২০ মে ২০১২, সোমবার, ৬:৪৯:২৯ পূর্বাহ্ন


জি এম কা‌দেরের বিস্ফোরক মন্তব্যের নেপথ্যে
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-০৫-২০২৪
জি এম কা‌দেরের বিস্ফোরক মন্তব্যের নেপথ্যে জি এম কাদের


তিন বি‌দে‌শি শ‌ক্তি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ‌কে ক্ষমতায় রাখতে কাজ ক‌রে‌ছিল বলে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)’র পক্ষ থেকে চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দের যে বক্তব্য রেখেছেন তা-কে স্ব-বিরোধী হিসাবে দেখা হচ্ছে দলেরই ভেতরে। এর পাশাপাশি কারো কারো অভিমত দলে নিজের একচ্ছত্র নেতৃত্বকে পোক্ত করার পাশাপাশি অতীতে জি এম কা‌দেরের বিভিন্ন ধরণের ভূমিকাতে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীদের ভুলিয়ে দিতে এমন মনগড়া বক্তব্য দিচ্ছেন তিনি। 

জাতীয় পার্টি (জাপা)’র বক্তব্য

দ‌লের তৃণমূ‌লের নেতা‌দের মতামত উপেক্ষা ক‌রে কে‌নো নির্বাচ‌নে অংশ নিয়েছিলেন তা জা‌নাতে গিয়ে অনেক স্পর্শকাতর বক্তব্য দিয়ে ফেলেছেন জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দের। বলেছেন, আমি আগেই বুঝেছিলাম বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না। আরো বলেছেন, তিন বিদেশি বড় শক্তি আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। তাই দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কিনা সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। গত ২৭ এপ্রিল শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ব‌র্ধিত সভায় এসব কথা ব‌লেন বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কা‌দের। 

জি এম কা‌দেরের বক্তব্যে স্ববিরোধিতা

চলতি সপ্তাহের শনিবারে জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দেরের পক্ষ থেকে দেয়া বক্তব্যে স্ব-বিরোধী অনেকটা গা-বাঁচানোর জন্য বক্তব্য দেয়া হয়েছে বলে মনে করেছেন অনেকে। তাদের মতে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনোভাবেই জাপা অংশ নিচ্ছে না-এমনটা অনেকেরই ধারণা ছিল দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে। ৭ জানুয়ারি এই নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয়। মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ সমমনারা এই নির্বাচন বর্জন করে। জাপা’র নেতাকর্মীদের বিশ্বাস ছিল এই নির্বাচন বর্জন করলে রাজনৈতিক মাঠে জাপা অন্যরকম ইমেজ তৈরি করতো, দলটির ইতিহাস অন্যরকম হতো। মুছে যেতো দলটির অতীত সব কর্মকান্ডের কথা। দলের বিরুদ্ধে স্বৈরাচার সরকারের দ্বারা তৈরি-এমন দুর্নাম ঘুচাতে পরতো। আরেকটু আগ বাড়িয়ে অনেকে বলে থাকে জাতীয় পার্টিকে রাজনৈতিক অঙ্গনে অন্যতম শক্তিশালি বিরোধী দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করা যেতো, এর পাশাপাশি দলটি যে ভবিষ্যতে ক্ষমতা যাওয়ার অবস্থা রয়েছে সে ধারণাও নেতাকর্মীদের মধ্যে পোক্ত হতো।

ওই সময় দলটির বনানীর কার্যালয়ে গিয়ে অর্থাৎ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনে দেশ পত্রিকার এই বিশেষ প্রতিনিধি সরজমিনে গিয়ে সেখানে দেখেছেন এক ভিন্ন জাপাকে। সকাল থেকেই বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করছিল দলটির নেতা-কর্মীরা। বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীদের একটি অংশ নির্বাচন বর্জনের দাবি জানিয়ে মিছিল করে। তাঁরা ‘দালালি না রাজপথ’, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ নয়, বর্জন বর্জন’ স্লোগান দিয়ে পার্টি অফিস চত্বর মুখরিত করে রাখেন। ১৭ ডিসেম্বরে এদিনে এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা বনানীর কার্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান নিয়ে নেয়। ওইদিন বেলা সোয়া ১১টার দিকে কার্যালয়ে পৌঁছান জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তার আগে ও পরে কার্যালয়ে আসেন দলের মহাসচিব মুজিবুল হক, সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সালমা ইসলাম ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান। এই সময়ে গণমাধ্যমকর্মীরা জাপার মহাসচিব মুজিবুল হককে একটু দাঁড়িয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় জি এম কাদের বলেন, ‘ভিক্ষার সিট আমি নেব না।’ 

