নিউইয়র্ক সিটির অ্যাপসভিত্তিক গাড়িচালকরা (উবার, লিফটসহ অন্যান্য) চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছিলেন। কারণ নিউইয়র্ক সিটি ট্যাক্সি অ্যান্ড লিম্যুজিন কমিশনের (টিএলসি) চাপিয়ে দেওয়া একটি শর্ত উবার লিফট, তথা সব অ্যাপসভিত্তিক কোম্পানিগুলো এক প্রকার বাধ্য হয়ে ডিমান্ড বেইজড প্ল্যাটফর্ম এক্সেস রেস্ট্রিকশন চালু করে। শর্ত ছিল অ্যাপসভিত্তিক গাড়িচালকদের সব খরচ বাদ দিয়ে একজন চালকের ঘণ্টায় গড়ে ১৭.৫০ ডলার আয় হতে হবে। যদি এর কম হয় তবে তা কোম্পানিগুলোকে ভর্তুকি দিয়ে সমান করতে হবে। ফলে উবার লিফট ভর্তুকি বা লস এড়ানোর জন্য ডিমান্ড বেইজড রেস্ট্রিকশন চালু করে। প্রথমদিকে তা কিছুটা সহনীয় থাকলেও পাঁচ-ছয় মাস আগে টিএলসি লটারির মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার নতুন ইলেকট্রিক গাড়ি দেয় কিন্তু যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি না পাওয়ায় ব্যবসায় মন্দা ভাব দেখা দেয়। আগে থেকেই টিএলসি অপরিকল্পিতভাবে প্রচুর প্লেট দেয়, ফলে এক পর্যায়ে ২০১৯ সালে টিএলসি বাধ্য হয়ে নতুন প্লেট বরাদ্দ বন্ধ করে। গত দুই মাস থেকে উবার লিফটের অ্যাপস অধিকাংশ জায়গায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল, আবার ক্ষেত্রবিশেষ অনেকে অ্যাপস খুলতে পারছিলেন না কাজ তো দূরের কথা। চালকদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছিল। কারণ গাড়ির লিজ, বাসা ভাড়া এবং সংসার চালানোতে চরম বিপর্যয় দেখা দেয়। আগস্ট মাসে খোদ ম্যানহাটনে ২-৩ ঘণ্টা ঘুরে অ্যাপস অন করতে না পেরে ক্ষোভে-দুঃখে বাসায় চলে যেতে। ফলে চালকদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দেয়। ট্যাক্সি উবার, লিফটসহ এ ব্যবসা বছরের সবচেয়ে স্লো থাকে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে। সম্প্রতি টিএলসি এবং মেয়ার অ্যাডামস চাহিদাভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধতা কমানোর জন্য উবারের সঙ্গে একটি চুক্তি ঘোষণা করেছেন। ৩ সেপ্টেম্বর থেকে উবার ড্রাইভার অ্যাপসের চাহিদাভিত্তিক বিধিনিষেধ সরিয়ে দেবে মেয়র অ্যাডামসের সমঝোতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। অর্থাৎ ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে উবার অ্যাপস বন্ধ করা হবে না। তবে এ পরিবর্তনটি লিফটের কর্মক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এর মানে চাহিদাভিত্তিক বিধিনিষেধ প্রত্যাহার কার্যকর হবে না যতক্ষণ না লিফট তাদের বার্ষিক ব্যবহার উন্নত করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করে। গত ২৯ আগস্ট থেকে উবার কর্তৃপক্ষ ইমেইলের মাধ্যমে চালকদের চাহিদাভত্তিক রেস্ট্রিকশন ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার থেকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য টিএলসির অধিনে ১ লাখ ৩০ হাজার প্লেট আছে এবং প্রশিক্ষিত চালকের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার।