২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:১৫:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


নিউইয়র্কে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৮-১০-২০২৩
নিউইয়র্কে সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত নিউইয়র্কে সম্প্রীতি সমাবেশে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ


মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক চেতনার যে বাংলাদেশ আমরা অর্জন করেছি, সেখানে সম্প্রীতির স্বপ্নটি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু দিন দিন সেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা ও কিছু উগ্র ধর্মীয় দল আমাদের এ অর্জনকে ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে অন্তরে ও ঘরে ঘরে রয়েছে অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা। সেই চেতনা সামাজিক, পারিবারিক এবং রাষ্ট্রীয় সব ক্ষেত্রে সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে অপশক্তি মাথাচাড়া দিতে পারবে না। ‘অসাম্প্রদায়িক এবং সম্প্রীতির বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে সম্প্রীতি সমাবেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তরা এমন কথা বলেন।

নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় ‘ওপেন আইস, নিউইয়র্ক’ এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।

সংগঠনের সদস্য মুজাহিদ আনসারীর সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ্, প্রবঢু সাংবাদিক মনজুর আহমেদ, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দ্বীজেন ভট্টাচার্য্য, উদীচী যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরাফ সরকার, লেখক কুলদা রায়, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট উত্তর আমেরিকার প্রতিনিধি মিথুন আহমেদ, ওপেন আইসের ড. ওবায়দুল্লাহ মামুন, জাকির হোসেন বাচ্চু, তানভির কায়সার ও কাবির হোসেন, প্রজন্ম-৭১-এর শিবলী সাদিক শিবলী, নতুন প্রজন্মের রানিয়া রেজওয়ানা প্রমুখ। শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য জাকির আহমেদ রনি। অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন সনজীবন কুমার ও তোফাজ্জল লিটন। অনুষ্ঠান সমন্বয়ে ছিলেন সংগঠনের সদস্য দীলিপ মোদক ও হিরো চৌধুরী।

সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অত্যাচার-নির্যাতনে চিত্র তুলে ধরে বলেন, সংখ্যালঘুদের তাদের নিজভূমিতে থাকার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আর তাদের পাশে শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন, মুক্তচিন্তা, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ ও সংগঠনগুলোকে পাশে থাকতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার জন্য দেশে-বিদেশে সবাইকে সোচ্চার থাকতে হবে বলে মোহাম্মদ উল্লাহ মতপ্রকাশ করেন।

মনজুর আহমেদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন তৈরি হয়েছিল, তা ক্রমে ক্রমে ধ্বংস হচ্ছে। এর মূল কারণ হলো, জন্মের পর থেকে একজন শিশুকে ধর্মের ব্যবধান করে দেওয়া হচ্ছে, কে হিন্দু, কে মুসলমান তা শিখিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন, আনুপাতিক হারে সংখ্যালঘুদের জন্য জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসন নির্ধারণ, সংখ্যালঘু সেল গঠন এমন কিছু আইনের মধ্য দিয়ে ধর্র্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে, মতপ্রকাশ করেন দ্বীজেন ভট্টাচার্য্য। 

 সুব্রত বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকার সময় সরকার তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য ধর্মকে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহার করছে। যার জন্য বারবার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে কিন্তু কোনো বিচার হচ্ছে না।

ভারতীয় উপমহাদেশে শত শত বছর আগে থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত ধর্মীয় সম্প্রীতি কীভাবে আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে গেল, তার তত্ত্ব তুলে ধরে কুলদা রায় বলেন, সম্প্রীতি বজায় রাখতে হলে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

মিথুন আহমেদ বলেন, আমাদের মধ্যে যে উগ্র ধর্মীয় মানসিকার জন্ম নিচ্ছে, তার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। যারা প্রগতির, মুক্তিযুদ্ধের ও অসাম্প্রদায়িকতার মুখোশ পরে, সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প বুকে লালন করে সমাজকে দ্বিধাবিভক্ত করার চেষ্টা করছেন, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। 

অন্য বক্তরা বলেন, বাংলাদেশে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে গণমুখী সর্বজনীন বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করতে হবে। রাষ্ট্রকে এ ব্যাপারে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

শেয়ার করুন