পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হারানো এক সময় ছিল দুঃসাহসিক। ভারত, ইংল্যান্ড,অস্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড, দক্ষিন আফ্রিকা, ওয়েস্টইন্ডিজের মত দল সমুহের এমন অনেক আক্ষেপ।
বাংলাদেশ সেই অসাধ্য সাধন করলো। টেষ্ট স্ট্যাটাস লাভের পর কখনও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতে যেখানে টেষ্টম্যাচই জিততে পারেনি যেখানে, সেই বাংলাদেশ এবার পাকিস্তানকে পাকিস্তানের মাটিতে শুধু টেষ্টই নয় দুই ম্যাচের টেষ্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করেছে ২-০ তে জিতে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য এ এক অনন্য কৃতি।
প্রথম টেষ্টম্যাচটা জয়ের পর দ্বিতীয় টেষ্টম্যাচের প্রথম দিন বৃষ্টি ভেসে যাবার পর এ ম্যাচ নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। এরপর বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের করা ২৭৪ রানের জবাবে যখন ২৬ রানে ৬ উইকেটের পতনের পর এ ম্যাচের আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু ক্রিকেট যে চরম অনিশ্চয়তার খেলা সেটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। লিটন দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজের চমকপ্রদ পার্টনারশীপে লীড না নিলেও পাকিস্তানের ইনিংসের কাছে (২৬২) যেতে সক্ষম হয়। লিটন সেঞ্চুরী করেছিলেন।
এরপর বাংলাদেশের হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানার পেস অ্যাটাকে পাকিস্তানকে দুশ্চিন্তায় ফেলে আটকে ফেলে ১৭২ এ। এরপর বাংলাদেশ তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে কাল ম্যাচের পঞ্চম দিনে ১৮৫ রানের জয়ের টার্গেটে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে। মুশফিক ও সাকিব শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে ওই রান করে মাঠ ছাড়েন।
এ নিয়ে বিদেশের মাটিতে তৃতীয়বার টেস্ট সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। এটিই ছিল দেশের বাইরে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়। এরপর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট জিতে দ্বিতীয় সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
সদ্যসমাপ্ত সিরিজের আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে আরও ৬টি সিরিজ খেলেছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যে সিরিজ তো দূরের কথা, একটি ম্যাচও জেতেনি বাংলাদেশিরা। এসব সিরিজের আওতায় ১৩টি ম্যাচ খেলে কেবল একটিতে ড্র, বাকি ১২টিতেই হেরেছিল বাংলাদেশ।
আজ রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের মধ্যদিয়ে বিগত সব হিসেব নিকেষ উল্টে দিল শান্ত’র নেতৃত্বাধীন সাকিব মুশফিক মুমিনুল লিটন মিরাজের বাংলাদেশ। খেলায় ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরুস্কার লাভ করে লিটন দাস। আর ম্যান অব দ্যা সিরিজ মেহেদি হাসান মিরাজ।