওয়া’। চঞ্চলের সঙ্গে আমার দেখা হলো কয়েক দিন আগে। আমরা আমেরিকাতে একটা শো করলাম একসঙ্গে। মৃণাল সেনকে নিয়ে একটা সেমিনার ছিল, সেখানে আমার বক্তব্যও ছিল আমরা একসঙ্গে অংশ নিয়েছিলাম অনুষ্ঠানে। আর আমার বন্ধুর ছবিও রিলিজ হয়েছে না? ফেরদৌসের? ‘মাইক’ সিনেমার জন্য ওকে আমার অনেক শুভেচ্ছা। ওর আরেকটা ছবি আসছে বোধ হয় ‘১৯৭১: সেই সব দিন’ নামে।

প্রশ্ন: প্রসেনজিতের সঙ্গে আপনি নতুন কোনো কাজ করছেন?

ঋতুপর্ণা: ১৫ বছর পরেও যখন আমরা ‘প্রাক্তন’ বলে একটা ছবি করেছি, সেটা পুরো বক্স অফিস রেকর্ড ভেঙে দিয়েছিল। তার এক-দেড় বছর পর ‘দৃষ্টিকোণ’ নামে আরেকটা ছবি করলাম, কৌশিক গাঙ্গুলির পরিচালনায়। সেটাও ম্যাসিভ হিট। এর পরে আমরা আরেকটা ছবি করব, যেটা আমাদের ক্যারিয়ারের ৫০তম ছবি হবে। সে স্ক্রিপ্টটা লেখা হচ্ছে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের প্রতি আপনার একটা আবেগের জায়গা আছে। আপনার মা-বাবার জন্মস্থান এখানে

ঋতুপর্ণা: বাংলাদেশ তো আমারই দেশ। আমি তো এটাকে আলাদা করে দেখি না। সে জন্য বোধ হয় এখানকার মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে। কারণ, আমার বাবার দেশ বিক্রমপুর, আর মায়ের দেশ মানিকগঞ্জ। ফলে আমার লো একটা ভিত আছে এখানে। আমি যখন একটা ছবি করতে এসেছিলাম অনেক বছর আগে, তখন মায়ের জন্মস্থানে গিয়েছিলাম। সেটা দেখে এসেছিলাম।

শেয়ার করুন