অ্যারিজোনার অ্যাভনডেল সিটির ওয়েস্ট ভ্যালি ইসলামিক সেন্টারের মসজিদে নামাজিদের হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ইরাক যুদ্ধের প্রাক্তন সেনাসদস্য মাইকেল হ্যানসনকে ৩ এপ্রিল গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের বিবরণ অনুযায়ী, ২৪ মার্চ ওয়েস্ট ভ্যালি ইসলামিক সেন্টারে মাইকেল হ্যানসন মুসলমানদের ক্ষতি করার হুমকি দিচ্ছিলেন, এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। মাইকেল হ্যানসন ’আমেরিকান স্নাইপার’ নামক একটি যুদ্ধ চলচ্চিত্র দেখার পর ইসলামিক সেন্টারে যান। হ্যানসন বারবার সেখানে এসে উপস্থিত মুসল্লিদের হেনস্থা করেন এবং মসজিদে বোমা হামলা করার হুমকি দেন।
পুলিশ হ্যানসনের ফোনে মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা এবং অন্যদের ক্ষতি করার উদ্দেশ্য সম্পর্কিত বেশ কয়েকটি প্রমাণ পেয়েছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হুমকি দেওয়ার এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মতো একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে হ্যানসন নিজে দাবি করেছেন, ‘আমেরিকান স্নাইপার’ চলচ্চিত্রটি দেখার পর তার মনের মধ্যে নেতিবাচক অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছিল এবং তিনি একটি ‘শক্তির প্রদর্শন’ হিসেবে সবচেয়ে কাছের মুসলিম সেন্টারে গিয়েছিলেন। হ্যানসন, যিনি মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন, উপাসকদের দিকে নানা ধরনের অপমানজনক মন্তব্য করেন এবং একটি লিফট দ্বারা চলে যান। পরে পুলিশ জানতে পারে যে তিনি আবার সেন্টারে ফিরে আসেন এবং ডাম্পস্টারের কাছে লুকানোর চেষ্টা করেন। তিনি ইসলামিক সেন্টারে বোমা হামলার হুমকি দেন, তবে পরে পুলিশের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের সময় তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করেন। তদন্তকারীদের সঙ্গে আলাপ করার সময় তিনি তাদেরকেও হুমকি দিয়েছিলেন। হ্যানসন পুলিশকে বলেন, ‘আমেরিকান স্নাইপার’ চলচ্চিত্রটি তার অতীতের সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত ঘটনার স্মৃতি, দুঃস্বপ্ন এবং উদ্বেগের ট্রিগার হিসেবে কাজ করেছে এবং তার অনুভূতিগুলো আবার উজ্জীবিত হয়েছিল।
মাইকেল হ্যানসনের মতো ঘটনার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, ইসলামোফোবিয়া বা মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা, সমাজের শান্তি এবং স্থিতিশীলতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মুসলমানদের প্রতি ঘৃণা ও বৈষম্য নির্মূল করা এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহিষ্ণুতা প্রদর্শন করা, আমাদের সমাজকে আরও শান্তিপূর্ণ এবং সাম্যপূর্ণ করতে সাহায্য করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, ঘৃণা শুধু একটি ধর্ম বা জাতির বিরুদ্ধে নয়, এটি মানবতার বিরুদ্ধে। তাই আমরা যেন সব ধর্ম, জাতি ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করি এবং সবার মধ্যে সহানুভূতি ও সমতা প্রতিষ্ঠা করি।