২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ৬:৫৪:২০ অপরাহ্ন


বিয়ানীবাজার সমিতির অতিরিক্ত ভোটার নিয়ে সংকট ঘনীভূত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৩-০৮-২০২৩
বিয়ানীবাজার সমিতির অতিরিক্ত ভোটার নিয়ে সংকট ঘনীভূত


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সামাজিক সংগঠন বিয়ানীবাজার সমিতির আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৩০ জুলাই সদস্য নিবন্ধন করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পরে অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধনকে ঘিরে সংগঠনে সংকট দেখা দেয়। এ সংকট উত্তরণের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেল মিছবাহ-অপু পরিষদ প্রথমে উপদেষ্টাদের কাছে সমাধান চেয়ে চিঠি দেয়। চিঠির উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে তারা প্রতিবাদ সভা করে। প্রতিবাদ সভায় সমিতিকে সংকট থেকে উত্তরণের জন্য সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক ২ সভাপতি আজমল হোসেন কুনু ও বদরুল হোসেন খানকে সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়। মধ্যস্থতাকারীরা সভাপতি, সেক্রেটারি ও উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সেক্রেটারি তার অতিরিক্ত সদস্য নিবন্ধনের রশীদ বের করে নিজেদের সততার প্রমাণ উপস্থাপন করেন। উপস্থিত মধ্যস্থতাকারীদের অন্যতম আজমল হোসেন কুনু দেশ পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে বলেন, রশীদ বই মোতাবেক অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধন তার কাছে সঠিক প্রতীয়মান হয়। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে এ কাজ সমাধানের দায়িত্ব উপদেষ্টাদের। যেহেতু আমাদের বিয়ানীবাজারের একজন সদস্য মনে করে সম্মান করে দায়িত্ব দিয়েছেন সেহেতু সে দায়িত্ব নির্মোহভাবে পালনের চেষ্টা করেছি। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে  নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য তিনি সবার প্রতি আহ্বান জানান। 

মিছবাহ-অপু প্যানেল মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে প্রাপ্ত খবরে হতাশা প্রকাশ করেন। অনেককে বলতে শোনা  যায়, নির্ধারিত সময়ের ৫ দিন পর অতিরিক্ত ১৯৬ ভোট সংযুক্ত করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি সমিতির ইতিহাস  কলঙ্কিত করেছেন, যা ক্ষমার অযোগ্য। একদিন না একদিন ইতিহাসের কাঠ গড়ায় তাদের দাঁড়াতে হবে। অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য তালিকাভুক্ত করা নিয়ে অনেকের মতামতে উঠে আসে সমিতির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও সাধারণ সম্পাদক  পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার আগে  উভয় গ্রুপের সঙ্গে বসে সমাধানের পথ বের করা যেত। তা না করে সরাসরি পত্রিকায়  বিজ্ঞাপন দিয়ে গর্হিত কাজ করেছেন। ভবিষ্যতে এই নিন্দিত কাজ বর্তমান পরিষদের জন্য অপবাদ হয়ে থাকবে। যে অপবাদ কোনোদিন মোছা যাবে না। আব্দুর রাজ্জাক ২০০০-২০০১ সালে সভাপতি পদে নির্বাচনকালীন সময়ে মামলা পরিচালনায় প্রধান নিয়ামকের দায়িত্বে ছিলেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট। সে মামলার কথা এবার নির্বাচনী আলাপে, বৈঠকে উঠে আসছে। এভাবে কখনো না কখনো বর্তমান সমস্যা নিয়েও আলোচনা হবে।

অন্যদিকে বর্তমান সেক্রেটারি বিগত ২ বছর সমিতির কর্মকাণ্ডে সর্বস্তরের মানুষের প্রচুর বাহবা পেয়েছিলেন, প্রশংসিতও হয়েছিলেন। কিন্ত অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধন করে নিজের প্রশংসায় কালিমা লেপে দিলেন বলে অনেকেই মনে করেন। কেন না একজন বুদ্ধিমান সেক্রেটারি কোন অনাকাক্সিক্ষত সমস্যার সমাধান ঘরোয়া  বৈঠকে না করে অন্যপথে হাঁটলেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেন এবং নিজেকে দায়মুক্ত করার চেষ্টা করলেন। অনেক মনে করেন, এটা পূর্ব পরিকল্পিত। বিজ্ঞাপন এটা হাতিয়ার বা কৌশল। 

গত ৩০ জুলাই নিবন্ধন শেষে জনসমক্ষে নিবন্ধন ও অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ ঘোষণা করার সময় উপস্থিত অনেককে বলতে শোনা যায়, বর্তমান সেক্রেটারি সদস্য নিবন্ধন শেষে দৃঢ়চেতা মনোভাব নিয়ে সদস্য নিবন্ধন সংখ্যা ও আদায়কৃত অর্থের পরিমাণ ঘোষণা করেন। হঠাৎ করে ৫ দিন পর মিসিং অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য ঘোষণা করে সদস্য নিবন্ধন তালিকায় যুক্ত করার পিছনে  রহস্য কি? তিনি নিজের সুনামকে নিজে পদানত করলেন। ভবিষ্যতে সমিতির কর্মকাণ্ডে এর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। অতিরিক্ত ১৯৬টি সদস্য নিবন্ধনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও সাধারণ সম্পাদকের অনড় অবস্থানের কথা জানার পর প্রতিদ্বন্দ্বী মিছবাহ-অপু প্যানেলের সমর্থকদের মধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়। তারা বলেন, গঠনতন্ত্রের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী জুলাই মাসের শেষ  রবিবার ভোটার নিবন্ধনের শেষ তারিখ। বর্তমান কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারি ৩০ জুলাই রাত আটটা পর্যন্ত সদস্য নিবন্ধনের সময় নির্ধারণ করে  দেন। এ সময় নির্ধারণের ক্ষমতা গঠনতন্ত্র দেয়নি। সময  নির্ধারণ তাও সূর্যাস্তের পর পর। রাত ১২টা পর্যন্ত না হোক, রাত ১০টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হলে কোনো আপত্তির অবতারণা হতো না। সমর্থকদের কথা ৫ দিন পর অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধন হলে গঠনতন্ত্রের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী তাদের কেন  আরো শতাধিক সদস্য নিবন্ধনে অপারগতা প্রকাশ করে। এর রহস্য ভেদ করা কঠিন। এ ধরনের  কাজ সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক বলে তারা মনে করেন। মিছবাহ-অপু প্যানেল সূত্রে জানা যায়, ভোটার নিবন্ধনের তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে হস্তান্তরের আগে অতিরিক্ত ১৯৬ সদস্য নিবন্ধন ও গঠনতন্ত্রের  ১৪ ধারা মোতাবেক আরো শতাধিক সদস্য নিবন্ধন নিয়ে গ্রহণযোগ্য সমাধান  না হলে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে অংশগ্রহণ ব্যাপারে ভাবনার অবকাশ রয়েছে। সমিতির বৃহত্তর স্বার্থে অবিলম্বে সৃষ্ট সংকট সমাধান আবশ্যক। সন্তোষজনক সমাধান না  হলে সমিতির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হলে সভাপতি ও সেক্রেটারিকে সে দায়ভার বহন করতে হবে।

সংশোধনী:

গত ১৬ আগস্ট প্রকাশিত দেশ পত্রিকায় বিয়ানীবাজার সমিতির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন শীর্ষক সংবাদে ১৫ হাজার ৭৯৫ ডলার ছাপা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে হবে ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯০৫ ডলার হবে। অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত।

শেয়ার করুন