এ কথা বলে তিনি তাঁর কক্ষে চলে যান। কিন্তু সব ছাপিয়ে জাতীয় পার্টি ২৮৩টি আসনে ভোটে অংশ নেবে বলে জানিয়ে দেয় ঐ দিনই দলের মহাসচিব মুজিবুল হক। ঐদিন বিকাল সাড়ে তিনটার পর দলের চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। মুজিবুল হক বলেন, ‘কোনো জোট হয়নি। আসন সমঝোতা হয়নি। তবে কিছু আসনের ক্ষেত্রে কিছু কৌশল রয়েছে।’ জাপার শীর্ষ নেতাদের বিশেষ করে জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দেরের এমন আচরণে দলের নেতাকর্মী হতাশ হয়ে যান। হয়ে উঠেন বিক্ষুদ্ধ। আর সেই বিক্ষুদ্ধ অবস্থার রেশ আজ কাটেনি। চলতে থাকলো দলের মধ্যে নানান ধরনের কানাঘুষা। আর এমন পরিস্থিতির কারণে দলটি করুণ পরিণতিতে গিয়ে গড়ায়। আবারও ভাগ হয়ে যায় জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)। মার্চে ঢাকায় সম্মেলন করে জাপার নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করেছেন রওশনপন্থীরা। এর মধ্য দিয়ে আরেকটি ‘ব্র্যাকেটবন্দী’ জাপার নেতা হলেন রওশন এরশাদ।

প্রশ্ন হলো দলের অস্তিত্ব কি রক্ষা পেলো?

শনিবারে জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দেরের দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কিনা সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। ৭ জানুয়ারির নির্বাচ‌নে মাত্র ১১ আসন পে‌য়ে‌ছে জাপা। দল‌টি আনুষ্ঠা‌নিকভা‌বে ভেঙেছে। কিন্তু এখন তো জাপার নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করেছেন রওশনপন্থীরা। রওশন এরশা‌দের নেতৃত্বে আরেকটি জাতীয় পা‌র্টি গ‌ঠিত হ‌য়ে‌ছে। জি এম কাদেরের দল থে‌কে দুই কো চেয়ারম‌্যানসহ ক‌য়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা রওশ‌নের জাপায় চ‌লে গে‌ছেন। তাহলে অবস্থা কি দাঁড়ালো? দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখা গেলো? নাকি অস্তিত্ব সঙ্কটে রাখা হলো? অস্থিরতা দেখা দিলো জাপায়? এবং এটা আরো কোথা নিয়ে ঠেকায় তা দেখার বিষয়। 

জাপা কি আর ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে?

জাতীয় পার্টি (জাপা)’র পক্ষ থেকে চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দের বলেছেন, তিন বিদে‌শি শ‌ক্তি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ‌কে ক্ষমতায় রাখ‌তে কাজ ক‌রে‌ছিল। তিনি দাবি করেছেন, আন্দোলন চলাকালে তৃতীয় শক্তি এসে সরকার পরিবর্তন করে, এমন ইতিহাস বাংলা‌দে‌শে নেই। ফলে, বিএনপির ১ কিংবা ১০ লাখ বা ১ কোটি লোক নিয়ে রাস্তায় নামলেও বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, তা বুঝ‌তে পেরেছিলাম। আবার তিনি বলেছেন, নির্বাচন বন্ধ করে কোনো দেশে সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়। তাই জাতীয় পার্টি নিয়মতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করছে। নির্বাচনের আগে বর্ধিত সভায় নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মতামত দেওয়া হয়েছিল। ভোটে না গেলে ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রাখা যাবে কী না সন্দেহ ছিল, তাই নির্বাচনে গিয়েছি। প্রশ্ন হচ্ছে তিন বি‌দে‌শি শ‌ক্তি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ‌কে ক্ষমতায় রেখেছে বা থাকতে সাহায্য করেছে। তা-হলে ভবিষ্যতে তো নির্বাচনের মাধ্যমে না কয়েকটি দেশ মিলে কাউকে বসিয়ে দিলেই বাংলাদেশে ক্ষমতায় থাকা যাবে। বিষয়টি কি এমন? তা হলে ভবিষ্যতে জাপা ক্ষমতায় যাওয়া বা বেশি আসনে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল-ই বা হবে কিভাবে? প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জাপা চেয়ারম্যান কি জানতেন, ‘২৬ জন নয় আরো কম সংখ্যক এমপি (সংসদ সদস্য) বানানোর জন্য এক ধরনের সমঝোতা মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশ নেন? আর সে সমঝোতাতে কি অংশ হিসাবে ৭ জানুয়া‌রির নির্বাচ‌নে মাত্র ১১ আসন পে‌য়ে‌ছে জাপা-এমন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। 

