৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:৩৪:২৮ পূর্বাহ্ন


ওদের মনে কট্টর হিন্দুবাদী হিংসা ছাড়া ওদের মধ্যে কিছু নেই- রিজভি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৮-১২-২০২৪
ওদের মনে কট্টর হিন্দুবাদী হিংসা ছাড়া ওদের মধ্যে কিছু নেই- রিজভি


ভারতের শাসকগোষ্ঠি ‘বিদ্বেষ পরায়ন, বাংলাদেশ বিরোধী’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী

রোববার সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দল- ছা্ত্র দলের যৌথ প্রতিবাদী পদযাত্রা কর্মসূচির উদ্বোধনকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ ওরা বিদ্বেষ পরায়ন, বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না, ওরা বাংলাদেশ বিরোধী। ভুটান তাদের(ভারত) সাথে নেই, নেপাল নেই, পাকিস্তান তাদের সাথে নেই, শ্রীলংকা নেই, ছোট্ট একটি দ্বীপ রাষ্ট্র মালদ্বীপ তাদের সাথে নেই। ওদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারে না।”

‘‘ কারণ ওরা মুখে যাই বলুক… ধর্ম নিরপেক্ষ বলুক আর সেকুল্যার বলুক… ওদের মনের ভেতরে হচ্ছে কট্টর হিন্দুবাদী হিংসা ছাড়া ওদের মধ্যে কিছু নেই।”

রিজভী বলেন, ‘‘ আমি ভারতের শাসকগোষ্ঠীকে বলি, আপনারা বাংলাদেশে বলছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন… তো সংখ্যালঘু নির্যাতনের ফলাফল কি? আমি তো দেখলাম এখানে ইসকন দ্বারা একজন আইনজীবী মারা গেলেন… তাকে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মারা হলো। কৈ আপনাদের ওখানে যে সুবেন্দু.. তারপরে কিছু বিন্দু-টিন্দু যারা রয়েছেন তারা তো এই ব্যাপারে একটা কথাও বললেন না, একটা আওয়াজ পর্যন্ত তুললেন না।”

‘‘ মানুষ মারা গেলো তো বাংলাদেশের মানুষ… সে মুসলিম.. একজন আইনজীবী… তাকে মেরে ফেলা হলো কোনো কথা নেই। তাহলে প্রতিদিন ভারতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন… সংখ্যালঘু নির্যাতন, নির্যাতন… দিল্লী থেকে কলকাতা পর্যন্ত এই যে এক ভয়ংকর মিথ্যা কথার বেষ্টনী তৈরি করে গোটা বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন তাতে কোনো লাভ হবে না।”

তিনি বলেন, ‘‘ আপনারা মনে করেছেন, ভিসা বন্ধ করে বাংলাদেশের মানুষকে আসতে না দিয়ে… আপনারা তো বাংলাদেশের মানুষের উপকার করেছেন… বাংলাদেশের মানুষ সেখানে গেলে ডলার খরচ হতো, বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচারও হতো … আর আমাদের ডলারগুলো এখন সেখানে(ভারতে) যাবে না।”

‘‘ যেসমস্ত খাদ্যপণ্য আমদানি করতাল.. চাল,পেঁয়াজ,আদা… এখন আমাদের মানুষ আরো শ্রম দিয়ে এসব পন্য আরো বেশি করে উৎপাদন করবে।”

বাংলাদেশ বিরোধী হয়ে কেনো ‘বাংলাদেশের ইলিশের নিতে কাতর হয়ে থাকে’ তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন রিজভী।

‘এই পদযাত্রা দ্রোহের, ক্ষোভের’

রিজভী বলেন, ‘‘ এই পদযাত্রা একটি অন্যায়, বিচারমূলক প্রোভাকান্ডার বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী শক্তির এই তিনটি বাহিনী… এরা রাজনৈতিক সংগঠন আমি বাহিনী বললাম এই কারণে যে, তাদের বুকের মধ্যে যে আগুন জ্বলছে এই আগুন দ্রোহের, এই আগুন আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে।

‘‘ এই আগুন শুধু দুই হাতের বরাভাই নয়, এই আগুন এই দুই হাতে হয়ত একদিন অস্ত্র নিয়ে আমার স্বাধীনতা, আমার পতাকা, আমার ভুখন্ডকে রক্ষা করতে হবে।”

তিনি বনেন, ‘‘তিন সংগঠনের এই প্রতিবাদ হবে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল প্রতিবাদ। কারণ পার্শ্ববর্তী দেশ প্রতি মুহুর্তে তারা নাশকতার বিভিন্ন প্রচেষ্টা চালাবে। তাদের উদ্যোত্য এমন পর্যায় গেছে তারা চট্টগ্রামকে ভারতের অংশ বলে দাবি করবে বলেছে।”

‘‘ আমরা আমাদের মিলিত শক্তি, তারুণ্যের শক্তি নিয়ে আমরা এটাই বলব, তোমরা চট্টগ্রাম দাবি করবে কি কারণে? এই সমস্ত ফাপা, ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে কিছু হবে না। তোমরা যদি এটা দাবি করতে পারো তাহলে আমরাও দাবি করব সিরাজ উদ্দৌলার বাংলা-বিহার-উড়িষ্যা ফেরত দাও আমাদেরকে।”

‘অপপ্রচারে লাভ কি হচ্ছে’

রিজভী বলেন, ‘‘ নানা অপ্রচার অপতথ্য দিয়ে ভাসিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু লাভ কি তাতে? কলকাতার নিউ মার্কেট বন্ধ, কলকাতার ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বন্ধ, কলকাতার হাসপাতালে রোগী নাই, ক্লিনিকগুলো বন্ধ… এতে আপনারাদের আনন্দ হতে পারে। আমাদের এখানে কোনো ধরনের ভ্রুক্ষেপ নেই।”

‘‘ ভারতে যায় মানুষ চিকিতসা করার জন্য, টুকটাক কেনাকাটার জন্য… এটা এই কারণে যে, একটি বড় দেশ… এটা টুরিজম হয়, একটা বেড়ানোর সুযোগ থাকে।”

‘আমরা একেবারে অবলম্বনহীন নই’

রিজভী বলেন, ‘‘ আমরা একেবারে অবলম্বনহীন নই। আমরা বাংলাদেশের মানুষ আমরা সর্বোচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করতে জানি। আমরা আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য আকাশ, পাতাল, ভূমি, পানি প্রত্যেকটি জায়গায় আমাদের যে শক্তি, আমাদের যে আইনসম্মত সশ্বস্ত্র বাহিনীর যে শক্তিও কম নয়… ১৮ কোটি মানুষের শক্তি।”

‘‘ আমরা প্রত্যেকটি দিক থেকে দিল্লীর আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে প্রস্তুত রয়েছি।”

যুব দলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও ছাত্র দলের সাধারণ নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানি, সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্র দলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য রাখেন।

পরে তিন সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীরা বারিধারা অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে।

শেয়ার করুন