গত ২২ নভেম্বর ভাষা আন্দোলনের অগ্রদূত এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে নিরলস ভূমিকা পালনকারী এম আজিজুল জলিল (৯১) আর নেই। তিনি ২০ নভেম্বর ওয়াশিংটন ডিসির একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
১৯৩৩ সালে অবিভক্ত ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্মগ্রহণ করা এম আজিজুল জলিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অক্সফোর্ড এবং উইলিয়ামস কলেজে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। তদানীন্তন সিভিল সার্ভিস কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৭০ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত তিনি বিশ্বব্যাংকে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী জয়নব জলিল, তিন পুত্র (জাবেদ, আসিফ ও আফতাব), তিন পুত্রবধূ এবং সাত নাতি-নাতনিসহ বহু আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন। পরিবারের সবাই বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।
২১ নভেম্বর মেরিল্যান্ডের পটোম্যাক ইসলামিক কমিউনিটি সেন্টারে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক প্রবাসী এতে অংশ নেন। পরে তাকে মেরিল্যান্ডের আডেলফিতে জর্জ ওয়াশিংটন কবরস্থানে দাফন করা হয়। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে তিনি ছিলেন অনন্য। তার লেখা বইতে উল্লেখ আছে, ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে আহত বরকতকে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার করুণ স্মৃতি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানের বর্বরতার বিরুদ্ধে তিনি বিশ্বব্যাপী সোচ্চার ছিলেন এবং এই বিষয়ে বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেও সাহসী ভূমিকা পালন করেন। পেন্টাগনের সাবেক বিজ্ঞানী ড. আশরাফ আহমেদ বলেন, ‘আজিজুল জলিল ছিলেন ওয়াশিংটনের প্রবাসীদের মধ্যে ‘শনিবারের কফি ক্লাব’-এর অন্যতম প্রাণ। তার প্রজ্ঞা, রসবোধ এবং স্মৃতিচারণ সবার হৃদয় জয় করত। তিনি ছিলেন সত্যিকারের মার্জিত রুচির ভদ্রলোক।’ এম আজিজুল জলিলের মৃত্যুতে তার পরিবার ও প্রবাসী কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার অবদান প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম স্মরণ করবে।