৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১০:১৮:২২ অপরাহ্ন


অন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সংলাপ চান মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-০৮-২০২৪
অন্তবর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে সংলাপ চান মির্জা ফখরুল


‘জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তবর্তীকালীন সরকারের অতিদ্রুত সংলাপ চান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার দুপুরে এক আলোচনা থেকে বিএনপি মহাসচিব অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রতি সংলাপের আহ্বান জানি্য়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘ অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা মনে করি তারা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন। এই সরকারের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে, জনগনের আস্থা রয়েছে, সকলেরই আস্থা আছে। কিন্তু অবশ্যই সেটা(নির্বাচন অনুষ্ঠান) সীমিত সময়ের মধ্যেই করতে হবে, একটা সময়ের মধ্যে করতে হবে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই করতে হবে। তা না হলে যে উদ্দেশ্যে সেই উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ব্যাহত হবে।”

‘‘ আমি আবার রিপিট করতে চাই যে, অবশ্যই অতিদ্রুত জনগনের যে চাহিদা সেই চাহিদাকে পুরণ করবার জন্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে একটা নির্বাচন দ্রুত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায় সেজন্য এই অন্তর্বতীকালীন সরকার কাজ করবেন বলে আমরা প্রত্যাশা করি।”

ফখরুল বলেন, ‘‘ আমি নির্বাচন কথাটার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে সংস্কারের বিষয়টা এসেছে, সবসময় আসছে সেই সংস্কারের জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেটা কিভাবে আসবে? সেটা আসবে একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেটা আসতে হবে।এর কোনো বিকল্প নেই।”

‘‘ সুতরাং কয়েকজন ব্যক্তি একটা সংস্কার করে দিলেন এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি জনগনের অংশগ্রহনের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেই সংস্কার আসতে হবে।”

‘অন্তর্বতীকালীন সরকারের রোডম্যাপ চাই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা বিশ্বাস করি, এ্খন যারা ইন্টারিয়াম গর্ভামেন্টে কাজ করছেন তারা সবাই আন্তরিক, যোগ্য মানুষ। কিন্তু আমরা এটাকে আরও ভিজিয়েবল দেখতে চাই, আরও দৃশ্যমান দেখতে চাই।”

‘‘ আমরা দেখতে চাই যে, প্রধান উপদেষ্টা তিনি অতিদ্রুত জনগনের সামনে তিনি কি করতে চান তা উপস্থাপন করবেন। একটা রোডম্যাপ দেবেন যে, কিভাবে তিনি অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, কিভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ঘটিয়ে তারা জনগনকে স্বস্তি দিয়ে সামনের দিকে ‍এগুবেন নির্বাচন করার জন্য্।”

সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ভাসানী অনুসারী পরিষদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়। ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট তিনি মারা যান।

‘সংলাপের প্রয়োজনীয়তা কেনো’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এখন পর্যন্ত এই সরকারের সত্যিকার অর্থে কোনো এজেন্ডা ভিত্তিক কোনো আলোচনা হয়নি। রাজনীতি ছাড়া তো এটা হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত তো আনতে হবে।”

‘‘ রাজনীতি এই জায়গাটাই রাজনীতি… যে জায়গায় তারা বসে আছেন ইন্টারিয়াম গর্ভামেন্টের এটাই হচ্ছে রাজনীতির জায়গা। কারণ এখান থেকে তো দেশের সব কিছু অফিশিয়ালি চালিত হবে। সুতরাং যারা রাজনীতি করছেন তাদের সাথে অবশ্যই মতবিনিময় করতে হবে।’”

তিনি বলেন, ‘‘ ছা্ত্র নেতৃবৃন্দ যারা আজকে সহযোগিতা করছেন তাদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে এই বিষয়গুলোকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়ে এই বিপ্লবকে যেন সুসংহত করা যায়, প্রতিবিপ্লব যেন না ঘটে। ইতিমধ্যে যে চক্রান্তের কথা-বার্তা উঠে আসছে আমাদের মধ্যে সেগুলোকে যেন প্রতিহত করা যায়, সেই গুলোতে পরাজিত করে বিপ্লবের চেতনাকে যেন আমরা সমুন্নত রেখে একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সেই বিষয়ে তাদেরকে সজাগ থাকতে হবে।”

 ‘অন্তর্বতীকালীন সরকারের রোডম্যাপ চাই’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা বিশ্বাস করি, এ্খন যারা ইন্টারিয়াম গর্ভামেন্টে কাজ করছেন তারা সবাই আন্তরিক, যোগ্য মানুষ। কিন্তু আমরা এটাকে আরও ভিজিয়েবল দেখতে চাই, আরও দৃশ্যমান দেখতে চাই।”

‘‘ আমরা দেখতে চাই যে, প্রধান উপদেষ্টা তিনি অতিদ্রুত জনগনের সামনে তিনি কি করতে চান তা উপস্থাপন করবেন। একটা রোডম্যাপ দেবেন যে, কিভাবে তিনি অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, কিভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো ঘটিয়ে তারা জনগনকে স্বস্তি দিয়ে সামনের দিকে ‍এগুবেন নির্বাচন করার জন্য্।”

‘বিগত সরকারের দোসর সচিবরা সরানোর দাবি’

‘‘ আমরা দেখতে চাই না যে সমস্ত ব্যক্তিরা হাসিনার (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর) পাশে থেকে, তার সঙ্গে থেকে, তার দোসর হয়ে তারা মানুষের ওপরে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছেন, লুটপাট করেছেন, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদেরকে আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের আশে-পাশে দেখতে চাই না। পত্রিকায় যখন ছবি দেখি যে, এই সমস্ত লোকেরা আবার সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করছেন তখন আমরা উদ্বিগ্ন হই।”

‘‘আমরা খুব চিন্তিত হই যে, আজকে ১৬/১৭ দিন হয়েছে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত সেক্রেটারিরা ওই সরকারকে এতোদিন ধরে চালিয়েছে, তাদের সমস্ত কুবুদ্ধিগুলো দিয়েছে তারা এখনো এই সরকারের সচিবের দায়িত্ব পালন করছে… এটা আমরা এটা দেখতে চাই। আমরা দেখতে চাই যে, অবিলম্বে এই বুরোক্রেসিতে যারা প্রো-পিপল আছেন, যারা জনগনের সাথে সস্পৃক্ত আছেন সেই আইন মেনে তাদেরকে এই সরকারের পাশে দেখতে চাই। একথা গুলো আমরা বলতাম না। বলতে বাধ্য হচ্ছি এজন্যে যে, আমরা সেগুলো দেখতে পারছি না।”

তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেয়া হয়নি। অথচ আগের ভাইস চ্যান্সলরগুলো রিজাইন করেছেন। আমরা দেখতে চাই যে, ভাইস চ্যান্সলর নিয়োগ দেয়া হচ্ছে যাদের সকলের কাছে গ্রহনযোগ্যতা আছে।”

‘‘ আমরা দেখতে চাই আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে তারা অত্যন্ত সচেতন। এ ব্যাপারে তাদেরকে সর্বাত্মক সহেযোগিতা দিয়েছি, দেবো।”

প্রয়াত কাজী জাফর আহমেদ দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের প্রতি তার অঙ্গীকারের নানা কথা তুলে ধরে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপি মহাসচিব।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপির নূর মোহাস্মদ খান, জহির উদ্দিন স্বপন, নজমুল হক নান্নু, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।



শেয়ার করুন