১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৫:৩৪:৪২ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গোপালগঞ্জ এখন মুজিববাদী সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে- নাহিদ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ চারজন নিহত নিউইয়র্কে ২০ লাখ মানুষ মেডিকেইড ও ৩ লাখ পরিবার স্ন্যাপ সুবিধা হারাবে নতুন ভিসা ফিতে বাংলাদেশিদের খরচ বাড়বে আড়াই গুণ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি মাহমুদ খলিলের টেক্সাসের অভিবাসন আইন এসবি ৪ অসাংবিধানিক ঘোষণা ফ্লোরিডার ‘সিনেট বিল ৪-সির কার্যকারিতা বন্ধ করলো যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট নতুন নীতি ঘোষণা : ৯ কারণে নাগরিকত্ব হারাতে পারেন জঙ্গিবাদে সতর্ক থাকার মার্কিনী পরামর্শে নানা প্রশ্ন এনসিপিসহ ১৪৪ নিবন্ধন প্রত্যাশী দলের তথ্যে ঘাটতি


৩৪তম আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা শুরু ২৩ মে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৫-২০২৫
৩৪তম আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা শুরু ২৩ মে বক্তব্য রাখছেন রোকেয়া হায়দার


নিউইয়র্ক শহরে আগামী ২৩ থেকে ২৬ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ৩৪তম নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই বইমেলায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশক, লেখক, কবি-সাহিত্যিকদের আগমন ঘটবে, যা নিউইয়র্ক শহরকে এক আনন্দমুখর পরিবেশে মুখরিত করে তুলবে।

বইমেলার প্রস্তুতি, কর্মসূচি, মুক্তধারা ফাউন্ডেশন থেকে এক কর্মকর্তার পদত্যাগ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য গত ১৬ মে সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বইমেলার আহ্বায়ক এবং ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগের প্রাক্তন প্রধান, বিশিষ্ট সাংবাদিক রোকেয়া হায়দার। বর্তমানে তিনি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে মেলার সার্বিক দায়িত্ব পালন করছেন। সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সিইও বিশ্বজিত সাহা।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ডা. জিয়াউদ্দীন আহমেদ, কো-চেয়ারপারসন ড. নজরুল ইসলাম ও সউদ চৌধুরী, উপদেষ্টা গোলাম ফারুক ভূঁইয়া এবং সিনিয়র সদস্য ওবায়েদুল্লাহ মানুম বক্তব্য রাখেন। এবারের বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে জামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে (১৫৩-১০ জ্যামাইকা অ্যাভিনিউ, জ্যামাইকা, নিউইয়র্ক ১১৪৩২)। আগামী ২৩ মে সন্ধ্যা ৬টায় বইমেলার বর্ণাঢ্য উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হবে। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম নন্দিত ও জনপ্রিয় লেখক সাদাত হোসাইন এবারের বইমেলার উদ্বোধন করবেন।

বইমেলার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন মার্কিন বন্ধু ফিলিস টেইলর। ১৯৭১ সালে, যখন যুক্তরাষ্ট্র গোপনে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহের পরিকল্পনা করে, তখন ফিলিস টেইলরের প্রয়াত স্বামী রিচার্ড টেইলর এবং তার সহযোগীরা ফিলাডেলফিয়া ও বাল্টিমোর বন্দরে অস্ত্রবাহী জাহাজ অবরোধ করেছিলেন। বইমেলায় এই ঐতিহাসিক ঘটনাটিকে বিশেষভাবে উপস্থাপন করা হবে।

এছাড়াও মেলায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি নতুন গ্রন্থের আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে মুক্তিযুদ্ধকালীন ফিল্ড হাসপাতালের নেতৃত্বদানকারী বীর প্রতীক ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. সিতারা বেগম অংশগ্রহণ করবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত থাকবেন বরেণ্য অধ্যাপক ড. রেহমান সোবহান, অধ্যাপক গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক এবং অধ্যাপক রওনক জাহান।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা জানান, এ বছর বইমেলায় ২৫টিরও বেশি স্বনামধন্য প্রকাশনা সংস্থা অংশগ্রহণ করবে এবং ইতিমধ্যেই লেখক ও প্রকাশকরা নিউইয়র্কে এসে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বইমেলাকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য লেখক-পাঠক-মুখোমুখি আলোচনা, নতুন বই নিয়ে আলোচনা, স্বরচিত কবিতা পাঠ, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক, সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং বিভিন্ন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, একুশে চেতনা পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্রের সৌজন্যে ‘অমর একুশ। ভাষা-আন্দোলনের সচিত্র ইতিহাস (১৯৪৭-১৯৫৬)’ শীর্ষক একটি বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আয়োজকরা আরো বলেন, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে এই বইমেলা শুধু বইয়ের প্রদর্শনী নয়, এটি বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার এক শক্তিশালী ধারক ও বাহক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, একটি মহল শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই বইমেলাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা করছে। বক্তারা দৃঢ়ভাবে বলেন যে, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা এবং বঙ্গবন্ধু- এই শব্দগুলো কোনো বিতর্কের বিষয় নয়, বরং এগুলো আমাদের জাতীয় অহংকার।

বক্তারা উল্লেখ করেন, ১৯৯২ সালে ‘বাঙালির চেতনা মঞ্চ’ ও ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’-এর যৌথ উদ্যোগে এই বইমেলার সূচনা হয়েছিল। পরবর্তী মুক্তধারা নিউইয়র্ক এবং তারপর থেকে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এককভাবে এই বইমেলার দায়িত্ব সাফল্যের সঙ্গে পালন করে আসছে। এই সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শহীদ পরিবারের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, লেখক এবং তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা।

সংবাদ সম্মেলনে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন থেকে ড. নূরুন নবীর পদত্যাগসহ বইমেলা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন কর্মকর্তারা।

শেয়ার করুন