জোহরান মামদানি
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচন আগামী ৪ নভেম্বর। এ নির্বাচনে তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন-প্রাইমারিতে বিজয়ী ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জোহরান মামদানি, স্বতন্ত্র প্রার্থী এন্ড্রু কুমো। যিনি প্রাথমিক নির্বাচনে জোহরানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। আর রয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির কার্টিস স্লিওয়া। নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশি কমিউনিটিসহ পুরো নিউইয়র্কে উৎসবের আমেজ লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রার্থীরা তাদের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে ভোটারদের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। নির্বাচন ঘিরে অনেক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জরিপ চালানো হয়েছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন নামীদামি মিডিয়ার পক্ষেও জরিপ চালানো হয়েছে। সব জরিপেই জোহরান মামদানি এগিয়ে রয়েছেন। কোনো কোনো জরিপে দেখা যায়, জোহরান মামদানি ২০ শতাংশ বেশি ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।
এদিকে নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জোহরান মামদানির উত্থানকে ‘ঐতিহাসিক এবং অপ্রতিরোধ্য’ বলে খবর প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। তাতে বলা হয়েছে, মাত্র ৩৩ বছর বয়সী এ ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট সিটি মেয়র প্রার্থী আগে নিউইয়র্ক সিটিতে তেমন পরিচিত ছিলেন না। তবে এখন চিত্র ভিন্ন। নির্বাচনে সাবেক গভর্নর এবং সিটির অন্যতম বিখ্যাত রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে জয়লাভের পথে রয়েছেন মামদানি।
জুনের প্রাথমিক নির্বাচনে মামদানি শুধু প্রতিকূলতাকেই হারাননি বরং ১২.৮ পয়েন্টের বিশাল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন। এ জয় দেশের রাজনীতিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রাথমিক নির্বাচনের পর তিনি শহরের ক্ষমতাধর ব্যক্তি, ব্যবসায়িক, শিল্প ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং সংশয়ী স্থানীয় ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে সমর্থন আদায়ের জন্য অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এসব সাক্ষাতে মামদানি নিজেকে এক নতুন ধরনের বামপন্থী হিসেবে তুলে ধরছেন। যিনি শোনেন, নিজের দুর্বলতা বোঝেন এবং পরিবর্তন বিশ্বাস করেন। তিনি পার্টনারশিপ ফর নিউইয়র্ক সিটির মতো বড় ব্যবসায়িক কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এবং রবার্ট উলফের মতো ডেমোক্রেটিক পার্টির গুরুত্বপূর্ণ অর্থ সংগ্রহকারীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ স্থাপন করেছেন। মামদানি তার পূর্বের কিছু অবস্থানের বিষয়ে এখন কিছুটা নমনীয় হয়েছেন। তিনি ভাড়াটেদের সমর্থন করতে চান। তবে বাড়িওয়ালাদের শাস্তি দিতে চান না। তিনি ফিলিস্তিনি অধিকারের পক্ষে থাকলেও ইহুদিবাদ-বিরোধী নন বলে স্পষ্ট করেছেন। পুলিশের বিষয়েও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ছাড় দিয়েছেন, এমনকি তিনি তার মিলিয়নেয়ার ট্যাক্স প্রস্তাব নিয়ে আপস করতেও রাজি। এই পরিবর্তনকে ‘মামদানি ২.০’ বলা হচ্ছে।
মামদানি তার নির্বাচনের মূলভিত্তি হিসেবে সাশ্রয়ী মূল্যের এজেন্ডাকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন। তার প্রধান প্রতিশ্রুতিগুলো হলো, সবার জন্য বিনা খরচে সর্বজনীন শিশুযত্ন সুবিধা দেয়া। সবার জন্য ফ্রি বাস পরিষেবা। শহরের ভাড়া-স্থিতিশীল অ্যাপার্টমেন্টগুলোর জন্য চার বছরের ভাড়া স্থগিত রাখা। তিনি বলেছেন, সঠিক হওয়াটাই নিজের জন্য অর্থহীন যদি না তারা জয়ী হতে পারে এবং জনগণের কাছে ডেলিভার করতে পারে।
মামদানির ব্যক্তিগত জীবন এবং পটভূমি তার রাজনৈতিক পরিচয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তার শিকড় ভারত এবং উগান্ডায়। তিনি একজন মুসলিম। নির্বাচিত হলে তিনি হবেন নিউইয়র্ক সিটির প্রথম মুসলিম মেয়র। তার মা বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মীরা নায়ার এবং বাবা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাহমুদ মামদানি। তিনি হাই স্কুল থেকেই ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সোচ্চার। তার এই বৈচিত্র্যময় পরিচয় এবং ফিলিস্তিনপন্থী অবস্থান অভিবাসীসমৃদ্ধ নিউইয়র্ক সিটির ভোটারদের মধ্যে বিপুল সাড়া ফেলেছে। তার প্রচারণার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক প্যাটরিক গ্যাসপার্ডের মতে, গাজার ইস্যুটি সাধারণ মানুষের কাছে সাশ্রয়, শিক্ষা বা স্বাস্থ্যসেবার মতো অন্যান্য বিষয়ে কথা বলার জন্য একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করেছে।
নির্বাচনী প্রচারে মামদানিকে অনেক আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জোহরানকে মামদানি দ্য কমি বলে অভিহিত করেছেন এবং ভিত্তিহীনভাবে বলেছেন যে মামদানি অবৈধভাবে দেশে আছেন এবং তিনি নির্বাচিত হলে নিউইয়র্ককে কেন্দ্রীয় তহবিল থেকে বঞ্চিত করা হবে। জর্জ ফ্লয়েডের বিক্ষোভের সময় তিনি পুলিশকে তহবিল বন্ধ করো বলে যে টুইট করেছিলেন, তা থেকে তিনি এখন সরে এসেছেন এবং প্রয়োজনে পুলিশ বিভাগের কাছে ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলেছেন। তিনি বর্তমান পুলিশ কমিশনার জেসিকা টিশকে তার প্রশাসনে রেখে দেওয়ার কথাও বিবেচনা করছেন। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলে তাকে গ্রেফতারের যে প্রতিশ্রুতি তিনি দিয়েছেন, তা তার কিছু মিত্র এবং আইনি বিশেষজ্ঞদের কাছে অবাস্তব বলে মনে হয়েছে। তবে তিনি তার এই অবস্থানে অনড়।
মামদানি বিপুল ব্যবধানে এগিয়ে, ভোটারদের আস্থা ও সমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে আসন্ন নির্বাচনের আগে ফক্স নিউজ পরিচালিত সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা গেছে যে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী ও স্বঘোষিত ডেমোক্রেটিক সমাজতান্ত্রিক নেতা জোহরান মামদানি তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে রয়েছেন। ১০ থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত সংগৃহীত জরিপে ভোটারদের বড় একটি অংশ মনে করছেন, মমদানি নগরীর বর্তমান সমস্যাগুলো মোকাবেলায় সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি এবং তিনিই একমাত্র প্রার্থী যিনি শহরে বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারেন। জরিপ অনুযায়ী, এমনকি সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে মমদানির সমর্থন আরও বেশি, সেখানে তিনি ৫২ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি ৫০ শতাংশের ঊর্ধ্বে অবস্থান করছেন, যা কোনো প্রার্থীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মনস্তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক মাইলফলক।
নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ মমদানিকে সমর্থন করছেন, যেখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রার্থী ও সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্র কুমো পাচ্ছেন মাত্র ২৮ শতাংশ এবং রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিওয়া পাচ্ছেন মাত্র ১৩ শতাংশ সমর্থন। এই জরিপে আরও দেখা গেছে, বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস, যিনি ২৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী দৌড় থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, এখনো ২ থেকে ৩ শতাংশ ভোট পাচ্ছেন। যদিও তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, ভোটের ব্যালটে তার নাম থাকবে, কারণ তিনি সময়সীমার পরে সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে কিছু ভোটার তাকে ভোট দেওয়াও অব্যাহত রেখেছেন।
