২০ মে ২০১২, সোমবার, ৬:৪৯:৩৯ পূর্বাহ্ন


ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘস্থায়ী করার নীল নকশা : সিপিবি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-০৫-২০২৪
ফ্যাসিবাদী শাসন দীর্ঘস্থায়ী করার নীল নকশা : সিপিবি বাম গণতান্ত্রিক জোটের সভায় নেতৃবৃন্দ


বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়েছে, সরকার নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের কোন প্রদক্ষেপই গ্রহণ করেনি। বরং বিরোধীদলগুলো নির্বাচন বর্জন করা সত্ত্বেও সরকার একতরফাভাবে উপজেলা নির্বাচন করছে। এর মাধ্যমে জাতীয় সংসদের পর স্থানীয় নির্বাচনেও টাকার খেলা, পেশি শক্তির দৌরত্ব, মন্ত্রী-এমপিদের পারিবারিক আধিপত্যের পুনরাবৃত্তি ঘটবে। আর এই ঘটনা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী না করে দলীয়, গোষ্ঠীতন্ত্র ও পরিবার তন্ত্রের আধিপত্যকেই বিস্তৃত করবে। এর নগ্ন চেহারা ইতোমধ্যে ফুটে উঠেছে। বিভিন্ন স্থানে নিজে দলের প্রতিপক্ষকে হাইজ্যাক করা, গোলাগুলি, হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটে চলেছে। এমনিতেই নির্বাচনের জামানত বৃদ্ধি, খরচের পরিমাণ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে গোটা নির্বাচন ব্যবস্থাকে তৃণমূল পর্যন্ত ধনীদের খেলায় পরিণত করা হয়েছে- যা লুটপাটের ধারাকে আরো বৃদ্ধি করবে।

প্রস্তাবে আরো বলা হয় ভোটে দাঁড়ানো ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। এজন্য নির্বাচন ব্যবস্থার আমূল সংস্কারসহ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রের দাবিতে দেশবাসীকে সোচ্চার হতে হবে।

গত ৭ মে সকাল সাড়ে ১১ টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সভাপতি মো: শাহ আলম, বাসাদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবীর জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা ডাক্তার জয়দীপ ভট্টাচার্য, সমাজতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি আব্দুল আলী, সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, বাসদের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য নিখিল দাস, কমিউনিস্ট লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য আব্দুর সাত্তার, শামীম ইমাম ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির যুগ্ম সম্পাদক রুবেল শিকদার।

সভায় অপর প্রস্তাবে বলা হয়, ’আমি ও ডামি’র নির্বাচনে গঠিত জাতীয় সংসদে ইউনিয়ন পরিষদ (সংশোধন) বিল ২০২৪ উত্থাপন করে নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠানো এবং গ্রাম পর্যন্ত কর্তৃত্ববাদী শাসনকে বিস্তারিত করার নীল নকশা বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে, যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে এই গণবিরোধী বিল প্রত্যাহার করতে হবে।

প্রস্তাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণমুক্ত ভাবে দক্ষ ও শক্তিশালী স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জোর দাবি জানানো হয়। একই সাথে এই দাবিতে গ্রাম শহরে সকল গণতন্ত্রকামি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

সভায় অপর এক প্রস্তাবে দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতি এবং দফায় দফায় বিদ্যুৎ জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, মুদ্রাস্ফীতির ফলে এমনিতেই জনজীবন অতিষ্ঠ। জনগণের নাভিশ্বাস চলছে। তার মাঝে দ্রব্যমূল্য ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির ঘটনায় শ্রমজীবী মধ্যবিত্ত মানুষের বেঁচে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধ, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, সারাদেশে সর্বজনীন রেশনিং ব্যবস্থা ও ন্যায্য মূল্যের দোকান চালু, জ্বালানি মূল্য ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি না করে দুর্নীতি অব্যবস্থাপনা ও ভুলনীতি পরিহার করারও আহ্বান জানানো হয় সভা থেকে।

শেয়ার করুন