চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া সাত রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারকে দেশে ফেরার নির্দেশনা দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে রয়েছেন ওয়াশিংটন, রাশিয়া, সৌদি আরব, জাপান, জার্মান, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালে দূতাবাসে দায়িত্বরতরা। গত ১৪ আগস্ট বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ডি এম সালাহ উদ্দিন মাহমুদ স্বাক্ষরিত পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর পরেই সব কিছু যেন স্থবির হয়ে পড়েছে।
প্রজ্ঞাপনে ওয়াশিংটন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত কামরুল হাসান, সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী, জাপানের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ, জার্মানির রাষ্ট্রদূত মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর ও মালের হাইকমিশনার রিয়াল অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদকে সদর দফতর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত আসতে বলা হয়েছে। এদিকে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটে থেকে আসিফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এখানো বহাল তবিয়তে কনসাল জেনারেল হিসেবে রয়েছেন নাজমুল হুদা। তিনি সব সময়ই মজিব কোট ব্যবহার করতেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সব অনুষ্ঠানেই যেতেন। অন্যদিকে প্রধান অতিথি না করলে অন্য সামাজিক সংগঠনের অনুষ্ঠানে যেতেন না। নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেট থেকে অসিফ উদ্দিনের চাকরি গেলেও আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক এমপি সেলিনা জাহানের ভাই হিসেবে পরিচয় দানকারী তসলিমুল ইসলাম সহকারী ফটোকল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন। আরো রয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বরের বাড়িতে কাজ করা আকিব হাসান। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলেও এখনো ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগপ্রাপ্তরা কীভাবে এখনো কাজ করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পট পরিবর্তেনর পর কন্সাল জেনারেল নাজমুল হুদা আসিফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুত করলেও এদেরকে কেন চাকরিচ্যুত করেননি, তা নিয়ে নানা প্রশ্ন। কন্সাল জেনারেল কী এখনো সাপোটাইজ করছেন? তা নাহলেতো এদের চকরি থাকার কথা নয়। তারা বহাল তবিয়তে এখনো রয়েছে। তা ছাড়া আরো অভিযোগ রয়েছে নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটে এখনো নো ভিসার ক্ষেত্রে সিল ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ ওয়াশিংটনসহ সব অফিসে ডিজিটাল স্টিকার ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু কেন? সিল দেয়ার কারণে এয়ারপোর্টে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশী হয়রানির শিকার হচ্ছে। ডিজিটাল স্টিকারের পরিবর্তে সিল দেয়ার পেছনে কী অর্থিক কোন বিষয় লুকিয়ে আছে? তা তদন্ত করা প্রয়োজন।
অন্যদিকে ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানকে প্রত্যাহার করা হলেও এখানেও রয়েছে দলীয় পরিচয়ে কাজ নেওয়া অনেক কর্মকর্তা। অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করে বলেছেন, এসব দলীয় লোকদের দ্রুত না সরালে এরা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রাখবে। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব এদের প্রত্যাহার করা উচিত।