২১ মে ২০১২, মঙ্গলবার, ০৮:৩১:৫৮ পূর্বাহ্ন


প্রবাসী শেরপুর জেলা সমিতির বর্ণিল ও জমজমাট অভিষেক
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-০২-২০২৩
প্রবাসী শেরপুর জেলা সমিতির বর্ণিল ও জমজমাট অভিষেক বক্তব্য রাখছেন অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন শেরপুর জেলা সমিতি ইউএসএ ইনকের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্ণিল এবং জমজমাট আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রবাসের গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং প্রবাসী শেরপুরবাসীর প্রাণবন্ত উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি গত ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলাদেশি অধ্যুষিত ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেসে অনুষ্ঠিত হয়। দুই পর্বে বিভক্ত এই চমৎকার অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ, আলোচনা এবং শেষপর্বে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি মামুন রাশেন এবং শপথ গ্রহণের পর সভাপতিত্ব করেন নবনির্বাচিত সভাপতি নাহিদ রায়হান লিখন।

কার্যকরি সদস্য লিটন জামানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুইন্স ডেমোক্রেটিক পার্টির লিডার অ্যাট লার্জ এবং বিশিষ্ট আইনজীবী মঈন চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা এবং সাংবাদিক মোহাম্মদ আবুল কাশেম, সংগঠনের উপদেষ্টা হামিদুর রহমান, উপদেষ্টা প্রদোষ চক্রবর্তী, উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফারুক মিয়া, উপদেষ্টা মোহাম্মদ মোসলেম উদ্দিন, নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আহবায়ক মোহাম্মদ ছামেদুল হক ঝন্টু।

নবনির্বাচিত কমিটিকে শপথ বাক্য পাঠ করান সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা এবং সাংবাদিক মোহাম্মদ আবুল কাশেম। নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা হলেন- সভাপতি নাহিদ রায়হান লিখন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ছামেদুল হক ঝন্টু, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আল আমিন, সহ-সভাপতি এস এম আসাদুজ্জামান সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাইছ চৌধুরী, সহসাধারণ সম্পাদক রেখা জামান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ রকিবুল ইসলাম রাসেল, সংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মেহেদী হাসান, সমাজকল্যাণ সম্পাদক সাবিনা ইয়াসমীন, প্রচার সম্পাদক হিশাম হোসেন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ শফিউল আলম সোহাগ, কার্যকরি সদস্য মামুন রাশেদ, মাসুদ পারভেজ মুক্তা, মোস্তফা সাদী, সাবেরা জামান চৌধুরী, শহিদুল আলম, হাসান মুহম্মদ কিবরিয়া, লিটন জামান, শাহিনুর আলম শাহীন, মোহাম্মদ আবু রায়হান ও গৌতম চক্রবর্তী মিন্টু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, আপনারা এসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতিকে লালন এবং পালন করছেন সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ। এই দেশে আমরা যতো বেশি আমাদের সংস্কৃতিকে উপস্থাপন করবো, আমরা ততো বেশি উপকৃত হবো। তা ছাড়া তিনি শেরপুরের উন্নয়নের ব্যাপারে বলেন, উন্নয়ন করতে হলে বা দাবি পূরণ করতে হলে আমাদের মধ্যে ঐক্যের বিকল্প নেই। তিনি বলেন, আমরা যেখানেই থাকি না কেন আমরা বাংলাদেশকে ভালোবাসি। আমাদের নিজ নিজ এলাকাকে ভালোবাসি। ৬৮ হাজার গ্রামকে ভালোবাসি। তিনি মার্টিন লুথার কিংয়ের উক্তিকে উচ্চারণ করে বলেন, বিচারহীনতা এবং ন্যায্য অধিকার না পাওয়াই আমাদের সমস্যা। সুতরাং অধিকার আদায়ে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের উন্নয়নে কাজ করছে। আমরা কোনো দলের জন্য কাজ না করে দেশের জন্য কাজ করি। তাতে আমাদের দেশ উন্নত হবে। তিনি নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমি আপনাদের পাশে আছি এবং আগামীতেও থাকবো।

প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক আব্দুল কাশেম নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন এবং ভালো কাজ করার জন্য বিদায়ী কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শেরপুর বাংলাদেশের একটি অবহেলিত এলাকা। যারা রাজনীতি করেন তারা শুধু প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন করেন না। তিনি বলেন, আমাদের শেরপুরে রেললাইন নেই। কোনো মন্ত্রী-এমপির এই নিয়ে মাথাব্যাথা নেই। আপনারা যদি আমাকে সহযোগিতা করেন, তাহলে এবার প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘে এলে আমরা তাকে স্মারকলিপি দেয়ার চেষ্টা করবো। তিনি বলেন, আমার মতো করে আপনারাও আপনাদের এলাকায় শিক্ষাবৃত্তি চালু করতে পারেন। আমি সাদেক আলী ফাউন্ডেশন করেছি এবং ১ লাখ টাকা এফডিআর করে রেখেছি। তা থেকে যা আসে তা গরিব এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের বিতরণ করছি। এই কাজ আপনাদের কারো নামে ফাউন্ডেশন করে আপনারাও করতে পারেন।

বিদায়ী সভাপতি মামুন রাশেদ সবাইকে স্বাগত জানিয়ে তার সময়ের কর্মকা- তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করি, তারপরই মহামারি করোনার আঘাত। করোনার কারণে আমরা কর্মকা- করতে পারিনি। তবে আমাদের প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ তিনি আমাদের সহযোগিতা করেছেন। তিনি শীতে আমরা শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় কম্বল বিতরণ করেছি। এতিমদের ইফতার করিয়েছি। ঈদে তাদের উপহার দিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের কমিটি তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছি। আগামীতে নতুনদের সহযোগিতা করবো। তিনি বলেন, এখনো কিছু লোক বাইরে আছেন, আমি তাদের আহ্বান করবো চলে আসার জন্য। এ ছাড়া তিনি সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতিতে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন এবং তিনি নবনির্বাচিত সভাপতিকে সংগঠনের গঠনতন্ত্র হস্তান্তর করেন।

নবনির্বাচিত সভাপতি নাহিদ রায়হান লিখন তাকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা ২০০২ সালে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠা করি কিন্তু বড় আয়োজনে এই সংগঠন রূপলাভ করে ২০১৬ সালে। আমাদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এখন আমরা আবার ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নিজেদের সৌহার্দ্য সম্প্রীতি বজায় রেখে সংগঠনকে এগিয়ে নেয়া। জাতীয় অনুষ্ঠান এবং সমাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আমরা সদস্যদের ডাটাবেজ এবং ওয়েবসাইট করতে চাই। সেই সঙ্গে শিক্ষাবৃত্তি চালু করে নিজ নিজ এলাকার উন্নয়ন করকে চাই। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়ার ব্যাপারে।

নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম শেরপুরবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে এই সংগঠনকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় বক্ত করে এবং শেরপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে অন্যদর মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা প্রদোষ চক্রবর্তী, হামিদুর রহসান, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান, ভাইস প্রেসিডেন্ট আল আমিন, সহসাধারণ সম্পাদক নরেখা জামান চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ রকিবুল ইসলাম রাসেল, রানা রায়হান, প্রবাস সম্পাদক মোহাম্মদ সাঈদ প্রমুখ।

প্রধান অতিথি এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় নাফিজা আঞ্জুম ও মোমিন হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন ফারহা আক্তার সুমনা।

শেষপর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে নীলিমা শশি। তিনি জনপ্রিয় গানগুলো পরিবেশন করে সবাইকে মাতিয়ে রাখেন।

শেয়ার করুন