০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৯:৩২:২১ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


বর্ষীয়ান রাজনীতিকরা নিষ্ক্রিয় কেন?
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৭-২০২৩
বর্ষীয়ান রাজনীতিকরা নিষ্ক্রিয় কেন? আওয়ামী লীগের তিন বর্ষীয়ান নেতা- তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী ও আমির হোসেন আমু


জনমনে প্রশ্ন দেশের বর্তমান জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকা রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকারি দলের পোড় খাওয়া ঝানু প্রবীণ রাজনীতিবিদরা নিষ্ক্রিয় কেন? তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, মতিয়া চৌধুরীর কোনো ভূমিকা নেই কেন? অবশ্য এ নিয়ে গুঞ্জন আছে। ক্ষমতাসীন দলে কতিপয় পোড় খাওয়া নেতাদের কিছুটা দূরে দূরে অবস্থান করতেই দেখা যায়। বর্তমান সরকার প্রধানের বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে ওইসব নেতাদের অবদান অনেক। তাদেরও মূল্যায়ন কম করা হয়নি। কিন্তু বর্তমান সময়ে ক্ষমতাসীনরা বিভিন্নভাবে যখন কোণঠাসা, ক্রমাগত আন্তর্জাতিক চাপে বিপর্যস্ত। সে সময় সিনিয়র নেতাদের নিষ্ক্রিয়তা চোখে লাগার মতো। 

বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকেই এক ধরনের চাপা ক্ষোভ যেন সিনিয়র নেতাদের মধ্যে। অনেকেই সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের স্থানে এসব নেতা নিজেদের ভাবছিলেন। কিন্তু আলোচনার বাইরে থাকা একজন এখন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। মো. সাহাবুদ্দিন। প্রধানমন্ত্রীর চয়েস তিনি। জনশ্রুতি রয়েছে এ সিদ্ধান্ত সরকারি দলের সিনিয়র অনেক নেতাদের পছন্দ হয়নি। যদিও তারা প্রকাশ্যে তারা কিছুই বলেননি। তবু তারা নিজেদের এ মুহূর্তে ওই পদের জন্য ভেবেছিলেন। সেটা না হওয়া অবশ্য অনেকের জন্যই ছিল বিস্ময়ের। তবে প্রধানমন্ত্রীর চয়েস বলে কথা। বুঝে শুনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। মানতেই হবে। তাই হয়তো চুপ। কিন্তু এটা সত্যিকারে দলকে পছন্দ করে। আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করে, তাদেরকে ভীষণ পীড়া দেয়। কারণ ওইসব সিনিয়র নেতাদের অনেক অবদান। তাদের মনঃক্ষুণœ হওয়া বা নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া সমীচীন নয়, সেটা যে কেউই বলবে।  

ক্রমাগত তিন টার্মে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের অর্জন আছে অনেক। কিন্তু কিছু কিছু অগণতান্ত্রিক আচরণের কারণে জনমনে বিক্ষোভ আছে। জনগণ মুক্ত পরিবেশে নিরপেক্ষভাবে ভোটদানের সুযোগ পেলে ক্ষেত্রবিশেষে জনবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয়ে শঙ্কা আছে। জনগণের সামনে বিকল্প না থাকলেও সরকারি দল বিপদে পড়তেও পারে। আওয়ামী লীগের হয়ে মাঠে ময়দানে সক্রিয় অনেকের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। সরকারের দেশ শাসন নানা বিষয়ে দেশে-বিদেশে অনেক প্রচার অপপ্রচার আছে। মূলধারার রাজনীতিবিদদের আড়ালে রেখে ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া সুবিধাবাদী কিছু মানুষ সরকার প্রধানকে বিদ্যমান অবস্থায় খুব একটা কার্যকরি সহায়তা দিতে পারবে বলে মনে হয় না। সরকার কিন্তু নিজের পরিকল্পনা মোতাবেক আগামীর নির্বাচন করতে পারবে না। ২০১৮ এবং ২০২৩ বিশ্ব পরিস্থিতি কিন্তু অনেক ব্যবধান।  

মাঠে-ময়দানে প্রতিনিয়ত সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বার্থের সংঘাত দৃশ্যমান।  নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে এটি প্রকট হবে। অনেক সুবিধাবাদী মহল এখন থেকেই কেটে পড়ার সুযোগ খুঁজছে। প্রকৃত মেধাবীদের বঞ্চিত করে এতোদিন যে আমলাদের সরকার সামনে এনেছে তারাও এখন বিপরীতমুখী। হয়তো সরকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যমে মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি বিষয়ে অবগত। তৃণমূলে কোণঠাসা মানুষগুলোর মতামত প্রাধান্য দিয়ে সরকার প্রধান মনোনয়ন না দিলে সরকারি দলের ভরাডুবি হতে পারে। পুলিশ আর প্রসাশন সংগত কারণেই নিরপেক্ষ থাকতে বাধ্য হবে। 

আমি মনে করি, ২০২৪-২০২৮ বাংলাদেশের জন্য কঠিন সময়। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক সংকট, জ্বালানি সংকট বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে বিশাল চ্যালেঞ্জ ফেলবে। দেশে দক্ষ, দেশপ্রেমিক জনঘনিষ্ঠ সরকার না থাকলে সব উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে। আমি দেশের স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠীকে সচেতন এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন