২১ মে ২০১২, মঙ্গলবার, ৬:৫৯:০৯ অপরাহ্ন


গণশাসন চেয়ে রবের ১০ দফা উত্থাপন
বিশেষ প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-১২-২০২২
গণশাসন চেয়ে রবের ১০ দফা উত্থাপন সংবাদ সম্মেলনে জেএসডির নেতৃবৃন্দ


জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির কাউন্সিল উত্তর সংবাদ সম্মেলনে, স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক ও দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, বিদ্যমান গণবিরোধী শাসন ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে প্রজাতন্ত্রের জন্য ’গণশাসন’ প্রবর্তন করার ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তার নিরিখে ১০ দফার রাজনৈতিক প্রস্তাবনা হাজির করা হয়েছে।

প্রচলিত দলকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা, ক্ষমতাকেন্দ্রিক বৈরিতা এবং সংঘাতমুখী প্রবণতাতে  রাষ্ট্র এখন উচ্চ মাত্রার ঝুঁকিতে অবস্থান করছে। জনগণের সম্মতি ও সমর্থন ছাড়া ক্ষমতা ধরে রাখতে গিয়ে সরকার রাষ্ট্রকে দলীয় ও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করে প্রজাতন্ত্রকে শেষ পর্যন্ত কানা গলিতে ফেলে দিয়েছে। ফলে অন্যায়, অবিচার এবং দুঃশাসনে সমাজ বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। রক্তপাত এবং সংঘাত আজ মীমাংসার অযোগ্য হয়ে উঠেছে। 

জাতীয় প্রেসক্লাব আব্দুস সালাম হলে গত ১৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

সংবাদ সম্মেলনে স্থায়ী কমিটির সদস্য তানিয়া রব, এডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ মিয়া, এডভোকেট কে এম জাবির, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী ও এস এম আনসার উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্র সংস্কার রূপান্তরে জেএসডির দশ দফা:

সংবিধান সংশোধন :

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন, দুইবারের অধিক প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ বাতিলকরণ, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থা প্রবর্তন, উচ্চ কক্ষে শ্রম, কর্ম ও পেশার প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা প্রবর্তন, উচ্চকক্ষে প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিকদের ১০ (দশ) জন নির্বাচিত সদস্য অন্তর্ভুক্তকরণ, সাংবিধানিক আদালত গঠন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন, প্রদেশ ও প্রাদেশিক সরকার গঠন, প্রদেশে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপন, ফেডারেল পদ্ধতির সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন, নির্বাচিত প্রার্থী রি-কল পদ্ধতির প্রবর্তন, সংবিধানে গণভোট অন্তর্ভুক্তকরণ।

২. ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা: ফৌজদারি ব্যবস্থার সংস্কার ও আধুনিকীকরণে কমিশন গঠন, গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বন্ধকরণ, তদন্ত ও বিচার সম্পন্নকরণ।

৩. মানবাধিকারের নিশ্চয়তা: জাতিসংঘ গৃহীত মানবাধিকার সংরক্ষণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলকরণ, নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত বিচার ব্যবস্থা প্রবর্তন, গণমুখী পুলিশ বাহিনী প্রবর্তনের লক্ষ্যে পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন।

৪. রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল সংস্কার: দেশ শাসনে শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবী জনগণের অংশীদারিত্বের ব্যবস্থা প্রবর্তন, স্ব-শাসিত ও অংশীদারিত্বমূলক উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, অনুরূপ ব্যবস্থা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত বিস্তৃতিকরণ, ঔপনিবেশিক আইনের অবসান, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকরণ ও যানজট নিরসন, জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল গঠন, স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন, মেট্রোপলিটন সরকার গঠন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বাতিলকরণ।

৫. নিরপেক্ষ নির্বাচন: স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন, প্রশাসন নির্দলীয়করণ, ইভিএম বাতিল, পেপার ব্যালট বহাল রাখা, উচ্চ কক্ষ থেকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন।

৬. প্রজাতন্ত্র দিবস ঘোষণা: রাষ্ট্র বিনির্মাণের আইনগত, নৈতিক ও দার্শনিক নির্দেশনার স্মারক হিসেবে ১০ বা ১৭ এপ্রিলকে ’প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করা। 

৭. প্রতিরক্ষা বাহিনী আধুনিকীকরণ: স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দক্ষ, আধুনিক  দেশপ্রেমিক প্রতিরক্ষা বাহিনী গড়ে তোলা,  জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠন। যুবকদের সামরিক ট্রেনিং প্রদান।

৮. স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থান: জাতীয় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা কমিশন গঠন, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা।

৯. অর্থনীতি : জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিল গঠন, ব্যাংকিংখাতের সংস্কার, পাচারকৃত অর্থ পুনরুদ্ধার, মাইক্রোক্রেডিট কর্মসূচির বাস্তবায়ন, খাদ্য সহায়তা তহবিল গঠন, সামাজিক ব্যবসা স্থাপন, কৃষি খাতের উন্নয়নে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তন, বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং যুগোপযোগী মজুরি কমিশন ঘোষণা।

১০. উপ আঞ্চলিক জোট : সার্ক এর অধীন উপ আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট গঠন করা।

সংবাদ সম্মেলনে  জেএসডির  নব নির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলন শেষে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ শহীদ মিনারে শপথবাক্য পাঠ করেন।

শেয়ার করুন