২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:৩১:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা নিয়ে বাংলা একাডেমিতে মতবিনিময়
২৮ জুলাই থেকে নিউইয়র্কে চার দিনব্যাপী বাংলা বইমেলা শুরু
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৬-২০২২
২৮ জুলাই থেকে নিউইয়র্কে চার দিনব্যাপী বাংলা বইমেলা শুরু বাংলা একাডেমিতে নিউইয়র্ক বইমেলার নিয়ে মতবিনিময় সভায় উপস্থিতি


সারা পৃথিবীতে বাংলা বইমেলা-ভিত্তিক যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, তা মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের হাত ধরে শুরু হয়েছে। তিন দশক ধরে একটি বেসরকারি সংগঠন বাংলা ভাষা সংস্কৃতিকে যে মমত্ব নিয়ে সাফল্যের সাথে এগিয়ে নিয়ে চলেছে তা অনুকরণীয়। ৩১তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা যাতে আরো বেশি অর্থবহ হতে পারে সেজন্য আমরা আরো বেশি করে সহযোগিতার হাত বাড়াবো। গত ৯ জুন সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকে লেখক- প্রকাশকের মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় ৩১তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার আহ্বায়ক গোলাম ফারুক ভ‚ঁইয়া তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আমরা গত ত্রিশ বছর ধরে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে বাংলা ভাষার একটি বইমেলা করে চলেছি। গত দুই বছর কোভিড-১৯ এ সারা পৃথিবী তবিত। কিন্তু আমরা ২০২০ তে প্রথম ভার্চুয়াল বইমেলা করে সারা পৃথিবীর বাংলা ভাষার লেখক পাঠকদের একইসূত্রে যুক্ত করার চেষ্টা করেছি। গত বছর নিউইয়র্কে স্বল্প পরিসরে বইমেলার আয়োজন করে ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এবার ৩১তম বাংলা বইমেলায় বাংলাদেশের অধিক সংখ্যক লেখক ও প্রকাশক যাতে যোগ দিতে পারেন তার জন্য আমরা কাজ করে চলেছি। বইকে আরো বেশি প্রাধান্য দিতে আমাদের পুরো কমিটি কাজ করে চলেছে। তার বক্তব্যে তিনি বইমেলায় যোগ দেয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমরা চেষ্টা করবো আপনাদের আন্তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানাতে।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, একুশের গ্রন্থমেলা শুরু হয়েছে মুক্তধারার চিত্তরঞ্জন সাহার হাত ধরে। আজ থেকে ৩০ বছর আগে বিশ্বজিত সাহার হাত ধরে বহির্বিশ্বে বাংলা বইমেলার শুরু হয়। ১৯৯২ সালের পূর্বে বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গের বইরে কোথাও বাংলা বইমেলা হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। ইতিহাস, ইতিহাসই। আজ সারা পৃথিবীতে বাঙালি সাহিত্য-সংস্কৃতির যে প্রচলন শুরু হয়েছে তা ধারণ করতে হবে, যার প্রচলিত অর্থ হলো বই। সে বই শুধু হরফের অরে নয়, আমার মনেও লিখিত হতে পারে। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা আরো বলেন, আজ যে বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে বাংলার যে জয়গান আজ বিশ্বজুড়ে- নানান প্রতিক‚লতার মাঝেও অদম্য উদ্যোগে কাজ করে চলেছেন, সেই ব্যক্তির নাম মুক্তধারা ও বিশ্বজিত সাহা। আমি বইমেলায় যেতে পারি বা না পারি তার থেকেও বড় প্রয়াস বাংলা ভাষার এই মহাযজ্ঞে আমরা সকলে যদি সহযোগিতার হাত বাড়াই তাহলেই এই উদ্যোগের সফলতা আসবে। তিনি আরো বলেন, বইটাকে বই হিসেবে প্রকাশ করুন। যদি অনুবাদ বই হয় সেটিকে অবশ্যই পরীা করে প্রকাশ করুন। না হলে এটি অপ-অনূদিত বই, অনূদিত নয়। যদি ভালো মানের প্রকৃত বই হয়, তাহলে সেটি দশ বছর পর হলেও এর পিছনের বিনিয়োগ উঠে আসবে। 

আগামী ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য ৩১তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা উপলে গত ৯ জুন ঢাকায় বাংলা একাডেমির মুনীর চৌধুরী সভাকে লেখক ও প্রকাশকদের সাথে মতবিনিময় সভাটি আয়োজন করে ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’।

সভার বিশেষ অতিথি বিশিষ্ট নাট্যজন ও নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার উদ্বোধক রামেন্দু মজুমদার বলেন, বাংলা একাডেমির বই মেলার জন্য আমার যে আগ্রহ ও ভালোবাসা তেমনি নিউইয়র্ক বইমেলার জন্যও আমি আগ্রহ নিয়ে অপো করি। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলায় প্রকাশক-লেখকরা পয়সার টানে যান, বিশেষ করে প্রকাশকদের এই ধরনের কাজে সরকারি প্রণোদনা থাকা প্রয়োজন। বইমেলা ছাড়াও নিউইয়র্ক বাংলা বই মেলায় যেসব সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় তাও খুব হৃদয়গ্রাহী। এগুলো বাংলা সংস্কৃতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মতামত ব্যক্ত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিগত ৩০ বছর ধরে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বাংলা বইমেলার কথা তুলে ধরে বিশ্বজিত সাহা বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে নিউইয়র্ক বইমেলা আরো সুন্দর ও বড় আকারে করা যাবে। প্রবাসে বাঙালি কৃষ্টি সংস্কৃতির প্রসারে তারা কাজ করে যাচ্ছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

লেখক আনোয়ারা সৈয়দ হক নিউইয়র্ক বইমেলায় তার অংশগ্রহণের স্মৃতিচারণ করেন। বাংলাদেশ রাইটার্স কাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ রবিউল হক বলেন, এই বিশাল আয়োজনের জন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বড় ধরনের একটি তহবিল বানানো দরকার। নিউইয়র্ক বইমেলার আয়োজকরা যে এতোদিন ধরে মেলাটি চালিয়ে যাচ্ছেন এ জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ। উপস্থিত লেখক প্রকাশকদের অনেকেই বই ও অনুবাদের মাধ্যমে বাংলা লেখা প্রসারের ওপর গুরুত্ব দেন। অনুবাদ বই নিয়ে সতর্ক করে দেন বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সাবেক সভাপতি আলমগীর শিকদার লোটন। লেখক সংগঠক আবু সাইদ শাহীন বইমেলা নিয়ে নস্টালজিক স্মৃতিমন্থন করেন। ছোট কাগজ লোক সম্পাদক অনিকেত শামীম নিউইয়র্কে মুক্তধারার আতিথেয়তার প্রশংসা করেন। 

অনুষ্ঠানে প্রকাশকদের মধ্যে সময় প্রকাশনার স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ, অনন্যার মনিরুল হক, বাতি ঘরের জাফর আহমেদ রাশেদ, অঙ্কুর প্রকাশনীর মেসবাহউদ্দীন আহমেদ, শ্রাবণ প্রকাশনার রবীন আহসান, বই ঘরের মাধবচন্দ্র দাস, কাকলী প্রকাশনার একে নাসির আহমেদ সেলিম, আকাশ প্রকাশনার আলমগীর সিকদার লোটন, ধ্রুবপদ পাবলিশিংয়ের আবুল বাসার ফিরোজ এবং ওয়ার্কাস পার্টির প্রকাশনা বিভাগের মাহমুদুল হাসান মানিকসহ অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন। 

উল্লেখ্য, সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির পরিচালক মো. মোবারক হোসেন, ডা. মোহাম্মদ হাসান কবীর, সমীর কুমার সরকার, নুরুন্নাহার খানম, মো. আফজাল হোসেন, জিএম নিজানুর রহমান, ড. মোহাম্মদ হারুন রশিদ, ড. সাইমন জাকারিয়া, বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী নিপু শাহাদাত, লেখক ফারহান ইশরাক, মোজাফফর আহমেদ, বাবুল বিশ্বাস, লেখক স্বকৃত নোমান, ইফাত রূপা জামান, প্রবাসী কবি আবু সাইদ শাহীন, অ্যাকটিভিস্ট আনিসুল কবির জাসির, কবি সোহাগ সিদ্দিকীসহ অনেক গুণীজন।

‘বই হোক বিশ্ববাঙালির মিলন সেতু’ স্লোগান নিয়ে আগামী ২৮, ২৯, ৩০ ও ৩১ জুলাই ২০২২ নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলার ৩১তম আসর বসবে জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন কবি ইউসুফ রেজা।


শেয়ার করুন