০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৩৬:৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


গণতন্ত্র ফেরাতে ‘বিভেদ নয়, ঐক্যে’র আহ্বান মির্জা ফখরুলের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০১-২০২৫
গণতন্ত্র ফেরাতে ‘বিভেদ নয়, ঐক্যে’র আহ্বান মির্জা ফখরুলের


গণতন্ত্র ফেরাতে ‘বিভেদ নয়, ঐক্যে’র আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচিত সংসদ ও নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সংস্কারের বৈধ্যতা আমরা দিতে পারব না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ আমরা যেন বিভক্তির রাজনীতি না করি।এখন যেটা প্রয়োজন দেশকে বাঁচানোর জন্য, গণতন্ত্রকে ফিরে পাবার জন্য আমাদের প্রয়োজন ঐক্য….স্টাকচার তৈরি করেন…সংস্কার অবশ্যই লাগবে।”

‘‘ কিন্তু সেই সংস্কারটারটা হচ্ছে যে, এর পেছনে যে শক্তিটা লাগবে সেটা হচ্ছে যে, নির্বাচিত পার্লামেন্ট, নির্বাচিত সরকার... এটা ছাড়া সংস্কারকে কখনো লেজিটেমেসি দিতে পাবর না আমরা। এটা ফ্যাসিস্টরা পারবে।”

‘বিভাজন নয়, ঐক্য চাই’


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা আহ্বান জানাব, দেশের সমস্ত গণতন্ত্র প্রেমী মানুষদেরকে, স্বাধীনতাকামী মানুষদেরকে যে, আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন… বিভাজিত হবেন না। আমি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের যারা যে যেখানে কাজ করছেন সবাইকে অনুরোধ করব বিভাজন সৃষ্টি করবেন না।”

‘‘ আমি জানি না, কিছু মানুষ একেবারে যেন ডেসপারেট হয়ে গেছে যে, তারা দেশকে ভাগ করে ফেলবে, জনগনকে বিভক্ত করবে এবং বিভিন্ন রকম কথা বলছে, বিভিন্ন রকম উস্কানিমূলক কথা বলছে…আপনারা দয়া করে ওগুলোর মধ্যে যাবেন না।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মিথ্যা মামলার শুনানীকালে আদালতে দেয়া তার জবানবন্দির ওপর রচিত ‘রাজবন্দির জবানবন্দি’ শীর্ষক এই গ্রন্থের প্রকাশনা উপলক্ষ্যে এই আলোচনা সভা হয়। ‘দ্যা প্যাট্রিয়ট’ প্রকাশনা সংস্থার ৩‘শ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের মূল্য রাখা হয়েছে ২শ টাকা।

আদালতে খালেদা জিয়া যেসব জবানবন্দি দিয়েছেন তাকে গ্রন্থে রুপ দিতে নেপথ্যে বিএনপির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রেজ্জাক খান এবং সাংবাদিক শফিক রেহমান ও খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব সাংবাদিক মারুফ কামাল খানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথাও স্মরণ করেন বিএনপি মহাসচিব।  

‘তারেকের দেশে ফেরা প্রসঙ্গে’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব মুক্ত হবে  কিছুদিনের মধ্যে পুরোপুরি সব মামলা থেকে… তিনিও আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন ইনশাল্লাহ।’’

‘‘ আমাদের যে ত্যাগ, আমাদের জনগনের, আমাদের ‍যুবকদের, আমাদের স্বেচ্ছাসেবকদের, আমাদের ছাত্রদের, আমাদের মহিলাদের, … এটা কোনো মতেই বৃথা যাবে না. বৃথা যায়নি। আমরা অন্ততঃ ফ্যাসিবাদকে সরাতে পেরেছি ওদেরকে তাড়াতে পেরেছি…।

তিনি বলেন, ‘‘হাসিনা পালানোর পর থেকে আমরা কেনো জানি নিজেদর মধ্যে পুরো বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে পারছি না, ঐক্যের জায়গাটাতে থাকতে পারছি না। দেখুন না কি, একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য। আরে ক্ষমতায় তো টিকে থাকবে তখনই যখন তুমি এটাকে তুমি স্যাটেল করতে পারবে…. তার জন্য আমরা বার বার বলছি সংস্কার… এই সংস্কার তো আমরাই শুরু করেছি, প্রথম সংস্কারের কথা বলেছি। জিয়া্উর রহমান সাহেব প্রথম সংস্কর করেছে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিয়ে এসেছিলেন।”

‘‘ এই যে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা… মাত্র চারটা ছাড়া সব সংবাদ পত্র বন্ধ করে দিয়েছিলো… জিয়া্‌উর রহমান সাহেব এসে সব সংবাদপত্র খুলে দিয়েছিলেন, একটা বদ্ধ অর্থনীতি ছিলো সেখানে তথাকথিত ভ্রান্ত সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিকে বাদ দিয়ে সেখানে তিনি একটা মিশ্র বা মুক্ত অর্থনীতির মতবাদ নিয়ে এসেছিলেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের যে দর্শন সেই দর্শন ইটসেলফ সংস্কারের মূল মুলকথা এবং ১৯ দফা কর্মসূচি ছিলো সংস্কারের বড় কর্মসূচি। আমাদেরকে এগুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে।”

‘খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে’

উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার লন্ডনে যেতে রাজকীয় বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর জন্য কাতারের আমির প্রতি কর্তৃজ্ঞতা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্যে লন্ডনে গেলেন এবং গেলেন রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিয়ে…. তাকে সিঅফ করেছে… পথে পথে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদায় জানিয়েছে এবং তিনি আন্তর্জাতিকভাবে যে সন্মানটুকু পেয়েছেন… কোথাও বাধা পেতে হয়নি আমাদেরকে… আমরা সেখানেই বলেছি, আমাদের এই ভিস দরকার সাথে সাথে করে দিয়েছে।”

‘‘ ম্যাডামের প্রতি সন্মান স্বরুপ কাতারের আমির যে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছেন সেজন্য আমিরের প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি ধন্যবাদ জানাই বৃটিশ সরকারকে তারা সেখানে তার লন্ডনে যাওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত করেছেন এবং সেখানে আমাদের চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবসহ যারা আছেন তারা সেখানে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা শুরু করতে পেরেছেন।”  

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক সচিব ইসমাইল জবিহউল্লাহর সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় সাংবাদিক শফিক রেহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, মাহমুদা হাবিবা, বিগত সরকারেরে আমলে নানাভাবে নির্যাতিত অললাইট অ্যাক্টিভিস্ট হুমায়ুন কবীর, রেজাউর রহমান, ফসিউল আলম, কাজল রহমান, শিপন মোল্লা, ওয়াসিম ইফতেখারুল হক, আবদুর রহমান নূর রাজন, রেজওয়ানুল হক শোভন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন