২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৫:১৭:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


গণতন্ত্র না থাকলে দেশে বিশৃঙ্খলা হতে বাধ্য : জমির উদ্দিন সরকার
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০২-২০২৪
গণতন্ত্র না থাকলে দেশে বিশৃঙ্খলা হতে বাধ্য : জমির উদ্দিন সরকার বক্তব্য রাখছেন জমির উদ্দিন সরকার


একুশের ভাষা আন্দোলন জনগণকে ‘মাথানত না করা’ শিক্ষা দেয় বলে মন্তব্য করেছে করেছেন জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন,, ‘আইন শাসন, বিচার বিভাগের কথা এখানে কেউ কেউ বলেছেন। যদি দেশে গণতন্ত্র না থাকে, আইনের শাসন না থাকে তাহলে দেশে বিশৃঙ্খলা হতে বাধ্য।’ গত ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে বিএনপির আলোচনা সভায় ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরতে গিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির প্রবীন সদস্য এই মন্তব্য করে। 

তিনি বলেন, ‘বাংলা ভাষার আন্দোলন এটা কোনো গতানুগতিক আন্দোলন ছিল না... এটা আদর্শগত আন্দোলন। আমার মাতৃভাষা বাংলা... এই বাংলা ভাষায় আমি কথা বলি সেখানে আমার ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা না করে অন্য একটা ভাষা উর্দুকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো সেটাকে ছাত্রসমাজ-রাজনীতিবিদ-সাংবাদিক-সাহিত্যক-খেটে খাওয়া মানুষরা প্রতিবাদ করেছিলেন, শুরু হয়েছিলো আন্দোলন। এর উপরে ভিত্তি করেই গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গড়ে উঠেছিলো। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এই ভাষা আন্দোলন আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে, আমরা আমাদের অধিকার আদায় করে নেবো, মাথানত না করা। আমাকে কথা বলতে দিতে হবে, আমার অধিকার আমাকে দিতে হবে, আমার ভাষা আমাকে বলতে হবে- ওই কথা ধরেই ভাষা আন্দোলন, ওই লাইন ধরেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।’

বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদা সম্পন্ন রাষ্ট্র এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেয়া পদক্ষেপসমূহ তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকে আমরা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে চলছি। বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। আজকে জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার যোগ্য উত্তরসূরী তারেক রহমান তিনি বিএনপির হাল ধরেছে। তিনি দেশে আসতে পারছেন না। যদি আইন শাসন দেশে থাকতো তাহলে তিনি আসতে পারতেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হতো না। আজকে আমাদেরকে জনগণের ঘরে ঘরে যেতে হবে এবং সবাই মিলে বলব, বিএনপি মানে হচ্ছে- শান্তি, বিএনপি মানে হচ্ছে গণতন্ত্র, বিএনপি মানে হচ্ছে সাধারণ মানুষের উন্নতি। ইনশাআল্লাহ আবার দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।’

রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে মহান ভাষা ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মাতৃভাষা বাংলা ভাষার জন্য প্রাণ দেয়া- এটা গত শতাব্দীর একটি শ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত যে, একমাত্র জাতি আমরা যারা ভাষার জন্য জীবন দিতে হয়েছে, রক্ত দিতে হয়েছে, সংগ্রাম করতে হয়েছে। কোনো দেশে নিজের ভাষায় কথা বলার জন্য এভাবে জীবন দিতে হয়নি বা নির্যাতিত বা অত্যাচারিত বা কারবরণ করতে হয়নি। পাকিস্তানিরা আমাদেরকে একটি উপহার দিয়েছে শহীদ মিনার। আর আজকে শেখ হাসিনার বদৌলতে ঘরে ঘরে শহীদ মিনার হওয়ার অবস্থা হয়ে গেছে। যদি আপনি গুম-খুনের হিসাব করেন, আপনি যদি ’৭৫ সালের আগ পর্যন্ত দুর্ভিক্ষের কথা চিন্তা করে, বিরোধী নেতা-কর্মীদের হত্যার হিসাব করে তাহলে দেখা যাবে প্রতিটি ঘরে ঘরে শহীদ মিনার ওরা (আওয়ামী লীগ) উপহার দিয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, এখানে ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, ৪৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের প্রতিবাদের মাধ্যমে যে আন্দোলন ‍শুরু হয়েছিলো ’৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছিলো- পরবর্তিতে একাত্তরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আহ্বানে স্বাধীনতা ঘোষণা করে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছিলাম এবং সেই ধারাবাহিকতায় আজকে দেশ স্বাধীন হবার প্রায় ৫৩ বছর পরে এসে বাকি আমরা এমন একটি ক্রান্তিলগ্নে উপনীত হয়েছি যেখানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র মৃত। আজকে যদি বাংলাদেশে গণতন্ত্র না থাকে তাহলে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ শহীদ তাদের প্রশ্নে কি জবাব দেবো? তারা যদি প্রশ্ন করে আজকে এই বাংলাদেশের জন্য কি আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম? যেটা তো হতে পারে না। আসুন আজকে আমরা নতুন করে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে, এদেশের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এদেশে মানুষের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। সেজন্য আমরা রাজপথে ছিলাম, রাজপথে আছি, রাজপথে থাকব। তিনি বলেন, একুশের ফেব্রুয়ারি সেইদিনের যে আত্মদান সেই আত্মদান আমরা বৃথা যেতে দেবো না- এটাই হোক ২০২৪ সালে আজকে বর্তমান স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমাদের শপথ। আপনারা দেখেছেন, বিগত দেড় বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি কি জন্যে? একটি মাত্র উদ্দেশ্যে- সেটা হচ্ছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, লক্ষ্য হচ্ছে, গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিলো। আজকে এই সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে। সেই অধিকার আমাদের ছিনিয়ে আনতে হবে- সেই কারণে আমরা আজকে রাজপথে। 

দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ার‌ম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন