শামীমআরা বেগম ও তামান্না শবনম পাপড়ী
বাংলাদেশে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি অন্যতম সরকারি ও স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়। তবে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগরের পার্থক্যটা অনেকখানি। এই বিশ্ববিদ্যালয় শুধুই একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এ যেন হাজারো শিক্ষার্থীদের আবেগ-ভালোবাসা-মায়া-মমতা-স্নেহের নাম। ঢাকার অদূরে সাভারে ৬৯৭.৫৬ একর এলাকা জুড়ে অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ জুড়ে ছড়িয়ে আছে হাজারো শিক্ষার্থীর স্মৃতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে অনেকেই সংক্ষিপ্ত করে ও ভালোবেসে ‘জানবিবি’ বলে ডাকেন। প্রাণের প্রাঙ্গণে একটুখানি নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য হলেও, সময় পেলেই ছুটে আসেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু প্রবাসের জাবিয়ানদের সেই সুযোগ নেই। কিন্তু তাদের রয়েছে প্রবাসের সবচেয়ে বড় অ্যালামনাই সংগঠন জাহাঙ্গীরনগর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা।
জাহাঙ্গীরনগর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার ২০২৪-২০২৫ বর্ষের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শামীমআরা বেগম, ইংলিশ বিভাগ এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন তামান্না শবনম পাপড়ী, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ।
গত ৩ ডিসেম্বর নিউ ইয়র্কের একটি রেস্টুরেন্টের পার্টি হলে জাহাঙ্গীরনগর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকার একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে শামীমারা বেগম সভাপতি এবং তামান্না শবনম পাপড়ী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। কার্যকরি কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি যথাক্রমে মেঘনা পাল, মোহাম্মদ রহমান পলিন, মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহ, দুররে মাকনুন নবনী এবং লিটু আনাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিষ ঘোষ ও প্রশান্ত মল্লিক অয়ন, প্ল্যানিং অ্যান্ড ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর হারুন ইবনে রশিদ পাপ্পু এবং সিব্বির আহমেদ উৎপল, সাংগঠনিক সম্পাদক সুব্রত পল এবং রাবেয়া ভূইয়া, যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক কোষাধ্যক্ষ জোবায়ের হোসনি ফাহাদ এবং অ্যাসোসিয়েট কোষাধ্যক্ষ কানিজ ফাতিমা রুমানা এবং সাংস্কৃতিক সম্পাদক তানজিল মাহমুদ এবং সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক জাকিয়া মাহবুব নাবিলা, ক্রীড়া সম্পাদক শাহরিয়ার কবির, সহযোগী ক্রীড়া সম্পাদক ইব্রাহীম রাকিব বাবু, মিডিয়া ও আর্কাইভ সম্পাদক রনি ভৌমিক এবং ডিজিটাল ক্রিয়েশন অ্যান্ড পাবলিকেশন সম্পাদক সৈয়দ মোহাম্মদ তায়েব, কার্যকরি সদস্য যথাক্রমে- মারীস্টেলা আহমেদ শ্যামলী, শমিত মন্ডল, রুহুল আমিন, অফ্রোদিতি পান্না, মোহাম্মদ নাসির, মোস্তফা শারমিন, শারমিন আক্তার রেক্সোনা, রাজেশ রায়, রিজিয়া ফারহানা খান, রিয়াজুল হায়দার ফয়সাল এবং আজিম উদ্দিন।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হন যথাক্রমে একরামুল করিম, মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আশুতোষ সাহা, আকতার আহমেদ রাশা, খালেদ মনির জোসেফ, মিল্টন জকি, হুমায়ুন কবির, সুজিত পল, হাবিব রহমান এবং শামীম আল সাইদুজ্জামান।
উপদেষ্টা জামান মনির বলেন, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, বিরোধী দলীয় নেতা নারী ও সংসদীয় উপনেতা নারী। যা বিশ্বে বিরল উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে নারী সচিব, বিচারক, মেজর জেনারেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও জাতিসংঘের অধীনে বাংলাদেশের নারীরা শান্তি রক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশে মোট ৭৪ জন সংসদ সদস্য আছে যার মধ্যে ৫০টি আসন নারীদের জন্য সংরক্ষিত। এছাড়া স্থানীয় সরকার পর্যায়ে বিশ হাজার নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি রয়েছে। নারী নেতৃত্ব তৈরিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা সর্বাগ্রে। তাতে নতুন সংযোজন প্রবাসে জাবিয়ানদের সবচেয়ে বড় সংগঠন জেএএএ। অভিনন্দন শামীমআরা এবং পাপড়ী।
বিশিষ্ট ভাস্করশিল্পী এবং জাবি অ্যালামনাই উপদেষ্টা আকতার আহমেদ রাশা বলেন, নারী নেতৃত্ব সৃষ্টি করা অত্যন্ত কঠিন। পরিবার থেকেই নারীর নেতৃত্ব তৈরি ও নারীর ক্ষমতায়ন করতে হবে। কারণ পরিবারই প্রথম প্রতিষ্ঠান, যা তাদের কন্যা ও বোনদের মধ্যে নেতৃত্ব সৃষ্টি ও ক্ষমতায়ন করতে পারে। জাহাঙ্গীরনগর হচ্ছে আমাদের সবচেয়ে বড় পরিবার। সেই পরিবারে নারী নেতৃত্ব আমরা তৈরি করতে পেরেছি। নিজস্ব দক্ষতা ও গুণেই শামীম এবং পাপড়ী জাবি অ্যালামনাই এর হাল ধরতে সক্ষম হয়েছে। তাদের সাফল্য কামনা করি।
নবনির্বাচিত সভাপতি শামীমআরা বেগম বলেন, প্রবাসে জাহাঙ্গীরনগরকে প্রতিনিধিত্ব করা যেমন গর্বের তেমনি কঠিনও বটে। সবার দোয়া ও সহযোগিতা চাই যেন এই দায়িত্ব পালন করতে পারি।
