২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:১৮:১০ অপরাহ্ন


দেশকে রুনা খান
শিল্পীরা এক জীবনে বহু জীবন দেখতে পান
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২৩
শিল্পীরা এক জীবনে বহু জীবন দেখতে পান রুনা খান


রুনা খান। টেলিভিশন নাটকের পরিচিত মুখ তিনি। তবে সিনেমাতেও মাঝে মধ্যে দেখা যায় তাকে। এই মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি শুরু করেছেন নতুন আরো একটি সিনেমার শুটিং। নাম ‘বক’। এই সিনেমা ও ক্যারিয়ার নিয়ে রুনা কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির 

প্রশ্ন: দীর্ঘদিন পর আবার নতুন সিনেমায় অভিনয় শুরু করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন?

রুনা খান: নতুন সিনেমার জন্য আমার একটা বিরতি ছিল, তবে এই সময়টায় নাটকের কাজ করেছি। তাই সিনেমা নতুন হলেও অভিনয়টা ধারাবাহিক কাজের মতোই মনে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। 

প্রশ্ন: নতুন সিনেমাটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে?

রুনা খান: এটা চমৎকার একটি কাজ হচ্ছে। নাম ‘বক-দ্য সোল অব ন্যাচার’। পরিচালনা করছেন মাসুদ পথিক। সিনেমার শুটিং করছি মেঘনার একটি চরে। আমার চরিত্রের নাম সবিতা। সবিতার স্বামী একজন বক শিকারি। এই সিনেমায় উঠে আসবে জীবনের গল্প, প্রকৃতির গল্প এবং নদী তীরের মানুষের গল্প। কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতা ‘আট বছর আগের একদিন’ অবলম্বনে ‘বক’ সিনেমাটি নির্মিত হচ্ছে।

প্রশ্ন: শুটিং অভিজ্ঞতা কেমন?

রুনা খান: শুটিং হচ্ছে চরে। এখানে সেভাবে থাকার কোনো ব্যবস্থা নেই। নৌকা ছাড়া চর থেকে বের হওয়ার উপায় নেই। এখানে শুটিং করতে আসার পর বেশ কয়েকবার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির দৃশ্যের জন্য কৃত্রিম বৃষ্টির প্রয়োজন হয়নি। সব মিলিয়ে ১০টি বৃষ্টির দৃশ্য করেছি। প্রকৃতির বৃষ্টির মধ্যে শুটিং করতে পেরেছি। আবার রোদের মধ্যেও শুটিং করছি। এখানে রোদ মানে ভয়াবহ রোদ। আমি তো গ্রামের মানুষ, জন্ম গ্রামে। বড় হয়েছি সবুজের মধ্যে। যখনই প্রকৃতির মধ্যে আসি, ভালো লাগে। এখানে সীমাবদ্ধতা আছে। চরের বিভিন্ন মানুষের বাড়িতেই আমরা থাকছি। এখানকার মানুষ খুব ভালো। কেউ গাছ থেকে পেয়ারা নিয়ে আসছেন, কেউ আবার বাড়ি থেকে রান্না করে নিয়ে আসছেন। সীমাবদ্ধতা থাকলেও চরের সৌন্দর্য এবং এখানকার মানুষের ভালোবাসা সব ভুলিয়ে দিচ্ছে।

প্রশ্ন: এমন কোনো দৃশ্য আছে, যার জন্য অনেক সময় লেগেছে?

রুনা খান: ‘বক’ সিনেমার একটি দৃশ্য ধারণ করতে গিয়ে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত টানা পানিতে ছিলাম। ৪০ জনের একটি টিম। নদীর মধ্যে দৃশ্য। কেউ নৌকায়, কেউবা তীরে। এটা দেখে চরের মানুষ বলেছেন, তোমাদের কাজ তো অনেক কঠিন।

প্রশ্ন: নানা রকমের চরিত্রে অভিনয় করতে কেমন লাগে?

রুনা খান: একজন অভিনয় শিল্পীর বড় বিষয় হচ্ছে, তিনি এক জীবনে বহু জীবন দেখতে পান। এক জীবনে বহু জীবনযাপন করতে পারেন অভিনয়ের জন্য, চরিত্রে মিশে যাওয়ার জন্য। শিল্পী বলেই তা সম্ভব। এটাকে খুব ইতিবাচকভাবে দেখি। বেশ ভালো লাগে।

প্রশ্ন: মেকআপ ছাড়া শুটিং করেছেন কখনো?

রুনা খান: ‘বক’ সিনেমার জন্যই তো মেকআপ ছাড়া শুটিং করছি। আমার চরিত্রের জন্য মেকআপ নিতে হচ্ছে না। প্রথম ৩-৪ দিন শুটিং করার পর রোদে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছি। শীতের দৃশ্যগুলো পরে হবে, শীতকালে।

প্রশ্ন: অভিনয় নিয়ে প্রত্যাশা কী?

রুনা খান: যতদিন বেঁচে আছি, সুস্থ আছি, অভিনয়ের সঙ্গে থাকতে চাই। চরিত্রের দিক থেকে চাওয়া হচ্ছে- একইরকম চরিত্রে বারবার অভিনয় করতে চাই না। সবসময় ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে নিজেকে দেখতে চাই।

প্রশ্ন: অভিনয় করতে গিয়ে সহকর্মীদের প্রশংসা পেয়েছেন কখনো?

রুনা খান: ৩০ জনের বেশি সহকর্মী আমাকে শুটিংয়ের সময় জানিয়েছেন, মোশাররফ করিম আমার অভিনয় পছন্দ করেন। আমার আড়ালে সেই প্রশংসা আমার কাজের অনুপ্রেরণা জোগায়। আমরা অনেক পুরোনো সহকর্মী। অনেক আগে থেকে আমরা একসঙ্গে কাজ করি। সামনে কখনো মোশাররফ ভাই কিছু বলেনি। কেউ সামনাসামনি ভালো কিছু বললে আমি লজ্জায় পড়ে যাই। কী বলব কিছু বুঝতে পারি না। তখন প্রচণ্ড লজ্জা লাগে।

শেয়ার করুন