২৯ জুন ২০১২, শনিবার, ০৭:৫০:৩৫ অপরাহ্ন


তিস্তা প্রকল্পে চীন নয় ভারত
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৬-২০২৪
তিস্তা প্রকল্পে চীন নয় ভারত


তিস্তার পানি বন্টনে আগ্রহ শুণ্য ভারত আগ্রহ দেখাচ্ছে তিস্তায় বাংলাদেশের অংশে যে মহাপরিকল্পনা করেছে চীনের সহায়তায় সেটা বাস্তবায়নে। বাংলাদেশও ইতিমধ্যে ভারতের আগ্রহে ইতিবাচকই দেখছে। দিল্লি সফর শেষে বাংলাদেশে ফিরে এমন আভাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে চীন এ মহাপরিকল্পনায় পেছনে পড়লো। গত ২৫ জুন মঙ্গলবার ভারত সফর প্রসঙ্গে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্প বাস্তবায়নে দেশ ও জনগণের জন্য যে প্রস্তাব সবচেয়ে বেশি লাভজনক তা গ্রহণ করবে। তিনি বলেন, ‘আমরা তিস্তা প্রকল্প নিয়েছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীন ও ভারত আলাদা আলাদা প্রস্তাব দিয়েছে। আমাদের দেশের জনগণের জন্য কোন প্রস্তাবটি অধিক লাভজনক ও উপযোগী হবে সেটাই আমরা গ্রহণ করবো।’

প্রধানমন্ত্রী গত ২৫ জুন মঙ্গলবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক দ্বিপাক্ষিক ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে চীন আমাদের প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতও দিয়েছে। আরও প্রস্তাব এসেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবশ্যই আমরা বিবেচনা করবো, কোন প্রস্তাবটি গ্রহণ করলে তা আমার দেশের মানুষের কল্যাণে আসবে সেটাই আমি গ্রহণ করবো। কোন প্রস্তাবটা নিলে কতটুকু ঋণ নিলাম এবং কতটুকু আমাদের পরিশোধ করতে হবে, কতটুকু দিতে পারবো-এসব কিছু বিবেচনা করেইতো আমাদের করতে পরিকল্পনা নিতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, সে ক্ষেত্রে ভারত যেহেতু বলেছে তারা করতে চায় এবং টেকনিক্যাল গ্রুপ বানাবে, তারা অবশ্যই আসবে। আমরা যৌথভাবে সেটা দেখবো। চীন একটা সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ভারতও একটা করবে এবং এটার পর আমাদের কাছে যেটা সবচেয়ে বেশি প্রহণযোগ্য ও লাভজনক মনে হবে আমরা সেটাই করবো। শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু ভারতের কাছে আমাদের তিস্তার পানির দাবিটা অনেক দিনের সেক্ষেত্রে ভারত যদি আমাদের তিস্তা প্রকল্পটি করে দেয় তবে আমাদের সব সমস্যারই সামাধান হয়ে যায়। তাহলে সেটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে সহজ হলো-আপনারা নিজেরাই বিবেচনা করে দেখেন। তিনি বলেন, কাজেই ভারত যখন এগিয়ে এসেছে আমরা এটাই মনে করি যে ভারতের সাথে যদি আমরা এই তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করি তাহলে আমার দেশের পানি নিয়ে প্রতিদিন সমস্যায় পড়তে হবে না। আমরা সেই সুবিধাটা পাব।

প্রধানমন্ত্রী দেশের জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্র নীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়,’ এর প্রসঙ্গ টেনে অপর এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমিতো এখানে কোন সমস্যা দেখি না। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি যখন আমাকে তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে যাবার দাওয়াত দিলেন, আমরা গেলাম। তারপর তিনি রাষ্ট্রীয় সফরের দাওয়াত দিলেন, সে সফরও করে আসলাম। চীন আমাকে দাওয়াত দিয়েছে আমি চীনে যাব। আমার বাংলাদেশ সার্বভৌম দেশ এবং সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়েই আমি চলবো। কার কি সমস্যা সেটা তাদের সঙ্গে থাক আমার নয়, আমার দেশের মানুষের কতটুকু উন্নতি করতে পারি সেটাই আমার লক্ষ্য। ভারত বাংলাদেশের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তারাও বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল।

উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে ২১ ও ২২ জুন নয়াদিল্লি সফর করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফরউল্লাহ, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

শেয়ার করুন