জরিপে আরো বলা হয়েছে, মমদানির সমর্থন সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত আগের জরিপের তুলনায় ৫ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে এবং নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৪ শতাংশ পয়েন্ট বেড়েছে। মমদানির সবচেয়ে দৃঢ় সমর্থন এসেছে খুবই উদারপন্থী (লিবারেল) ভোটারদের কাছ থেকে, যেখানে তিনি ৭৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। ৩০ বছরের নিচে তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার সমর্থন ৬৭ শতাংশ, ডেমোক্রেটিক দলের ভোটারদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ এবং ৪৫ বছরের নিচে নারীদের মধ্যে ৬২ শতাংশ। অন্যদিকে, অ্যান্ড্র কুমোর প্রধান সমর্থকরা হচ্ছেন মধ্যপন্থী (মডারেট) ভোটার ৪৪ শতাংশ, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে বয়সী ভোটার ৪৪ শতাংশ, ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে নারীরা ৪২শতাংশ এবং স্বাধীন ভোটারদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ। ইহুদি ভোটারদের মধ্যে ৪২ শতাংশ কুমোকে সমর্থন করছেন, যেখানে মমদানিকে সমর্থন করছেন ৩৮ শতাংশ এবং সিøওয়াকে ১৩ শতাংশ।
সিøওয়া রিপাবলিকান ভোটারদের ৬০ শতাংশ এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২৪ সালের সমর্থকদের ৫৮ শতাংশ মধ্যে জনপ্রিয়। তবে হোয়াইট ভোটারদের মধ্যে যাদের কলেজ ডিগ্রি নেই, তারা তিন প্রধান প্রার্থীর মধ্যে সমানভাবে বিভক্ত ৩০ শতাংশ করে। অন্যদিকে, অ-শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে মমদানি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছেন, যেখানে ৫১ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার এবং ৫২ শতাংশ হিস্পানিক ভোটার তাকে সমর্থন করছেন।
ভোটদানে আগ্রহ এবং প্রতিশ্রুতির দিক থেকেও মমদানি এগিয়ে রয়েছেন। তার সমর্থকদের ৭৫ শতাংশই অত্যন্ত বা খুবই উৎসাহী বলে জানিয়েছেন, যেখানে সিøওয়ার ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৫৯ শতাংশ এবং কুমোর ক্ষেত্রে মাত্র ৪৩ শতাংশ। তদুপরি, মমদানির ৮৯ শতাংশ সমর্থক বলেছেন, তারা নিশ্চিত যে তারা তাকেই ভোট দেবেন, যেখানে স্লিওয়ার ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৮২ শতাংশ এবং কুমোর ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ।
জরিপে আরো উঠে এসেছে, মমদানির সমর্থকেরা তাকে ভোট দিচ্ছেন ইতিবাচক কারণে, অর্থাৎ তারা মমদানিকে সমর্থন করছেন কারণ তারা তাকে পছন্দ করেন ৮৮ শতাংশ, আর কেবল ১২ শতাংশ বলছেন তারা অন্য প্রার্থীদের বিরোধিতা করেই তাকে ভোট দিচ্ছেন। বিপরীতে, কুয়োমোর ৪০ শতাংশ এবং সিøওয়ার ৩২ শতাংশ সমর্থক বলছেন, তারা তাদের প্রিয় প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন অন্যদের বিরোধিতা করার মানসিকতা থেকে।
নিউইয়র্কবাসীরা শহরের সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অপরাধ ২৫ শতাংশ, জীবনযাত্রার ব্যয় ২০ শতাংশ এবং আবাসন সংকট ১৬ শতাংশ। এরপর ঘরহীনতার সমস্যা ৮ শতাংশ ঘন ঘন উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও এই চিত্রটি সেপ্টেম্বরে প্রায় একই ছিল, তবে কুয়োমোর অপরাধকেন্দ্রিক ভোটারদের মধ্যে আগে যে ১২ শতাংশ পয়েন্টের সুবিধা ছিল, তা এখন হ্রাস পেয়ে মমদানি সেখানে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে গেছেন। একইভাবে, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং আবাসনের সমস্যার ক্ষেত্রেও মমদানি এগিয়ে রয়েছেন।
অবৈধ অভিবাসন শহরের প্রধান সমস্যা বলে মাত্র ৩ শতাংশ ভোটার মনে করেন। তবে আইসের বিতাড়ন নীতির ক্ষেত্রে ৬৬ শতাংশ ভোটার মনে করেন এটি অত্যন্ত কঠোর এবং আগ্রাসী। শহরের বিভিন্ন প্রধান সমস্যাগুলো মোকাবেলায় কে সবচেয়ে উপযুক্ত, এই প্রশ্নে মমদানির বড় ধরনের সুবিধা রয়েছে। অর্থনীতি, আবাসন, কর এবং অপরাধ প্রতিরোধে ৪০-৪৯ শতাংশ ভোটার তাকে শ্রেষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে দেখছেন। তুলনায়, কুমোকে ৩২-৩৩ শতাংশ এবং সিøওয়াকে ১৭-২৬ শতাংশ মনে করছেন যোগ্য।
ব্যক্তিগত গুণাবলির ক্ষেত্রেও মমদানি এগিয়ে আছেন। প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ভোটার মনে করেন, তিনি ‘আপনার মতো মানুষের প্রতি যত্নশীল’, ‘সৎ এবং বিশ্বস্ত’, এবং ‘প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে সক্ষম’। কুমোর ক্ষেত্রে যথাক্রমে-৫৭ শতাংশ, ৫০ শতাংশ এবং ৫৩ শতাংশ ভোটার এই গুণাবলি উল্লেখ করেছেন। স্লিওয়া কিছুটা পিছিয়ে, তবে তারও ৫০ শতাংশের কাছাকাছি সমর্থন রয়েছে এসব গুণে। তবে ‘দৃঢ় নেতৃত্ব’ দেওয়ার ক্ষেত্রে কুয়োমো কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন ৬৩ শতাংশ ভোটার তাকে ‘দৃঢ় নেতা’ মনে করেন, যেখানে মমদানির জন্য এই সংখ্যা ৬১ শতাংশ এবং স্লিওয়ার জন্য ৪৪ শতাংশ।
তিন প্রার্থীর মধ্যে ইতিবাচক মতামত সম্প্রতি বেড়েছে। মামদানি এবং স্লিওয়া উভয়ের অনুকূলে ৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে, কুমোর ক্ষেত্রে ৫ পয়েন্ট। কুমোর জনপ্রিয়তা কিছুটা উন্নত হয়েছে। সেপ্টেম্বরে তার ৫ পয়েন্ট নেতিবাচক ফেভারেবিলিটি ছিল (৪৫ তিন প্রার্থীর মধ্যে ইতিবাচক মতামত সম্প্রতি বেড়েছে)। মামদানি এবং স্লিওয়া উভয়ের অনুকূলে ৮ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে, কুমোর ক্ষেত্রে ৫ পয়েন্ট। কুমোর জনপ্রিয়তা কিছুটা উন্নত হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে তার ৫ পয়েন্ট নেতিবাচক ফেভারেবিলিটি ছিল (৪৫ শতাংশ অনুকূলে, ৫০ শতাংশ বিরোধিতা), এখন তা দাঁড়িয়েছে ২ পয়েন্ট পজিটিভে (৫০ শতাংশ অনুকূলে, ৪৮ শতাংশ বিরোধিতা।
এছাড়া ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা স্থির রয়েছে ২৪ শতাংশে, আর গভর্নর ক্যাথি হোচুল ৫৫ শতাংশ ফেভারেবল রেটিং পেয়েছেন। অক্টোবর ৯ তারিখে বন্ধকী জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস ৫৯ শতাংশ ফেভারেবল রেটিং নিয়ে সবার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। তিনি অক্টোবর ১৪ তারিখে মমদানির প্রচারণা সমাবেশে হোচুলের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে উপস্থিত জনতার কাছ থেকে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা পেয়েছেন। তবে ১১ শতাংশ ভোটার এখনো তাকে চেনেন না, যা তার জন্য চ্যালেঞ্জ হতে পারে। শহরের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও ইতিবাচকতা কিছুটা বেড়েছে। এখন ৪২ শতাংশ মানুষ মনে করেন শহর ঠিক পথে এগোচ্ছে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৩৭ শতাংশ।
একটি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দিক হলো মধ্যপ্রাচ্য ইস্যু। জরিপে দেখা যায়, নিউইয়র্ক শহরের ভোটাররা ইসরায়েলের তুলনায় ফিলিস্তিনের প্রতি বেশি সমর্থন দেখিয়েছেন ৬ পয়েন্ট ব্যবধানে। সেপ্টেম্বরে এই ব্যবধান ছিল ৮ পয়েন্ট। যারা ফিলিস্তিনপন্থী, তারা মমদানিকে ব্যাপকভাবে ৭০ শতাংশ সমর্থন করছেন, আর ইসরায়েলপন্থীরা বিভক্ত ভাবে সমর্থন করছেন কুমো ৩৯ শতাংশ, মমদানি ২৮ শতাংশ এবং স্লিওয়া ২৩ শতাংশ। সব মিলিয়ে, নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। একদিকে মমদানি তরুণ, উদার এবং নীতিগতভাবে উৎসাহী ভোটারদের দৃঢ় সমর্থন নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন, অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা চেষ্টা করছেন ভোটারদের ভিন্ন ভিন্ন অংশকে সঙ্গে রাখতে।