২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:৪৮:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


স্বদেশে গণতন্ত্র নিয়ে বেসামাল মোদির বিদেশে মোড়লিপনা
মঈনুদ্দীন নাসের
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-১০-২০২২
স্বদেশে গণতন্ত্র নিয়ে বেসামাল মোদির বিদেশে মোড়লিপনা নরেন্দ্র মোদি


বিশ্বের হটস্পট নিয়ে ভারতের বর্ণবাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গ্রহণযোগ্য বকচালি করলেও স্বদেশে তার কৃতকর্ম ক্রমাগত প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। রাশিয়ার ইউক্রেন থেকে এক-পঞ্চমাংশ এলাকা আত্তীকরণ এবং এর পক্ষে জাতিসংঘে রাশিয়াকে ভোট দিলেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যুদ্ধবিরোধী পরামর্শ দিতে শোনা যায়। উজবেকিস্তানে মোদি পুতিনকে বলেন, যুদ্ধ নয়, বরং গণতন্ত্র, কূটনীতি ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে হবে। ভারত বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ আর সে জন্য মোদির এতো দাম। কিন্তু তার দেশে কূটনীতিক, বিশ্লেষক ও গণতান্ত্রিক অ্যাকটিভিস্টরা বলছেন যে, মোদি ভারতের গণতন্ত্রকে আবার নির্মাণ করতে চায় স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর। কিন্তু তার সেই পরিবর্তনের কার্যকলাপের মধ্যে রয়েছে- বিরোধী আওয়াজকে ভ্রুক্ষেপ না করা, বেসামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে একপাশে রেখে দেয়া এবং সংখ্যালঘুদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক বানানো। 

অতীতে ভারতীয় নেতারা ধর্মীয় বিভাজনকে ক্ষমতায় থাকার জন্য ব্যবহার করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় থেকেছে। কিন্তু এখন মোদির নজর আরো মৌলিক। তিনি নিয়মানুগভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে চান, তা অবশ্য সরাসরি ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে নয়। তা তিনি চান আরো সূক্ষ্ম ও স্থায়ীভাবে। আর তার লক্ষ্য হচ্ছে ভারতের সাংবিধানিক ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের ওপর সংখ্যাধিক্য হিন্দু আদর্শের তকমা লেপন করা। এর মধ্যে তিনি তার দিকে আদালত, সংবাদমাধ্যম, আইনপ্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ও বেসামরিক সংগঠন ও মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে কাছে টানতে পেরেছে। যেসব প্রতিষ্ঠান ভারতে গণতন্ত্র রক্ষার সৃজনশীল প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে, সেসবকে নড়বড়ে করে ফেলা হয়েছে। উপমহাদেশের ইতিহাস হচ্ছে, সামরিক অভ্যুত্থান ও একনায়কতন্ত্রের প্রভাব, কিন্তু ভারতে তা করতে হবে গণতন্ত্রকে ব্যবহার করে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থায়, কিন্তু যখন মোদি তার হিন্দুত্ব নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আঁটছেন, তখন দেশটির প্রভাব বিশ্বের অন্যান্য ইস্যুতে বেশ প্রয়োজন। একইসাথে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে গণতন্ত্র চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সে কারণে এ সময় ভারতের ওপর তেমন জোরালো কোনো চাপও পড়ছে না এ নিয়ে পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে। 

এসব কিছুর মাঝে বর্তমান ভারত ও বিশ্বের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে, এই দেশে ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন চালু থাকবে কিনা। আর সংখ্যালঘুদের বিশেষ করে ভারতের ২০ কোটি মুসলমানদের উগ্রতা ও উদ্দেশ্যপূর্ণ সন্ত্রাসের মাধ্যমে জোরপূর্বক প্রান্তিক স্তরে নিয়ে গিয়ে তারা নির্ভরযোগ্য পার্টনার হতে পারবে কিনা?

গত জুন মাসে জার্মানিতে গ্রুপ-৭-এর সভায় মি. মোদি গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও বেসামরিক সোসাইটিসমূহের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়ে অন্যদের সাথে সোৎসাহে বিবৃতিতে সই করেছেন। তখন তার সরকার দেশে তার সমালোচকদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছেন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ মোদির পূর্বেকার সময়ে ইসলামের বিরুদ্ধে তার মন্তব্য ও তার মানবাধিকার নিয়ে মন্তব্যের জন্য এক সমালোচককে গ্রেফতার করে। তার কেেয়কদিন পূর্বে ভারতীয় কর্মকর্তারা তাৎক্ষণিক বিচারের নামে মুসলমানদের ঘরবাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়। এবার তারা এই ঘরবাড়ি ভাঙে মোদির উত্তেজনাপূর্ণ মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্য। 

