২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৩:০৪:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


মার্কিন কংগ্রেসম্যানের আহ্বান : বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৬-০৬-২০২২
মার্কিন কংগ্রেসম্যানের আহ্বান : বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ান কংগ্রেসম্যান জামি রাসকিন


অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান জামি রাসকিন। ১১৭তম কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে দেয়া এক ভাষণে এই আহ্বান জানান তিনি। এতে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সরকার মৌলিক মানবাধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মার্কিন কংগ্রেসের ওয়েবসাইটে হাউস জুডিশিয়ারি কমিটির সদস্য এবং সিভিল রাইটস ও সিভিল লিবার্টিস সাব-কমিটির চেয়ারম্যান রাসকিনের ওই বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি তার বক্তব্যে বক্তব্যে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আজ আমি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছি। যে মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার মৌলিক মানবাধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার বিপে অব্যাহত হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে ঠিক সেসময় মানবাধিকারকর্মী, সংখ্যালঘু সদস্য এবং সুশীল সমাজের পে আমার সমর্থন ঘোষণা করছি। বাংলাদেশের ‘ক্রম অবনতিশীল’ মানবাধিকার পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ সরকার যে ব্যাপক নিন্দার মুখে পড়েছে তা বক্তব্যে উল্লেখ করেন রাসকিন। তিনি বলেন, ক্রম অবনতিশীল মানবাধিকার পরিস্থিতি, বিপদের মুখে থাকা নৃগোষ্ঠী, নারী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, মানবাধিকার কর্মী এবং শরণার্থীদের রায় ব্যর্থতার জন্য ইতিমধ্যে ব্যাপক নিন্দার মুখোমুখি হয়েছে সরকার। বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টেও উঠে এসেছে। মহামারীর সময়ে মানবাধিকারের লঙ্ঘন আরো বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। 

২০১৮ সালে কার্যকর হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই আইনের অধীনে বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং মানবাধিকারের রকরা নিয়মমাফিক নির্যাতিত হচ্ছেন কারণ, তারা সরকারের অনিয়ম কিংবা নীতির সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে সেগুলোকে রাজনৈতিক সভায় বাধা দেয়া এবং সরকারবিরোধী বিােভ দমিয়ে রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে। মহামারীর সময় নারী এবং নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের বিরুদ্ধেও সহিংসতা বেড়েছে বলে দাবি করেন এই কংগ্রেসম্যান।

বক্তব্যে র‌্যাবের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনার কথাও তুলে আনেন রাসকিন। তিনি বলেন, র‌্যাব এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যায় কার্যক্রম বন্ধে ক্রমাগতভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে সরকার। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয় শতাধিক গুম এবং ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়শোর কাছাকাছি বিচারবহিভর্‚ত হত্যার অভিযোগ উঠেছে র‌্যাব এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে। মূলত বিরোধীদল, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মীরাই টার্গেট হন। 

রাসকিন বক্তব্যে আরো বলেন, আমি যে টম লেন্টস হিউম্যান রাইটস কমিশনের সদস্য, সেটি গত আগস্ট মাসে বাংলাদেশে বিপজ্জনকভাবে গুম বেড়ে যাওয়া নিয়ে একটি ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেছিল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের প্রতিনিধিরা তাতে যোগ দিয়েছিলেন। পাশাপাশি এতে অংশ নিয়েছিলেন ফেসবুকে সরকারের সমালোচনা করায় গ্রেফতার হওয়া আলোকচিত্রী শহীদুল আলম এবং গুম হওয়া বিরোধীদলের নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন। এসব সহিংসতা এবং গুম বাংলাদেশের মুক্তমত, বিরোধীদল এবং সুশীলসমাজের কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন তিনি। 

রাসকিন আরো উল্লেখ করেন, আইনের শাসন, মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকার অবজ্ঞা করার দায়ে গত বছরের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট। কিন্তু জাতিসংঘের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ‘পাল্টা প্রতিশোধমূলক’ জবাব হিসেবে বাংলাদেশ সরকার ভয় এবং হয়রানিমূলক কার্যক্রম বেছে নিয়েছে। গুমের শিকার অন্তত ১০ পরিবারের স্বজনদের বাসায় রাতের বেলা অভিযান চালানো হয় এবং কিছু স্বজনকে তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে গুম করা হয়নি এই মর্মে জোর করে স্বার দিতে বাধ্য করা হয়। বক্তব্যের শেষে তিনি তার সহকর্মীদের বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি আমার সহকর্মীদের বলবো বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ান, বিশেষ করে যারা সাহসী এবং সব থেকে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যাতে জনগণের ‘নাগরিক অধিকারের’ প্রতি সম্মান এবং তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবিলম্বে পদপে নেয়া হয়।

শেয়ার করুন