আগামী ২৮ জুন নিউইয়র্কে প্রাইমারি। প্রাথমিকভাবে চ‚ড়ান্ত করা হবে নিউইয়র্কের গভর্নর এবং অন্যান্য প্রতিনিধি। নিউইয়র্কের গভর্নর পদে রয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির দুইজন প্রার্থী। একজন হচ্ছেন নিউইয়র্কের বর্তমান গভর্নর ক্যাথি হকুল এবং বর্তমানে কংগ্রেসম্যান টম সুয়াজি। এই নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট-২৪ এ থেকে ডিস্ট্রিক্ট লিডার পদে নির্বাচন করছেন বাংলাদেশি-আমেরিকান শাহ নেওয়াজসহ অন্যান্য বাংলাদেশি আমেরিকান প্রার্থীরা। গভর্নর প্রার্থী টম সুয়াজি এবং ক্যাথি হকুল ইতিমধ্যেই তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যে টম সুয়াজি বাংলাদেশি কমিউনিটির মধ্যে ইতিমধ্যেই স্থান করে নিয়েছেন। তার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকসংখ্যক বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করছেন। তিনি বাংলাদেশি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন। সেই সাথে বাংলাদেশি মসজিদগুলোতে। বাংলাদেশি এবং দক্ষিণ এশিয়ান কমিউনিটিতে টম সুয়াজিকেই দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে না অপর গভর্নর প্রার্থী ক্যাথি হকুলকে।
গত ২১ মে বিকেলে টম সুয়াজি এসেছিলেন বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটসে। তিনি এই বিকেলে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট ঘুরে দেখেন এবং মানুষের সাথে গণসংযোগ করেন। এ ছাড়াও তিনি বাংলাদেশি এবং ভারতীয় দোকানগুলোতে ঢুকে কর্মচারি এবং দোকান মালিকদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। সেই সাথে তিনি সবার কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। গণসংযোগ শেষে তিনি ড্রাইভার সিটি প্লাজায় পথসভা করেন।
রাইজআপ নিউইয়র্কের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে রাইজআপের কর্মকর্তারা ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ান নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। ডেমোক্রেটিক কাব অব ইলবারিতের সদস্য জোহেব চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন গভর্নর প্রার্থী কংগ্রেসম্যান টুম সুয়াজি, লুথারেন গভর্নর প্রার্থী ডি. রেয়েনা, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট গিয়াস আহমেদ, লাইজআপের প্রধান শামসুল হক, হায়রাম মনসুরাত প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডিস্ট্রিক্ট ২৪-এ’র ডিস্ট্রিক্ট লিডার প্রার্থী শাহ নেওয়াজ, জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান, সহ-সভাপতি মোল্লা মাসুদ, হাসান জিলানী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, ডা. বর্ণালি হাসান, মোহাম্মদ হাসান, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট শাহ শহীদুল হক, কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট আব্দুস সোবহান, মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ড. রফিক আহমেদ, মূলধারার রাজনীতিবিদ মজিবর রহমান, আহনাফ আলম, আব্দুর রশিদ, মোস্তফা অনিক রাজ, বাংলা সিডিপ্যাপের মোহাম্মদ আলম, মোহাম্মদ সেলিম, আবুল কালাম, রাইস আপের সদস্য এরশাদ সিদ্দিকী, জামিল সরওয়ার জনি, সৈয়দ এনায়েত আলী, প্রিন্স আলম, মোহাম্মদ হাসান, সৈয়দ উদবাহ, নোবেল চৌধুরী, মোহাম্মদ হাসমত প্রমুখ।
কংগ্রেসম্যান টম সুয়াজি বলেন, আমরা প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন খাবার খাই, ভিন্ন ভিন্ন অনুষ্ঠান করি, ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলি, ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম পালন করি- আমরা সকল ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ নিউইয়র্কে বাস করি। আমাদের অধিকার আদায় করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই অধিকার আদায়ে আশা করি আমাকে ভোট দেবেন। আমি আপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে চাই। তিনি আরো বলেন, নিউইয়র্কে ট্যাক্স খুবই হাই। আমরা সর্বোচ্চ ট্যাক্স ফাইল করতেও নিউইয়র্কে থাকতে পারছি না। ব্যয় বেড়ে যাবার কারণে অনেকেই নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আমি নির্বাচিত হলে নিউইয়র্কে ব্যয় কমাবো। আমরা কষ্ট করছি আমাদের সন্তানদের জন্য। নিউইয়র্কে আমেরিকার সেরা সেরা স্কুল রয়েছে, আবার খারাপ স্কুলও রয়েছে। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে স্কুলগুলোর মান উন্নয়নে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ড্রাগের কারণে ৭৫ শতাংশ মানুষ এখন জেলে, রিকার্সআইল্যান্ডে রয়েছে ৫০ শতাংশ। তারা উন্নত জীবন আশা করে। তাদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সামাজিকভাবে তাদের অবস্থান তৈরি করতে হবে। তিনি তাকে এবং লুথারেন গভর্নর পদে ডি. রেয়েনে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
ডি. রেয়েনা নিউইয়র্কের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতে চান। তিনি বলেন, আমরা পরিবর্তন চাই। সকল সুযোগ সুবিধা চাই। এটা নিশ্চিত করতে হলে টম সুয়াজিকে ভোট দিতে হবে।
গিয়াস আহমেদ বলেন, টম সুয়াজি আমাদের প্রার্থী। তিনি মুসলমানদের স্বার্থরক্ষা করবেন, তিনি ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটির স্বার্থরক্ষা করবে। সুতরাং আমাদের সবাইকে ভোট দিতে হবে টম সুয়াজিকে। তিনি সকল ভোটারের প্রতি আহ্বান জানান টম সুয়াজিকে ভোট দেয়ার জন্য। সকল নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানান, তাদের আত্মীয়স্বজনকে ভোটদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য।