বর্তমানে মোদি ভারতের হাত শক্তিশালী করতে চায়। যেহেতু বিশ্বব্যবস্থা কোভিড, রাশিয়ায় ইউক্রেন আক্রমণ এবং সম্প্রসারণবাদী বেইজিংয়ের কারণে ব্যাহত হয়েছে। মোদির পরামর্শকরা মনে করে ক্ষমতাধরদের মাঝে ভারতকে তাদের নিজস্ব টার্মে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। 

ভারত উঠতি অর্থনৈতিক ক্ষমতাধর দেশ। ব্রিটেনকে পেছনে ফেলে ভারত এখন পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতি। ভারত ভবিষ্যতে চীনের প্রভাবিত বিশ্বে অগ্রগতির জন্য তার বাণিজ্য সম্প্রসারণ করছে গণতান্ত্রিক দেশগুলোর সাথে। রাশিয়ার সাথে ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একসাথে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে। আমেরিকা ও ইউরোপের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। ভারতের পশ্চিমা মিত্ররা তাকে তেমন কোনো চাপ দিচ্ছে না। যদিও ভারতে জনগণের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকে মোদির নেতৃত্ব দূরে সরে যাচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ভারতের সাথে ফ্রি ট্রেড নেগোসিয়েশন করতে গিয়ে বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু মানবাধিকারের বিষয়ে তেমন কিছু তোলেনি। 

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতা দখলে রাখার নীতির কারণে আমেরিকাও ভারতের তেমন কোনো সমালোচনা করতে পারেনি। কারণ মোদির সাথে ট্রাম্পের বেশ সম্পর্ক রয়েছে। দুই জনেই মুসলিম বিদ্বেষী। আর পরবর্তীতে ট্রাম্পের আচরণ যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

এসব কারণে ভারত বেনারসে মসজিদ ভাঙার পরিকল্পনা নিচ্ছে। মধ্যপ্রদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর মসজিদের পাশে বসতিদের দোকানপাট ভাঙছে। মুসলমানদের ওপর সরাসরি আক্রমণ করছে মোদিবাদী হিন্দুরা। 

বস্তুত ১৯৪৭ সালে ভারতের প্রতিষ্ঠা হয় সহিংসতার মাধ্যমে। ব্রিটিশ কেবিনেট মিশনের ১৯৪৬ সালের প্ল্যান-এ, বি, সি’র কোনোটাই কার্যকর হতে দেয়নি গান্ধীরা। হিন্দু-মুসলিম জাতীয়তাভিত্তিক দেশ বিভাগে বস্তুত জিন্নাহকে দায়ী করা হলেও এর পেছনে কলকাঠি নেড়েছে গান্ধী। (কথাটা বিস্তারিত আরেকদিন বলা হবে)। প্ল্যান সি’তে ছিল বাংলা ও আসামকে এক রাখা। কিন্তু তা হয়নি। গান্ধী, কংগ্রেসের বলদরাইকে সমর্থন করে মুসলিম লীগের সাদউল্লাহ ও মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে প্রত্যাখ্যান করে তার ব্যত্যয় ঘটায়। আন্দোলনে নামিয়ে দেয় কংগ্রেসকে আসামকে বাংলাভুক্তকরণে। একইভাবে প্ল্যান বি’র মাধ্যমে পাঞ্জাবকে পূর্ণভাবে পাকিস্তানে রাখার প্রস্তাব না করে। কাশ্মিরকে প্ল্যান-এ’র মাধ্যমে পাকিস্তানে রাখার প্রস্তাবও গান্ধীই না করেন। সঙ্গে ছিল তার দুই বিড়াল? নেহেরু ও আবুল কালাম আজাদ। যদিও আবুল কালাম আজাদ ভারতের বর্তমান ভাগের জন্য নেহেরু ও বল্লভ ভাই পাটেলকে দোষারোপ করেন। ভারতের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ভারতের দারিদ্র্য অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। ভারত এতো বিস্তর জনগোষ্ঠীকে খাওয়াতে পারবে কিনা তা নিয়ে বারবার কথা ওঠে। ভারতের সাথে বিশ্বের ঘনিষ্ঠতা হয় এসব প্রশ্নের সমাধান খুঁজে পাওয়ার পর। কিন্তু ৭২ বছরের মোদি তার দীর্ঘসময়ে ডানপন্থী আন্দোলন করেছে। তার মতে, ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের মাধ্যমে হিন্দু সংখ্যাধিক্য লোকের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। কারণ তা করে মুসলমান ও খ্র্স্টিানদের মতো সংখ্যালঘুদের স্থান করে দেয়া হয়েছে। 

মোদির রাজনৈতিক সংহতিকরণের সাথে শক্তিশালী ভোটিং বেস গঠন ভারতকে এক ডানপন্থী করে তুলেছে। তবে তার পদ্ধতিগত সাংস্কৃতিক ও অপরাপর পরিবর্তন দীর্ঘদিন ধরে রাস্তায় আন্দোলনের মধ্যে সুর তুলেছে।

দেশের অনুসন্ধানী এজেন্সিসমূহ বিরোধী ভয়েসসমূহের বিরুদ্ধে নির্যাতন চালাচ্ছে। সাংবাদিক ও বিভিন্ন সেকুলার কর্মীরা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। বস্তুত ভারতের গণতন্ত্রে প্রথম ফাটল ধরে ১৯৭০-এর দশকে। যখন তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরাগান্ধী দেশে ইমারজেন্সি চালু করে বিরোধীদের জেলে ভরে। সংবাদপত্রের ওপর সেন্সরশিপ আরোপ করে ক্ষমতায় থাকার জন্য। অনেকে মনে করে মোদি, ইন্দিরা গান্ধীর চেয়ে বেশি কার্যকর পন্থা নিয়েছে তার লক্ষ্যার্জনে। তার প্রোপাগান্ডা অপারেশন এবং সোশ্যাল সিভিল মেশিন সকল ফোনে ফোনে প্রচার চালাচ্ছে। দেশ-বিদেশে প্রচার চলছে তার। 

বর্তমানে ভারতের হাইকোর্টে ৬০ লাখ মামলা বিচারাধীন। সুপ্রিম কোর্টে এ সংখ্যা ৭০ হাজার। দ- বেশ নগণ্য মাত্রায়। আবার তাদের মধ্যে অনেককে ক্ষমা করা হচ্ছে যারা সমাজে ভীতি ছড়াচ্ছে। 

দেশে মোদি তার আস্থা ফিরে পেয়েছে। আর সে আস্থা নিয়ে তিনি বিদেশের সাথে মোকাবিলা করতে চান। তবে এখন পশ্চিমা দেশ থেকে নতুন ধ্বনি বেজে উঠছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ভারতীয় অভ্যন্তরীণ নীতি সম্পর্কে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা মনিটর করছে। তার মানবাধিকার, কোনো কোনো সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ ও কারাগার কর্মকর্তার আচরণ মনিটর করা হচ্ছে। তাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার ওপর নজর রাখা হচ্ছে। কিন্তু ব্লিঙ্কেনের ভারতীয় প্রতিপক্ষ এস জয়শঙ্কর উত্তেজনা ছড়িয়ে বলেন, ‘আমি বলছি যে, আমরাও অন্য লোকের মানবাধিকার নিয়ে আমাদের মতামত দেব। অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে বলবো এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার নিয়েও বলা হবে। কাজেই এদেশেও যদি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, তাহলে তাও আমরা নজরদারি করবো।’

এরপর দেখা গেছে, আমেরিকা পাকিস্তানে এফ-১৬ যুদ্ধ বিমানের সরঞ্জাম বিক্রি করেছে। ভারত তার বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এই বিক্রিকে সমালোচনা করে বলেন, পাকিস্তানকে মিলিটারি সরঞ্জাম দিয়ে আমাদের কি বোকা বানাচ্ছে?

এরপর যদি আমেরিকা ভারতের সাথে চীনকে রোখার জন্য ড্রোন নির্মাণের কথা ফাঁস করে। যদিও তা নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি। এরপর পাকিস্তানকে কেন্দ্র করে আমেরিকা আবার তার দক্ষিণ এশিয়ায় স্ট্র্যাটেজি সাজাচ্ছে। আর পাকিস্তানের সাথে আমেরিকার মিত্রতা বস্তুত ইমরান খানের পতনের পর শুরু হচ্ছে। আমেরিকা কোনোভাবেই ইউক্রেন আক্রমণের পূর্বে ইমরানের রাশিয়া সফর সমর্থন করেনি। শুধু তাই নয় ইমরানের ভারতঘেঁষা নীতিও আমেরিকা বরদাশত করছে না। আর সে ক্ষেত্রে ভারত ইতিমধ্যে ইউক্রেনে আমেরিকার সাথে কোন প্রকার প্রক্সিযুদ্ধে যেতে চান না। সে কারণে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে যেতে রাজি নয়। একই কারণে চীনও রাশিয়াকে যুদ্ধের জন্য সমর্থন দিচ্ছে না। কাজেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত আমেরিকার বিরুদ্ধে জড়াতে চায় না। এক্ষেত্রে ভারতের নরেন্দ্র মোদিকে ভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিলে থাকতে হবে। আর তা করতে গেলে আঞ্চলিক ক্ষেত্রে ভারত কতটুকু কার্যকর ভূমিকা তার ইচ্ছামতো রাখতে পারবে তা বোঝা মুশকিল।

শেয়ার করুন