গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (৪ মে) সন্ধ্যায় এ হামলার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান এনসিপির নেতারা।
ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে এনসিপির আরেক নেতা আব্দুল হান্নান মাসউদ নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘গাজীপুরের চান্দনায় হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলা হয়েছে। আশপাশে যারা আছেন দ্রুত এগিয়ে আসেন, প্লিজ।’
এছাড়া, এনসিপির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘হাসনাতের গাড়িতে ১০-১২ জন সন্ত্রাসী গাজীপুর এলাকায় হামলা চালিয়েছে। গাড়ির গ্লাস ভেঙে গেছে, হাত রক্তাক্ত হয়েছে। আশেপাশে যারা আছেন হাসনাতকে প্রটেক্ট করুন।"
ঘটনার সময় বা হামলাকারীদের পরিচয় সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। এ বিষয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এনসিপির নেতাদের দাবি, এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হামলা হতে পারে। তবে এর পেছনে কারা জড়িত তা তদন্ত সাপেক্ষেই জানা যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর গাজীপুরে হামলার ঘটনায় অন্তত ৭০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার (৪ মে) দিবাগত রাতভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় এখনও অভিযান চলছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার রবিউল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হাসনাতের উপর হামলা অভিযোগ ছাত্রলীগের দিকে
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার পূর্বে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষিত ফ্যাসিবাদী ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে ‘দেখে নেওয়ার এবং হামলার হুমকি দিয়েছিল বলে জানিয়েছে দলটি।
মধ্যরাতে দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত স্বাক্ষরিত এক প্রস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপি জানায়, আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে ঙ্গ্যে করেছি, প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাফ্যাক্ট’ এর জরিপে উঠে এসেছে যে, গত ৯ মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে জড়িত ব্যক্তি ও পরিবারের ওপর ৩৬টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। যাতে ৮৯ জন আহত এবং ১ জন শহীদ হয়েছেন।
দলটি জানায়, এসব হামলাকারীদের এবং জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্র-জনতার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে তড়িৎ ও কার্যকর উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এই ঘটনাসমূহে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অপেশাদারত্ব এবং অবহেলার চিত্র ফুটে উঠেছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি মনে করে জুলাই গণহত্যার দায়ে একটি ফ্যাসিবাদী দল হিসাবে আওয়ামী লীগের দলগত বিচার নিশ্চিতে গড়িমসি এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতাই আজকের হামলার অন্যতম মূল কারণ।
এদিকে, এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে ঢাকা মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী, সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ, ফরিদপুর, বগুড়া, রংপুর মহানগর, কেরাণীগঞ্জ উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাৎক্ষণিক মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে এনসিপি।
দলটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই হামলার সুস্পষ্ট তদন্তপূর্বক জড়িত ব্যক্তিদের এবং জুলাই গণহত্যাকারীদের অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে।