৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ৬:২২:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল
‘কঠিন দুঃসময় আজ’
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৪-২০২৪
‘কঠিন দুঃসময় আজ’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর /ফাইল ছবি


এবারকার ঈদ সাধারণ মানুষ কাছে ‘দূঃখ-কষ্টে’র বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ঈদুল ফিতরের নামাজ শেষে সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পরে দলটির মহাসচিব এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘‘এবারকার ঈদ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটা দূঃখ নিয়ে এসেছে, কষ্ট নিয়ে এসেছে। ঈদে কি করি আমরা? ”

‘‘ ঈদে সাধারণত ছেলে-মেয়ে-স্ত্রী-বাচ্চাদেরকে কাপড় দেই… সেই কাপড় আমরা দিতে পারছি না… ভালো খাবার দেই? সেই খাবার আমরা দিতে পারছি না… সাধারণ মানুষরা তাদের ছেলে-মেয়েদের সেই খাবার দিতে পারছে না।”

এই অবস্থার জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই সমস্ত বিষয়গুলো সুপরিকল্পিতভাবে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একেবারে ধবংস করে দেশকে পরনির্ভরশীল করার জন্যই বর্তমান সরকার এসব করছে।”

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দেশবাসীকে ‘ঈদ মোবারক’ জানান বিএনপি মহাসচিব।

‘কঠিন দুঃসময় আজ’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আজকে এক কঠিন দুঃসময় চলছে। আমাদের দল শুধু নয়, সারা দেশে বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী এখনো কারাগারে…আমাদের নেতারা এখনো কারাগারে। আপনারা জানেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গুম করেছে, হত্যা করেছে, নিপীড়ন-নির্যাতন করেছে, কারাগারে নিক্ষেপ করেছে।”

‘‘ তারপরেও এদেশের মানুষ তারা গণতন্ত্রের জন্য, নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যে সংগ্রাম করে চলেছে, লড়া্ই করে চলেছে। বিগত যে নির্বাচন হলো যেটা কোনো নির্বাচনই ছিলো আসলে এটা ছিলো সম্পূর্ণভাবে ডামি নির্বাচন। আমরা বিশ্বাস করি, জনগনের আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। জনগন অবশ্যই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভয়াবহ এই ফ্যাসিস্ট দখলদার সরকার যারা জোর করে বাংলাদেশের অর্থনীতি-রাজনীতি সব কিছুকেই ধবংস করে দিচ্ছে। অবিসম্ভাবীভাবে তার পরিণতি তারা নিয়ে আসবে… পরিনামে তাদেরকে জনগনের কাছে পরাজিত হতে হবে।”

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে এই সরকার সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধবংস করেছে… এখানে বিশদ বলার কিছু নেই। শুধু এটুকু বলতে চাই, এভাবে দেশের অর্থনীতিকে ধবংস করে রাজনৈতিক একেবারে দেউলিয়াত্বপনার কারণে আওয়ামী লীগ আজকে তারা একটা দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ এখন আর আওয়ামী লীগ নেই… আওয়ামী লীগ এখন সম্পূর্ণভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল একটি যন্ত্রের পরিণত হয়েছে।”

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আশাবাদ ব্যক্ত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, এই অবস্থার পরিবর্তন আসবে। আমরা আান্দোলন করছি,সংগ্রাম করছি… এদেশের জনগনের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করব,গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।”

বান্দরবানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ব্যাংক ও থানায় হামলার ঘটনা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এই সরকার ক্ষমতায় এসেছেই একটা মাত্র অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে সেই অ্যাসাইনমেন্ট হচ্ছে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করে দেয়া। প্র্রথমে তারা পিলখানায় বিডিআর(তৎকালীন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী) এর ঘটনা সেখানে থেকে শুরু হয়েছে…বিডিআর এর সৈনিকরা এখন পর্যন্ত জেল থেকে বেরুতে পারেনি…প্রায় ৭‘শ বিডিআর এর সৈনিক ১৬ বছর ধরে বিচারের অপেক্ষায় কারাগারে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।”

‘‘ ঠিক এ্কইভাবে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেয়া, বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ভাবে পরনির্ভরশীল করে দেয়া, ধ্বংস করে দেয়া …এই অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে তারা এগুচ্ছে।”

সকাল সাড়ে ১১টায় দলের মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খানসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদেরকে নিয়ে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর ফাতেহা পাঠ করে পুস্পস্তবক অর্পন করেন। তারা প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন।

এ সময়ে বিএনপির আহমেদ আজম খান,  আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, রফিকুল ইসলাম জামাল, আবেদ রাজা, রফিক শিকদার, মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, হাবিবুর রশীদ হাবিব, যুব দলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, ইয়াসীন আলীসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতি ঈদে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার স্বামী জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতেন। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি মামলার রায়ে খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা এ ধারাবাহিকতা অনুসরণ করছেন।

‘ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বাসায় মহাসচিব’

জিয়ার কবর জিয়ারতের পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম আসাদ গেইটে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদের বাসায় গিয়ে তার সহধর্মিনী রুমানা মাহমুদসহ পরিবারের সদস্যদের সাথে তাদের খোঁজখবর নেন, তাদের সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

সরকারের মিথ্যা মামলায় রোষানলে পড়ে বর্তমানে সাবেক বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।


শেয়ার করুন