প্রশ্নবিদ্ধ করলো দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে

বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ বা সুষ্ঠু হয়নি বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণ এবং গণতন্ত্র, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার প্রতি তাদের আকাঙ্খাকে সমর্থন করে। যুক্তরাষ্ট্র লক্ষ্য করেছে, ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়লাভ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিরোধী দলের হাজার হাজার সদস্যকে গ্রেপ্তার এবং নির্বাচনের দিন অনিয়মের খবরে উদ্বিগ্ন।বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মানদন্ড অনুযায়ী হয়নি বলে অভিমত দিয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্বাচনের পরপরই এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছে। এসব কারণে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে তিন বি‌দে‌শি শ‌ক্তি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ‌কে ক্ষমতায় রাখ‌তে কাজ ক‌রে‌ছিল বলে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)’র পক্ষ থেকে চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দের যে বক্তব্য রেখেছেন তা কি সঠিক? যদি তাই হয় তাহলে কি ভোট ছাড়াই বা হাজার কোটি টাকা খরচ করে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কি ছিল জাস্ট একটা উপলক্ষ্য? পর্দার আড়ালে তাহলে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের থাকা না থাকা নির্ভর করে? অন্যদিকে পশ্চিমারা যে বলেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মানদণ্ড অনুযায়ী হয়নি-তা কি সঠিক? কারণ জি এম কা‌দেরের বক্তব্য বিশ্লেষণ করলে তো তা-ই ফুটে উঠে। পরিষ্কার হয়ে যায় নির্বাচনই হয়নি। তিনটি প্রভাবশাশী দেশ কলকাঠি নেড়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। জি এম কা‌দেরের এমন বক্তব্যে কি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও আওয়ামী লীগের ক্ষমতা গ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়লো না? এমন প্রশ্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। 

আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া

তিন বি‌দে‌শি শ‌ক্তি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ‌কে ক্ষমতায় রাখ‌তে কাজ ক‌রে‌ছিল বলে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা)’র পক্ষ থেকে চেয়ারম্যান জি এম কা‌দের যে বক্তব্য রেখেছেন তা আওয়ামী লীগকে বড়োই বেকায়দায় ফেলেছে। করেছে বিব্রত। আর একারণে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। জাতীয় পার্টি কোন কারণে, কাদের চাপে নির্বাচনে এসেছে তা জানতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জাতীয় পার্টি ‘বিদেশি চাপ ও দল ভাঙার হুমকির মুখে’ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে-পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ২৮ এপ্রিল রোববার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি বিদেশি শক্তির কথা বলছেন, তিনি সেই চাপটা অনুভব করছেন কি না জানি না। কারণ তাদের জন্ম তো বন্দুকের নলে। তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় আসেননি। বাংলাদেশে ৪২ শতাংশ লোক ভোট দিয়েছে। খুন-খারাবি কিছু হয়নি। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হয়েছে। আমরা এখানে কোনো বিদেশি শক্তির চাপ অনুভব করিনি। তিনি কোন কারণে, কার চাপে ইলেকশনে এসেছেন সেটা তাকেই বলতে বলুন। ওবায়দুল কাদেরের এমন তীর্ষকপূর্ণ মন্তব্যে বোঝা যায় ক্ষমতীনরা কতটা বিব্রতবোধ করছেন জি এম কাদেরের এমন বক্তব্যে। 

আসলে কি?

শ‌নিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে জাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ব‌র্ধিত সভায় বিরোধীদলীয় নেতা জি এম কা‌দের আসলে এসব বক্তব্য দিয়ে রাজনৈতিক মহলে একটা নতুন বির্তক তৈরি করতে চান। আবার রওশন এরশা‌দের নেতৃত্বে যে আরেকটি জাতীয় পা‌র্টি গ‌ঠিত হ‌য়ে‌ছে তার অগ্রযাত্রাও রুখতে চান তিনি। অন্যদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেভাবে নাটকীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল তার পেছনে ছিলো একটি প্রতিবেশি দেশ। সেই দেশটি কলকাঠির বলির পাঠা হয়েছেন কি-না তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শেষ নেই। জি এমন কাদের কি এটা ছাই দিয়ে চাপা দিতে চান? কেননা বাহিরে গুঞ্জন ছিল জাপা এবার সংসদ বেশি আসন নিয়ে একটি শক্তিশালি বিরোধী দল হতে যাচ্ছে। আবার কারো মতে, জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ আছে ত্যাগি নেতাকর্মীদের। তা-হলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে নেতাকর্মীদের অনুরোধ উপেক্ষা করে অংশ নেয়ার পাশাপাশি দলের প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা অর্থ বরাদ্দ না থাকায় তারা ভীষণ ক্ষুব্ধ জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ বেশ কয়েকজনের ওপর। এমন ক্ষোভ, রোষাণল থেকে বাঁচতেই দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের আরেকটি নতুন নাটক শুরু করেছেন কি-না সে প্রশ্নও আছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এত্তোসব প্রশ্ন, চাপা ক্ষোভের পাশাপাশি দলের হাল তার হাতেই রেখে রওশনপন্থীদের শায়েস্তা করতে মনগড়া বক্তব্য দিয়ে নজর কাড়তে চান জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দের। আর তাই এসব বিস্ফোরক মন্তব্য ছাড়ছেন। তবে এপর্যায়ে জাতীয় পা‌র্টির (জাপা) চেয়ারম‌্যান জি এম কা‌দেরের এমন রাজনৈতিক নাটক কতটা হালে পানি পাবে, তা দেখার বিষয়-এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কেননা তার বক্তব্য অনেক জায়গায় আঘাত করেছে। অনেক বিষয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

শেয়ার করুন